(বাঁ দিকে) আউট হওয়ায় হতাশ লোকেশ রাহুল। আউটের সেই মুহূর্ত (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
লোকেশ রাহুলকে আউট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। তিনি কি আদৌ আউট ছিলেন? প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এর আগেও বিভিন্ন সময় আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছেন ভারতীয় ব্যাটারেরা। আবার তেমনটাই হল?
কী ভাবে আউট হয়েছিলেন রাহুল?
রোহিত শর্মা না থাকায় ওপেন করতে নামেন রাহুল। ২৩তম ওভারটি করছিলেন মিচেল স্টার্ক। তাঁর দ্বিতীয় বলটি রাহুলের ব্যাটের খুব কাছ দিয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। একটা আওয়াজও হয়েছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া আবেদন করলেও মাঠের আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউ নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তৃতীয় আম্পায়ার দেখেন ব্যাটের পাশ দিয়ে বল যাওয়ার সময় একটা আওয়াজ হয়েছে। স্নিকো মিটারে স্পাইকও দেখাচ্ছে। তৃতীয় আম্পায়ার আউট দিয়ে দেন। কিন্তু রাহুলকে দেখা যায় প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে মাথা নাড়তে নাড়তে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন ব্যাট এবং বলের মধ্যে ফাঁক ছিল। ২৬ রান করে আউট হন তিনি।
বিতর্ক কী নিয়ে?
রাহুলের ব্যাটে আদৌ কি বল লেগেছিল? যে সময় স্নিকো মিটারে স্পাইকটা দেখা যায়, সেই সময় রাহুলের ব্যাট প্যাডে লেগেছিল। ফলে আদৌ বল ব্যাটে লেগে উইকেটরক্ষকের হাতে গিয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ব্যর্থ প্রযুক্তি
তৃতীয় আম্পায়ার প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আউটের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁকে যে যে দিক থেকে আউটের ভিডিয়ো দেখানো হয়েছিল, তাতে বোঝা মুশকিল রাহুল আউট ছিলেন কি না। তৃতীয় আম্পায়ার অন্য দিক থেকে দেখানোর কথা বলেছিলেন, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। রাহুলের লেগ সাইড থেকে একটি ভিডিয়ো দেখানো হচ্ছিল তৃতীয় আম্পায়ারকে। সেখান থেকে বোঝা সম্ভব ছিল না ব্যাট প্যাডে লেগেছিল কি না। আবার সামনের দিক থেকে ভিডিয়োটি দেখানো হয়, সেটিতে বোঝাই যায়নি বল কখন ব্যাটে লাগে। যে কারণে তৃতীয় আম্পায়ার অন্য কোনও দিক থেকে আউটটি দেখানোর কথা বলেছিলেন।
দোষ রয়েছে তৃতীয় আম্পায়ারের
তৃতীয় আম্পায়ার যথেষ্ট প্রমাণ পাননি। তিনি নিজেই বার বার অন্য দিক থেকে আউটটি দেখতে চাইছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, যথেষ্ট প্রমাণ না পেলে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন না তৃতীয় আম্পায়ার। মাঠের আম্পায়ার নট আউট দিয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার সেই সিদ্ধান্ত বদলাতে বলেন। তিনি রাহুলকে আউটের সিদ্ধান্ত দিতে বলেন। যথেষ্ট প্রমাণ না পেয়ে সিদ্ধান্ত বদলানো উচিত নয়। প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জয় মঞ্জরেকর বলেন, “তৃতীয় আম্পায়ারের আরও ভিডিয়ো দেখা উচিত ছিল। মাত্র দুটো দিক থেকে দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। খালি চোখে দেখে মনে হয়েছে ব্যাট প্যাডে লেগেছিল। বাকিটা বোঝার জন্য প্রযুক্তির সাহায্য প্রয়োজন ছিল।”
ভিন্ন মত
প্রাক্তন আম্পায়ার সাইমন টফেল বলেন, “ব্যাট এবং প্যাডের মাঝখানে ফাঁক থাকলেও একটা স্পাইক দেখা গিয়েছে। আবার ব্যাটের নীচটাও তখন কোথাও লাগেনি। যে কারণে তৃতীয় আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি মনে করেছেন, বল নিশ্চয়ই ব্যাটে লেগেছে, সেই কারণেই স্নিকোতে স্পাইক দেখা গিয়েছে।”