(বাঁদিকে) রিঙ্কু সিংহ এবং যশ দয়াল। —ফাইল চিত্র।
আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের সেই রাত ভোলেননি অনেক ক্রিকেটপ্রেমী। কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিঙ্কু সিংহের হাতে পাঁচ ছক্কা খাওয়ার সেই রাত এখনও ভোলেননি গুজরাত টাইটান্সের যশ দয়ালও। সেই ঘটনা দয়ালের ক্রিকেটজীবনে অন্ধকার নামিয়ে এনেছিল। তা থেকেই দিনের আলো খুঁজেছিলেন উত্তরপ্রদেশের জোরে বোলার। আলোর সন্ধান করতে করতে পৌঁছে গিয়েছেন ভারতীয় টেস্ট দলে। রঞ্জি ট্রফির সতীর্থ রিঙ্কুর আগে!
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের দলে জায়গা পেয়েছেন দয়াল। ক্রিকেটজীবনের এই উত্থানের ‘কৃতিত্ব’ তিনি নির্দ্বিধায় দিচ্ছেন বন্ধু রিঙ্কুকে। এক সাক্ষাৎকারে বাঁহাতি বোলার বলেছেন, ‘‘রিঙ্কুর ওই ওভারটা আমার জীবনে না এলে হয়তো আজ এই পর্যন্ত পৌঁছতে পারতাম না।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল সে সময়। সমাজমাধ্যম দেখা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরিবারের সকলকে পাশে পেয়েছিলাম। উত্তরপ্রদেশের সতীর্থেরাও পাশে ছিল। আরসিবি কর্তৃপক্ষও আমাকে সাহায্য করেছেন। সকলের সাহায্যে নিজেকে আবার ফিরে পেয়েছি।’’ সেই ম্যাচের পর কি খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন? দয়াল বলেছেন, ‘‘সত্যি বলতে এখনও আমার মাঝে মাঝেই সেই রতের কথা মনে পড়ে। একটা সময় পর্যন্ত মনে পড়লে ঘাবড়ে যেতাম। এখন বেশ উপভোগ করি। বিষয়টার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছি।’’
রিঙ্কুর হাতে মার খাওয়া দয়ালের উপর ভরসা রাখতে পারেননি গুজরাত কর্তৃপক্ষ। গত মরসুমে তাঁকে দলে নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আমদাবাদের সেই ম্যাচের পর বেশ কিছু দিন কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল তাঁকে। তবে হাল ছাড়েননি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক সাফল্যের পর সুযোগ পেয়েছেন ভারতীয় দলে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক অবশ্য অনিশ্চিত। তৃতীয় জোরে বোলার হিসাবে প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়া অনিশ্চিত। গৌতম গম্ভীর, রোহিত শর্মারা চেন্নাইয়ের ২২ গজে তিন জন জোরে বোলার খেলাবেন এমন সম্ভাবনা কম। খেলালেও তাঁকে লড়াই করতে হবে মুকেশ কুমারের সঙ্গে। দয়াল বলেছেন, ‘‘২০২২ সালে প্রথম ভারতীয় দলে ডাক পেয়েছিলাম। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এক দিনের সিরিজ়ের দলে সুযোগ পেয়েছিলাম। চোট থাকায় সে বার খেলার সুযোগ পাইনি। এ বার দলীপ ট্রফির সময় মাথায়, টেস্ট দলে এক জন বাঁহাতি জোরে বোলারের জায়গা রয়েছে। প্রথম ইনিংসে তেমন কিছু করতে পারিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে ভাল বল করার পর মনে হয়েছিল সুযোগ আসতে পারে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার খবর পেয়ে খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। বাড়িতে মা, দিদি সকলেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল। বাবা ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। বাড়িতে উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল সে দিন।’’
২০২২ সালের আইপিএলের পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) তাঁকে সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার হিসাবে বেছে নেয়। সুযোগ পান বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে (এনসিএ) অনুশীলন করার। তা নিয়ে দয়াল বলেছেন, ‘‘এনসিএতে অনুশীলন করে অনেক উপকৃত হয়েছি। শুধু আমার বোলিং নয়, ফিটনেস, খেলার চাপ সব ব্যাপারে উপকৃত হয়েছি। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে এনসিএর যথেষ্ট অবদান রয়েছে।’’