যশপ্রীত বুমরা এবং রবীন্দ্র জাডেজা। —ফাইল চিত্র।
যশপ্রীত বুমরা চোট সারিয়ে ফিরে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। টেস্ট দলকেও নেতৃত্ব দিয়েছিল ও। রবীন্দ্র জাডেজার মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার দলে রয়েছে। তার পরেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের সহ-অধিনায়কের নাম হার্দিক পাণ্ড্য। এমন হাস্যকর সিদ্ধান্ত কী ভাবে নিতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড?
আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সিদ্ধান্ত। জাতীয় দলের অধিনায়ককে সরিয়ে হার্দিককে আইপিএলে অধিনায়ক করে দিল। যে নেতা পাঁচ বার ট্রফি এনে দিয়েছিল, সেই রোহিতকে সরিয়ে দিল। এটা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য লজ্জার। আর সেই লজ্জা আরও বাড়ল হার্দিককে জাতীয় দলের সহ-অধিনায়ক করায়।
আরও হাস্যকর হচ্ছে একই দোষ করে কোনও ক্রিকেটার শাস্তি পায়, আবার কেউ পুরস্কৃত হয়। ঈশান কিশন এবং শ্রেয়স আয়ার ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেনি বলে বার্ষিক চুক্তি থেকে বাদ পড়ল। হার্দিকও তো ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে না। ও কেন শাস্তি পেল না? ঈশান যে ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলে আলাদা ভাবে অনুশীলন করছিল, সেখানে হার্দিকও ছিল। তাহলে ওকে কেন শাস্তি দেওয়া হল না? বরং হার্দিককে পুরস্কার দেওয়া হল। সহ-অধিনায়ক করে দেওয়া হল।
হার্দিক পাণ্ড্য। —ফাইল চিত্র।
হার্দিক সব সময় একটা বাড়তি সুবিধা পায়। কেন পায় সেটা বলা কঠিন। হয়তো অম্বানী ঘনিষ্ঠ বলে। এই যে টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক করা হল হার্দিককে, এর ফলে কিন্তু ভারতীয় দলের ক্ষতি হবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই সিদ্ধান্ত দলের পরিবেশ নষ্ট করবে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলে যেমন দু’টি ভাগ হয়ে গিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, ভারতীয় দলেও তেমন হলে অবাক হওয়ার থাকবে না। রোহিতের কাজ বাড়ল। এখন শুধু ক্রিকেট নিয়ে ভাবলে হবে না, দলটাও গোছাতে হবে। খুব বড় ভুল করে ফেলল অজিত আগরকরেরা। ও নিজে যখন খেলত, তখনও বল হাতে প্রচুর রান দিত। তার পরেও দলে জায়গা পেত। সে নির্বাচক হয়েও তাই বাইরের চাপ মেনে নিচ্ছে। রোহিতকেও মেনে নিতে হচ্ছে। তবে বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় দলে একটা ভাগ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলের জন্য সেটা ভাল হবে না।
জাতীয় দলে হার্দিক যখন ইচ্ছা হবে তখন খেলবে। বিশ্বকাপে তো চারটি ম্যাচ খেলে চোট পেয়ে গেল। তাতে তো দলের কোনও ক্ষতি হয়নি। সুস্থ হওয়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেনি। সোজা আইপিএল খেলতে নেমে পড়ল। একার হাতে কোনও ম্যাচ জিতিয়েছে বলেও মনে করা কঠিন। পার্টি, নাচ-গান করেই কেটে যায় ওর। তাকে মুম্বই অধিনায়ক করে দিল।
বিশ্বকাপের দলে তো শিবম দুবেকে নেওয়া হয়েছে। ও তো বল করতে পারে। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আগে বল করেনি। কিন্তু ভারতীয় দল ঘোষণা হওয়ার পরেই কিন্তু বল করল। উইকেটও পেল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে ওকে নেওয়াটা খুব ভাল সিদ্ধান্ত। কিন্তু ও যখন দলে রয়েছে, তখন হার্দিককে নেওয়ার কী দরকার ছিল। অলরাউন্ডারের কাজটা তো দুবে করে দেবে। হার্দিক না ব্যাট হাতে রান করছে, না উইকেট নিতে পারছে। ওকে দলে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু হার্দিককে নেওয়া হল এবং সহ-অধিনায়কও করে দেওয়া হল। এটা খুব বড় ভুল করল ভারত।