ইডি-র কাছ থেকে সমন পেয়েছেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। —ফাইল চিত্র।
মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে সমন পাঠিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থায় একটি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই মামলাতেই ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ককে ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সমন পাওয়ার পরে আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের সঙ্গে।
আনন্দবাজার অনলাইনকে আজহার জানিয়েছেন, তিনি হাজিরা দেবেন। কিন্তু দুর্নীতির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই তাঁর। আজহার বললেন, “আমি ইডি দফতরে হাজিরা দেব। এই আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থায় একটি দুর্নীতি ধরা পড়েছে। আমি সেই সংস্থায় ছিলাম। তাই আমাকে ডেকেছে। আমি নিজে কোনও ভাবেই জড়িত নই। তদন্তে ইডি-কে সব রকম ভাবে সাহায্য করব।”
অতীতে হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি ছিলেন আজহার। সেই সময়ে তিনি সংস্থার তহবিলের টাকা নয়ছয় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রথম বার তাঁকে সমন পাঠাল ইডি। বৃহস্পতিবারই তাঁকে হাজির হতে বলা হয়েছে। প্রায় ২০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে আজহারের বিরুদ্ধে। ডিজ়েল জেনারেটর, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র কেনা এবং উপ্পলের রাজীব গান্ধী ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ক্যানোপি কেনার জন্য ওই টাকা বরাদ্দ ছিল। সেই টাকারই হদিস নেই।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার সভাপতির পদ থেকে আজহারউদ্দিনকে সরিয়ে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওকে সংস্থার কাজকর্ম দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ক্রিকেট সংস্থার মধ্যে যে দুর্নীতি এবং নির্বাচন নিয়ে সমস্যা চলছিল তা ঠিক করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রাওকে। সভাপতি হিসাবে আজহারের বিতর্কিত অধ্যায়ের শেষ হয়েছিল সেখানেই। হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থা বনাম চারমিনার ক্রিকেট ক্লাবের মামলা যে বেঞ্চ শুনছিল, সেই বেঞ্চের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল, বিচারপতি মনোজ মিশ্র এবং বিচারপতি অরবিন্দ কুমার জানিয়েছিলেন, নির্বাচন নিয়ে জটিলতা অবিলম্বে শেষ করতে হবে এবং সঠিক পদ্ধতিতে নির্বাচন সংগঠিত করতে হবে।
তার পর ক্রিকেট প্রশাসন থেকে সরে এসে আবার রাজনীতির ময়দানে নেমেছিলেন আজহার। তেলঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম বার লড়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্বাচনে কংগ্রেস জিতলেও তিনি বাজিমাত করতে পারেননি। তাঁর উপর অনেক আস্থা, আশা-ভরসা রেখেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু রাজনীতির উইকেটে ব্যর্থই হন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মগন্তি গোপীনাথের কাছে ৬৪২১২ ভোটে হারেন প্রাক্তন ক্রিকেটার।
পর পর দু’টি লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন আজহার। প্রথম বার ২০০৯ সালে উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ আসনে। দ্বিতীয় বার ২০১৪ সালে রাজস্থানের টঙ্ক-সওয়াই মাধোপুর আসনে। মোরাদাবাদে বাজিমাত করতে পারলেও টঙ্কে কিন্তু হারের মুখ দেখতে হয়েছিল আজহারকে। তার পরে ২০১৮ সালে তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় আজহারকে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে হায়দরাবাদ বা সেকেন্দ্রাবাদ আসনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে জোর জল্পনা চলে। কিন্তু শেষমেশ তিনি ভোটে লড়েননি।