আশাবাদী: স্পিনার ও পেসারদের প্রশংসা হার্দিকের। —ফাইল চিত্র।
যে ম্যাচ হারলে টি-টোয়েন্টি সিরিজ় খোয়াতে হত, সেই ম্যাচেই প্রত্যাঘাত করল ভারত। মঙ্গলবার গায়ানায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে ৭ উইকেটে হারান হার্দিক পাণ্ড্যরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫ উইকেটে ১৫৯ রান ভারত তুলে ফেলে ১৭.৫ ওভারে, ৩ উইকেট হারিয়ে। জয়ের নেপথ্যে ব্যাট হাতে সূর্যকুমার যাদব, তিলক বর্মা। আর বল হাতে কুলদীপ যাদব।
ম্যাচের পরে হার্দিক বলেন, ‘‘আমরা জানতাম এই ম্যাচের গুরুত্ব। এমনিতে দু’টো ম্যাচ হারলে বা দু’টো ম্যাচ জিতলে কিছু বদলে যায় না। আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি। মাঠে নেমে ইতিবাচক থাকা এবং নিজেদের দক্ষতা তুলে ধরাই
আমাদের লক্ষ্য।’’
ভারত অধিনায়ক আরও বলে যান, ‘‘স্পিনারদের বেশি ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম আমরা। বিশেষ করে নিকোলাস পুরানকে আটকাতে। আগের ম্যাচে অক্ষর পটেল তেমন কিছু করতে করতে পারেনি। মঙ্গলবার ও দারুণ বল করল।’’ তাঁর নেতৃত্বে কুল-চা জুটি আবার ফিরে এসেছে সাদা বলের ক্রিকেটে। হার্দিক বলেছেন, ‘‘অক্ষর ভাল বল করায়, কুলদীপ যাদব আর যুজবেন্দ্র চহালকে পরে এনেছি। ওরাও দারুণ বল করেছে।’’ শুধু স্পিনারদের নয়, অধিনায়কের মুখে শোনা গিয়েছে পেসারদের প্রশংসাও। বলেছেন, ‘‘আরশদীপ সিংহ এবং মুকেশের কুমারের কথাও বলতে চাই। ওদেরও কৃতিত্ব রয়েছে এই জয়ের নেপথ্যে।’’
হার্দিকের আশা, সিরিজ়ের শেষটা উত্তেজক হবে, ‘‘চতুর্থ ম্যাচও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবাই সবার পাশে রয়েছি এবং থাকব। যেমন আমাদের আট নম্বরে কোনও ব্যাটসম্যান নেই। কারণ বোলাররাও ম্যাচ জেতাতে পারে। উপরের দিকে রান করতে পারলে আট নম্বরে ব্যাটসম্যান দরকার হয় না।’’ দলের দুই ব্যাটসম্যানকে নিয়ে হার্দিক বলেন, ‘‘সূর্যকুমার যাদব এবং তিলক বর্মা যেমন দারুণ একটা জুটি তৈরি করল। ওদের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। সূর্য দলে থাকা বাড়তি সুবিধার। ও এমন এক জন ক্রিকেটার যে চ্যালেঞ্জ নেয়। নেয় দায়িত্বও। দলের সবার মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছড়িয়ে দেয়।’’
গায়ানায় মঙ্গলবারের ম্যাচের একটি বল এক জন ক্রিকেটপ্রেমীকে উপহার দেন হার্দিক। ভারতীয় দলের অনুশীলনের সময় দুর্ঘটনাবশত একটা শট সেই ক্রিকেটপ্রেমীর মুখে গিয়ে লাগে। তা দেখে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান হার্দিক। শুধু তাই নয়, খেলা শেষ হতেই বিশেষ এক স্ট্যান্ডের দিকে চলে যান প্যাড পরা অবস্থাতে। সেখানে গ্যালারির এক তরুণী দর্শকের কাছেও পৌঁছে যান। এবং, ম্যাচের বলটি তাঁর হাতে উপহার দিয়ে আসেন।
ভারতীয় অলরাউন্ডারের এই রকমের আচরণে আপ্লুত হয়ে যান সেই মেয়েটি। ভারতের অনুশীলনের সময় তাঁরই থুতনিতে বল লেগেছিল। তিনি খেলা শুরু হওয়ার অনেক আগে মাঠে এসে গিয়েছিলেন ভারতীয়দের অনুশীলন দেখতে। আর নেটে হার্দিক ব্যাট করার সময় বল তাঁর মুখে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে অধিনায়ক বোর্ডের মেডিক্যাল দল পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন মেয়েটির। একই সঙ্গে হার্দিক তাঁকে কথা দিয়ে আসেন, ম্যাচ শেষ হলে তাঁকে একটা বিশেষ উপহার দেবেন। ম্যাচের বলই ছিল সেই উপহার!
গায়ানায় ম্যাচ শুরুর আগেই অবশ্য একটি নাটক হয়ে যায়।
ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ় তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে গায়ানার স্টেডিয়ামের মাঠকর্মীরা ৩০ গজের বৃত্ত আঁকতেই ভুলে গিয়েছিলেন। পাওয়ার-প্লে চলাকালীন এই বৃত্তের মধ্যে এবং বৃত্তের বাইরে বোলিং টিমকে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিল্ডার রাখতে হয়। গায়ানায় সেটা না থাকায় খেলাও শুরু হয় দেরিতে। যে ছবি ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। প্রসঙ্গত, একদিনের সিরিজ় শেষ হওয়ার পরে অধিনায়ক হার্দিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে ঠিকঠাক সুবিধে না পাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘আড়ম্বর চাই না, তবে নূন্যতম সুযোগ সুবিধার দিকটা ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের খেয়াল রাখা উচিত।’’ তার পরেও গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে এই কাণ্ডে হতবাক সবাই! খেলাও তাই শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট পরে!