ICC Champions Trophy 2025

রোহিত, আগরকরের সঙ্গে মতবিরোধ গম্ভীরের! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পছন্দের দল পেলেন না কোচ

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল নির্বাচনের সময় কোচ গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছে অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকরের। দুই ক্রিকেটার নির্বাচন ঘিরে হয়েছে সমস্যা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:১১
Share:

অধিনায়ক রোহিত শর্মা (বাঁ দিকে) ও নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকরের (ডান দিকে) সঙ্গে মতবিরোধ হচ্ছে কোচ গৌতম গম্ভীরের (মাঝে)। —ফাইল চিত্র।

প্রথমে জানা গিয়েছিল, শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় সাংবাদিক বৈঠক করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণা করবে ভারত। কিন্তু তা শুরু হয় আড়াইটের পর। কেন দেরি হল দল নির্বাচনে? একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল নির্বাচনের সময় কোচ গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছে অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকরের। দুই ক্রিকেটার নির্বাচন ঘিরে হয়েছে সমস্যা। সেই কারণে দু’ঘণ্টারও বেশি বিলম্ব হয়েছে।

Advertisement

সহ-অধিনায়ক নির্বাচনে সমস্যা

প্রথম মতবিরোধ হয় সহ-অধিনায়ক নির্বাচনে। গম্ভীর চেয়েছিলেন, হার্দিক পাণ্ড্যকে সহ-অধিনায়ক করা হোক। তাঁর যুক্তি ছিল, হার্দিক ২০২৩ সালের এক দিনের বিশ্বকাপ ও ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোহিতের ডেপুটি ছিলেন। সেই হিসাবে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। কিন্তু রোহিত, আগরকরের পছন্দ শুভমন গিল। তাঁদের যুক্তি, সূর্যকুমার যাদবকে পাকাপাকি ভাবে ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক করা হয়েছে। তা হলে কেন আবার পিছন দিকে তাকানো হবে। বদলে সামনের দিকে তাকানো উচিত। সেই যুক্তিতেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে অক্ষর পটেলকে সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত শুভমনই ভারতের সহ-অধিনায়ক।

Advertisement

সঞ্জু না পন্থ

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের প্রথম উইকেটরক্ষক হিসাবে রয়েছেন লোকেশ রাহুল। দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হিসাবে সঞ্জু স্যামসনকে চেয়েছিলেন গম্ভীর। সঞ্জু বরাবরই গম্ভীরের পছন্দের ক্রিকেটার। তিনি কোচ হওয়ার পর ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে ধারাবাহিক ভাবে সুযোগ পাচ্ছেন সঞ্জু। রানও করেছেন। কিন্তু রোহিত ও আগরকরের পছন্দ ঋষভ পন্থ। গম্ভীরের যুক্তি, গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পরে আবার ক্রিকেটে ফিরে মাত্র একটি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন পন্থ। পাল্টা রোহিতেরা যুক্তি দেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের পর থেকে সঞ্জুও এক দিনের ম্যাচ খেলেননি। পাশাপাশি বিজয় হজারে ট্রফিতে না খেলে বিতর্কে জড়িয়েছেন সঞ্জু। শেষ পর্যন্ত পন্থের নামেই সিলমোহর পড়েছে। অর্থাৎ, নিজের পছন্দের এক ক্রিকেটারকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে পাননি গম্ভীর।

ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা নিয়েও কোচের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচকের। ২০২৪ সালে গম্ভীর কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সব ক্রিকেটারকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে বলেছিলেন। তবে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেই সময় রেহাই দেওয়া হয়েছিল রোহিত, কোহলি এবং জসপ্রীত বুমরাহকে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ের পরে আবার সেই ঘরোয়া ক্রিকেটের কথাই বলেছেন কোচ। গম্ভীরের কথা মেনে শুভমন গিল, ঋষভ পন্থ, যশস্বী জয়সওয়ালের মতো ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে নামছেন। রোহিতও অনুশীলন করছেন। কিন্তু তিনি প্রশ্ন তুলেছেন সময় নিয়ে।

রোহিত জানিয়েছেন, সময় না পেলে কী ভাবে জাতীয় দলের ক্রিকেটারেরা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলবেন। ভারতীয় অধিনায়ক বলেছেন, “গত ছ’সাত বছরে যদি আমাদের ক্রিকেট ক্যালেন্ডার দেখেন, তা হলে দেখবেন, এমন কোনও সময় নেই যখন আমরা ৪৫ দিন ঘরে বসে আছি। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে শুরু হয়, মার্চে শেষ হয়। সেই সময় ভারতও অনেক ক্রিকেট খেলে। তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময় কোথায়?” নিজের উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন রোহিত। কেন তিনি দীর্ঘ দিন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেননি তা জানিয়েছেন। রোহিতের কথায়, “আমি নিজের কথা বলতে পারি। ২০১৯ থেকে আমি ধারাবাহিক ভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি। তার পরে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময়ই পাইনি। সারা বছর ধরে এত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয় যে ক্রিকেটারদের বিশ্রামও দরকার। পরের মরসুমের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে হয়। সেই সময়ও দরকার। তবে এখন নিয়ম হয়েছে, সময় থাকলে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতেই হবে। সকলেই সেই চেষ্টা করছে।”

একই কথা শোনা গিয়েছে আগরকরের মুখেও। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বোর্ড এই ধরনের কোনও বাঁধাধরা নিয়ম করেনি। আগরকর বলেছেন, “এ রকম কোনও বাঁধাধরা নিয়ম করা হয়নি। সময় পেলে ক্রিকেটারদের খেলা উচিত। অনেকের পক্ষেই একসঙ্গে তিনটে ফরম্যাট খেলা সম্ভব হয় না। পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায় না। এখন সময় আছে বলে অনেকে রঞ্জি খেলার কথা ভাবছে। দেখতে হবে সকলে ফিট রয়েছে কি না।” নিয়ম না করলেও নির্বাচক কমিটি চাইছে বিরাট, রোহিতের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলুন। তার একটি অন্য কারণও রয়েছে। আগরকর বলেন, “নির্বাচক হিসাবে আমরা চাই, সুযোগ পেলে জাতীয় দলের ক্রিকেটারেরা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলুক। কারণ, তাতে শুধু তাদের খেলা ভাল হবে না, আমাদের ঘরোয়া পরিকাঠামো আরও মজবুত হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটারেরা জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাবে। তবে এ রকম কোনও বাঁধাধরা নিয়ম করা হয়নি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement