তামিম ইকবাল। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপের আগেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে বিতর্ক তৈরি হয় তামিম ইকবালকে নিয়ে। তাঁর সঙ্গে শাকিব আল হাসানের সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়। কিন্তু তামিম না থাকায় কি বাংলাদেশ দলেরই সুবিধা হল?
তামিম বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার। তিনি দলকে নেতৃত্বও দিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই অবসর নিয়ে নেন তিনি। পরে আবার ফিরে আসেন। কিন্তু চোটের কারণে বিশ্রাম নেন। এশিয়া কাপেও খেলেননি। ঘরের মাঠে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফিরলেও বিশ্বকাপে তাঁকে বাদ দিয়েই দল গড়তে বলেন তামিম। সেই মতো দল তৈরি হয় তামিমকে বাদ দিয়ে। অধিনায়ক করা হয় শাকিবকে। তামিমের এমন ব্যবহারকে শাকিব শিশুসুলভ আচরণ বলেন।
বিশ্বকাপের আগের সেই ঘটনা পিছনে ফেলে ৭ অক্টোবর ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামেন শাকিবেরা। সেই ম্যাচে জিতে শুরু করলেও পরের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারতে হয় তাঁদের। কিন্তু তামিম দলে না থাকায় খুব যে অসুবিধা হচ্ছে, তেমনটা মনে হচ্ছে না। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সব থেকে বেশি রানের তালিকায় তামিম তিন নম্বরে। তাঁর আগে রয়েছেন শাকিব এবং মুশফিকুর রহিম। বাঁহাতি তামিমের এক দিনের ক্রিকেটে গড় ৩৬.৬৫। কিন্তু বিশ্বকাপে সেই গড় ২৪.৭৫। তামিম প্রথম বার ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ খেলেছিলেন ২০০৭ সালে। সেই সময় তাঁর বয়স ১৭ বছর। ভারতের বিরুদ্ধে সে বার ৫১ রান করেছিলেন তামিম। জাহির খানের কালঘাম ছুটিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি তামিম।
বিশ্বকাপে ২৯টি ম্যাচ খেলে তামিম করেছেন ৭১৮ রান। মাত্র চারটি অর্ধশতরান রয়েছে তাঁর। স্ট্রাইক রেট ৭৩.১১। বিশ্বকাপে কখনও শতরান করেননি তামিম। তাঁর সর্বোচ্চ ৯৫ রান এসেছিল স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে।
এ বারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ছাড়া যে ন’টি দল খেলছে তাদের বিরুদ্ধে তামিম কতটা সফল? বিশ্বকাপে এই ন’দলের বিরুদ্ধে তামিম মোট ২২টি ম্যাচ খেলেছেন। করেছেন ৪৯৪ রান। গড় ২২.৪৫। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়ে হয়তো তামিম এই দলগুলির বিরুদ্ধে ভাল খেলেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপে তামিম নয়, বাংলাদেশের ভরসা হয়েছিলেন শাকিব, মুশফিকুর এবং মাহমুদুল্লা। তাঁদের তিন জনকেই দলে রাখা হয়েছে।
ওপেনার হিসাবে দলে জায়গা পাকা লিটন দাস এবং তনজিদ হাসান তামিম। এ ছাড়াও মেহিদি হাসান মিরাজ দলে রয়েছেন। তিনি ওপেন করতে পারেন আবার তিন নম্বরেও ব্যাট করতে পারেন। তামিমের থেকে এই তিন জনের অবশ্যই অভিজ্ঞতা অনেক কম। কিন্তু এই তিন জনের ব্যাটে রান রয়েছে। সেটার ফলে তামিমকে বাইরে বসতে হতে পারত এ বারের বিশ্বকাপে। বাংলাদেশ তামিমের পরবর্তী যুগের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এ বারের বিশ্বকাপই সেটার ইঙ্গিত। আগামী দিনে আদৌ তামিমকে আর দলে দেখা যাবে কি না সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে সমর্থকদের মনে।