ম্যাথুজ যদিও এই প্রথম নজর কাড়লেন, এমনটা নয়। ইডেনে ২০১৬ মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন এই ম্যাথুজ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই ফাইনালে ব্যাটে, বলে তিনিই ছিলেন রানি। অ্যালিসা হিলিকে আউট করেন ম্যাথুজ। ব্যাট হাতে করেন ৬৬ রান। ইডেনের মাঠে দেশের হাতে প্রথম টি২০ বিশ্বকাপ তুলে দিয়েছিলেন এই ম্যাথুজই।
শতরানের পর হ্যালে ম্যাথুজ। ছবি: এএফপি
আবার শিরোনামে হ্যালে ম্যাথুজ। এ বারের এক দিনের বিশ্বকাপ শুরুই করলেন শতরান দিয়ে। সেই ম্যাথুজ যিনি ইডেনের মাঠে দেশের হাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তুলে দিয়েছিলেন। গত আট বছর ধরে দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলা মেয়েটি নিউজিল্যান্ডের মাঠে বিশ্বকাপ শুরু করলেন দাপটের সঙ্গে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ৩ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতলেও এই জয় যেন ম্যাথুজেরই।
শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের মঞ্চে ১১৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস। পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চির হ্যালে ম্যাথুজ নজর কেড়ে নিলেন। এর পর বল হাতে নিলেন দুই উইকেট। কিন্তু মাত্র ১৬ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা ম্যাথুজকে শুধু ক্রিকেটার বললে ভুল হবে। তিনি অ্যাথলিটও।
মাত্র ১১ বছর বয়সে স্কুলের ছেলেদের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন ম্যাথুজ। বার্বাডোজের মেয়েটি ১২ বছর বয়সে সেখানকার ক্রিকেট দলে জায়গা পাকা করে ফেলেন। কিন্তু তিনি যে ক্রিকেটারই হবেন তা তখনও নিশ্চিত ছিল না। এমনকি ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেললেও ম্যাথুজ তখনও নিশ্চিত নন ক্রিকেটার হওয়া নিয়ে। জ্যাভলিন ছুড়ছেন তিনি। শুধু ছুড়ছেন না, সোনার পদকও জিতছেন। ২০১৫ সালে ক্যারিফটা গেমসে সোনা জেতেন ম্যাথুজ। এর আগে ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে জিতেছিলেন রুপো। এই সব পুরস্কার অনূর্ধ্ব ১৭ এবং ১৮ প্রতিযোগিতায়।
দেশের হয়ে সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপাবেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রথম ম্যাচেই। ছবি: এএফপি
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে কাঁধের জোর কাজে লাগিয়ে অনায়াসে যে বাউন্ডারিগুলি মারছিলেন, তা বোধ হয় ওই জ্যাভলিন ছোড়ারই ফল। ২০১৪ সালে তাঁর অভিষেক হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে ৫৫ রান করেন ম্যাথুজ। সিরিজে চার ম্যাচে করেন ২৪১ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে চার ম্যাচের সিরিজে সেটাই সব থেকে বেশি রান ছিল। শুধু ব্যাট নয়, বোলিংয়েও পারদর্শী তিনি। ব্যাট হতে যেমন ওপেন করেন, বল হাতেও তেমনই বহু ম্যাচে ওপেন করেছেন ম্যাথুজ। ফিল্ডার হিসাবেও দলের বড় সম্পদ তিনি।
এখনও পর্যন্ত ৬১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন দেশের হয়ে। একটি শতরান-সহ ১০৫৫ রান রয়েছে তাঁর দখলে। উইকেট নিয়েছেন ৫৮টি। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০৭ রান এসেছিল আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
এক দিনের ক্রিকেটে ৬২টি ম্যাচে করেছেন ১৬২৩ রান। উইকেট নিয়েছেন ৭০টি। তিনটি শতরানের মালকিন ম্যাথুজ।
ম্যাথুজ যদিও এই প্রথম নজর কাড়লেন, এমনটা নয়। ইডেনে ২০১৬ মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন এই ম্যাথুজ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই ফাইনালে ব্যাটে, বলে তিনিই ছিলেন রানি। অ্যালিসা হিলিকে আউট করেন ম্যাথুজ। ব্যাট হাতে করেন ৬৬ রান। ইডেনের মাঠে দেশের হাতে প্রথম টি২০ বিশ্বকাপ তুলে দিয়েছিলেন এই ম্যাথুজই।
২০১৬ সালে সেই বিশ্বকাপের মাঝেই ছিল ম্যাথুজের ১৮ বছরের জন্মদিন। এ বারের এক দিনের বিশ্বকাপের মাঝেও জন্মদিন (১৯ মার্চ) আসবে ম্যাথুজের। ২৪ বছরে পা রাখবেন তিনি। আরও একটা বিশ্বকাপ তোলার জন্য দেশের হয়ে সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপাবেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রথম ম্যাচেই।