হেডিংলেতে ইংল্যান্ডকে জেতানোর পথে হ্যারি ব্রুক। ছবি: রয়টার্স
অ্যাশেজ়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেডিংলেতে ইংল্যান্ডের হয়ে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছেন হ্যারি ব্রুক। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ৭৫ রানে ভর করে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ়ে ফিরেছেন বেন স্টোকসেরা। ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেও শান্ত থাকতে পারেননি ব্রুক। মেজাজ হারিয়েছেন। কেন এমনটা হয়েছে? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ব্রুক।
চতুর্থ দিনে ম্যাচ জিততে যখন ইংল্যান্ডের ২১ রান বাকি তখন বড় শট মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান ব্রুক। সাত উইকেট পড়ে যায় ইংল্যান্ডের। আউট হয়ে মেজাজ শান্ত রাখতে পারেননি তিনি। সাজঘরে গিয়ে মেজাজ হারান। ইংল্যান্ডের ব্যাটার ম্যাচ শেষে বলেন, ‘‘তখন হাড্ডাহাড্ডি খেলা চলছিল। আমি খুব একটা মেজাজ হারানোর মানুষ নই। কিন্তু ওই মুহূর্তে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে মেজাজ ঠিক রাখতে পারিনি। কারণ, আমার উচিত ছিল জিতিয়ে মাঠ ছাড়া। নিজের উপরেই রাগ হচ্ছিল।’’
যদিও তিনি ফেরার পরে সাজঘরে সতীর্থেরা হাততালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান বলেই জানিয়েছেন ব্রুক। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ফেরার পরে সবাই হাততালি দেয়। তাতে কিছু ক্ষণ পরে মেজাজ ঠিক হয়। কিন্তু তখনও ২১ রান বাকি ছিল। তাই একটু চাপে ছিলাম। ওকস ও উডের উপর ভরসা ছিল। উড যখন ছক্কা মারল তখন বুঝে গিয়েছিলাম এই ম্যাচ আমরা জিতব।’’
সপ্তম উইকেটে ওকসের সঙ্গে ৫৯ রানের জুটি বাঁধেন ব্রুক। নইলে ম্যাচ হারতেও পারত ইংল্যান্ড। দীর্ঘ দিন পরে টেস্ট খেলছেন ওকস। তাঁর সঙ্গে খেলার মাঝে কী পরিকল্পনা করেছিলেন সেটাও জানিয়েছেন ব্রুক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জুটি বাঁধতে চাইছিলাম। ঠিক করেছিলাম ছোট ছোট লক্ষ্য নিয়ে এগোব। সেটাই করেছি। ঝুঁকি নিইনি। ওকস খুব ভাল খেলছিল। তাই ওর উপর আমার ভরসা ছিল।’’
ইংল্যান্ডের জিততে দ্বিতীয় ইনিংসে দরকার ছিল ২৫১ রান। ভাল শুরু করেও আউট হয়ে যান দলের দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট। রান পাননি মইন আলি। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই আক্রমণের পথে যান ব্রুক। শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের বিরুদ্ধে হাত খুলে খেলা শুরু করেন। অফস্টাম্পের বাইরের বলে দর্শনীয় কভার ড্রাইভ মারেন। প্রথমে রুট ও তার পর স্টোকসের সঙ্গে জুটি গড়েন ব্রুক। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে-পরে তিনটি উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ফিরে যান রুট, স্টোকস ও বেয়ারস্টো। সেই সময় যদি ব্রুকও আউট হয়ে যেতেন তা হলে খেলা ইংল্যান্ডের হাত থেকে বেরিয়ে যেত। সেটা হতে দেননি তিনি। এক দিক ধরে থাকেন। আবার উইকেট কামড়ে পড়েও থাকেননি। বল দেখে শট খেলেন। ওকসের উপর ভরসা রাখেন। অর্ধশতরানের পরে আরও হাত খুলে খেলা শুরু করেন ব্রুক। দেখে মনে হচ্ছিল, দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়বেন। কিন্তু সেটা পারেননি। ৭৫ রানের মাথায় বড় শট মারতে গিয়ে আউট হন। তাতে অবশ্য ইংল্যান্ডের জিততে সমস্যা হয়নি। তাঁর দেখানো পথেই আক্রমণাত্মক খেলে দলকে জেতান ওকস ও উড।