এ ভাবেই ব্যাট করেন আমির হুসেন লোন। —ফাইল চিত্র
বাবার কারখানায় কাজ করার সময় মাত্র আট বছর বয়সে দু’হাত বাদ পড়েছিল আমির হুসেন লোনের। তার পরেও লড়াই থামাননি তিনি। স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য প্যারা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তিনি। ওয়াঘানা গ্রামের বাসিন্দা আমির বল করেন পা দিয়ে। ব্যাট করার সময় ব্যাট ধরেন গলা ও ঘাড়ের মাঝে।
অত বড় দুর্ঘটনার পরেও আশা হারাননি আমির। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরেও আমি আশা ছাড়িনি। কঠিন পরিশ্রম করেছি। কারও উপর নির্ভর করিনি। সব নিজের যোগ্যতায় অর্জন করেছি। দুর্ঘটনার পরে পরিবার ছাড়া কেউ আমার পাশে ছিল না। এমনকি, সরকারও না। যা করেছি নিজের ক্ষমতায়।’’
ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন কোনও দিন নষ্ট হতে দেননি আমির। দু’হাত না থাকায় বিকল্প পথ খুঁজেছেন। অবশেষে তা পেয়েছেনও। আমির বলেন, ‘‘সব জায়গা থেকে প্রশংসা পাই। কঠিন পরিশ্রমের ফলেই এই জায়গা তৈরি করতে পেরেছি। পা দিয়ে বল করা খুব কঠিন। কিন্তু দীর্ঘ দিনের পরিশ্রমে তা শিখেছি। ঈশ্বর ছাড়া কারও উপর ভরসা রাখিনি।’’
২০১৩ সাল থেকে প্যারা ক্রিকেট খেলছেন আমির। এখন জম্মু-কাশ্মীরের অধিনায়ক তিনি। নিজের কেরিয়ার নিয়ে আমির বলেন, ‘‘২০১৩ সালে দিল্লিতে জাতীয় প্রতিযোগিতায় খেলেছি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলেছি। তার পরে নেপাল, শারজা, দুবাইয়ে খেলেছি। সব জায়গায় আমার পা দিয়ে বল করা দেখে সবাই অবাক হয়ে গিয়েছে। গলা ও ঘাড়ের মাঝে ব্যাট রেখেও যে ব্যাট করা যায় তা কেউ ভাবেনি। কিন্তু আমি করে দেখিয়েছি।’’
নিজের প্রতিভার জোরে সচিন তেন্ডুলকর থেকে শুরু করে আশিস নেহরার প্রশংসা কুড়িয়েছেন আমির। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ম্যাচে আমিরকে খেলা দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নেহরা। একটি অনুষ্ঠানে বলিউড তারকা ভিকি কৌশলের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল আমিরের। ক্রিকেটারের প্রতিভা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।