(বাঁ দিকে) দিগ্বেশ রাঠি এবং অভিষেক শর্মা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস। একেক জনের একেক রকম। ফুটবলে গোল করলে বা গোল বাঁচালে খেলোয়াড়েরা বিভিন্ন রকম উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। আবার ক্রিকেট মাঠেও শতরান করলে বা উইকেট পেলে ক্রিকেটারেরা উচ্ছ্বাস দেখান। খেলোয়াড়দের কিছু উচ্ছ্বাস নজর কাড়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের। এ বারের আইপিএলেও বিভিন্ন রকম উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। যে তালিকায় শেষ সংযোজন শনিবার শতরানের পর অভিষেক শর্মার চিরকুট উচ্ছ্বাস।
এ বারের আইপিএলে উচ্ছ্বাস প্রকাশে প্রথম নজর কাড়েন দিগ্বেশ রাঠী। লখনউ সুপার জায়ান্টসের স্পিনার উইকেট পেলে হাতের তালুতে কিছু লেখার ভঙ্গি করছিলেন। তা পছন্দ হয়নি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। পর পর দু’টি ম্যাচে শাস্তি পেতে হয় দিগ্বেশকে। তার পর উচ্ছ্বাসের ধরন কিছুটা বদলাতে বাধ্য হয়েছেন দিগ্বেশ। এখনও উইকেট নিয়ে লিখে রাখছেন। তবে এখন আর হাতে নয়। লখনউয়ের স্পিনার লিখছেন মাঠে।
বলা যেতে পারে লোকেশ রাহুলের কথাও। ভারতীয় দলের পোড়খাওয়া ব্যাটার আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলছেন শুধু ব্যাটার হিসাবে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ৫৩ বলে ৯৩ রানের ইনিংস খেলেছেন রাহুল। দলকে জয়ে এনে দেওয়ার পর বেঙ্গালুরুর ২২ গজে ব্যাট ঠুকে উচ্ছ্বাস দেখিয়েছিলেন রাহুল। বেঙ্গালুরু তাঁর ঘরের মাঠ। এক সময় আইপিএলও খেলেছেন আরসিবির হয়ে। চেনা ২২ গজে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলার পর আবেগ সংযত করতে পারেননি রাহুলের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর মাটি তাঁর নিজের।
দিগ্বেশ বা রাহুলের উচ্ছ্বাসের ধরন ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে অভিষেকের চিরকুট উচ্ছ্বাস। শনিবার শতরান করার পর পকেট থেকে একটি চিরকুট বের করে দেখান সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ওপেনার। যা নিয়ে উৎসাহ তৈরি হয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। অভিষেকের পকেটে থাকা চিরকুটে খেলা ছিল, ‘‘দিস ওয়ান ইজ ফর অরেঞ্জ আর্মি।’’ এ বারের আইপিএলে অভিষেক রান পাচ্ছিলেন না। প্রথম পাঁচটি ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে যথাক্রমে ২৪, ৬, ১, ২ এবং ১৮ রান। দলও টানা চারটি ম্যাচ হেরে কোণঠাসা অবস্থায় ছিল। চাপের মুখে ৪০ বলে শতরান পূর্ণ করে সমর্থকদের বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। হায়দরাবাদের সমর্থকদের মুখে হাসি ফেরাতেই যেন মাঠে নেমেছিলেন তিনি। এই অভিষেকই আগে ভাল ইনিংস খেলার পর হাতের মুদ্রায় ইংরেজি ‘এল’ অক্ষর দেখাতেন। সমর্থকদের প্রতি ভালবাসার প্রতীক ছিল সেই উচ্ছ্বাস।
খেলোয়াড়দের সকলেরই উচ্ছ্বাস প্রকাশের নিজস্ব ধরন থাকে। ভঙ্গি থাকে। তার কিছু কিছু জনপ্রিয়ও হয়। যেমন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ‘সিউ’ উচ্ছ্বাস ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। আবার স্প্রিন্টার উসেইন বোল্টের দু’হাতে দিক নির্দেশের উচ্ছ্বাসও জনপ্রিয়। যা পরিচিত ‘লাইটনিং বোল্ট’ নামে। বিশ্বকাপ ফুটবলে গোল করার পর বিভিন্ন দেশের ফুটবলারেরা নানা ভাবে উৎসব করেন মাঠে। বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলির ফুটবলারদের কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে গিয়ে নাচ আলাদা করে নজর কাড়ে।
খেলোয়াড়দের বিভিন্ন ধরনের উচ্ছ্বাস বা উৎসব ক্রীড়াপ্রমীদের মনোরঞ্জন করে। এ বারের আইপিএলও ব্যতিক্রম নয়। দিগ্বেশ, রাহুল, অভিষেকদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ বাড়তি রং যোগ করছে টি-টোয়েন্টি লিগে।