শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের উচ্ছ্বাস। ছবি পিটিআই
দু’দল আগেই এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে যাওয়ায় শুক্রবার সুপার ফোরের ম্যাচ ছিল নেহাতই নিয়মরক্ষার। ফাইনালের আগে বিপক্ষ কতটা এগিয়ে, একে অপরের শক্তি-দুর্বলতা কী, সেটাই বুঝে নেওয়ার লক্ষ্যে নেমেছিল পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা। দিনের শেষে বাবর আজমকে টেক্কা দিলেন দাসুন শনাকা। পাকিস্তানকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে দিয়ে ফাইনালে প্রস্তুতি ভাল ভাবেই সেরে রাখল শ্রীলঙ্কা।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে দুরমুশ হওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, প্রতিযোগিতা থেকে আয়োজক শ্রীলঙ্কার ছিটকে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। সেই শ্রীলঙ্কাই টানা চারটি ম্যাচ জিততে ফাইনালে উঠে গিয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে সুপার ফোরে জয়ের হ্যাটট্রিক করে ফেলল তারা। আফগানিস্তান, ভারত এবং পাকিস্তানকে পরপর হারিয়েছে শনাকার দল।
নিয়মরক্ষার ম্যাচ হওয়ায় দু’দলই পরীক্ষা-নিরীক্ষার রাস্তায় হেঁটেছে। পাকিস্তান দলে আসেন হাসান আলি, উসমান কাদির। ধনঞ্জয় ডি’সিলভা এবং প্রমোদ মদুশানা সুযোগ পান শ্রীলঙ্কা দলে। টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। প্রথমে ব্যাট করে ব্যাটিং বিপর্যয় সামলে নির্ধারিত ওভারের আগেই ১২১ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। জবাবে পথুম নিসঙ্কের অর্ধশতরানের সৌজন্যে পাঁচ উইকেট ম্যাচ জেতে শ্রীলঙ্কা। শুক্রবারের ম্যাচের পর এটা আরও পরিষ্কার, ফাইনালেও নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে চলেছে টস। যে জিতবে, জয়ের পাল্লা ভারি থাকবে তার দিকেই।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ে পাকিস্তান। মহম্মদ রিজওয়ান এবং বাবর আজম শুরুটা খারাপ করেননি। তবে খারাপ শট খেলে উইকেট খোয়ান রিজওয়ান। প্রমোদ মদুশানের বল পাক উইকেটকিপারের ব্যাটের কানায় লেগে শূন্যে উঠে যায়। অনায়াসে ক্যাচ ধরেন উইকেটকিপার কুশল মেন্ডিস। ফখর জমান যোগ দেন অধিনায়ক বাবর আজমের সঙ্গে। প্রাথমিক ধাক্কা সামলালেও রান তোলার গতি অনেক কমে যায়।
দশম ওভারে করুণারত্নের বলে ফিরে যান জমান (১৩)। ভাল খেলতে থাকা বাবর (৩০) পরের ওভারে ফিরতেই পাকিস্তানের ইনিংসে ধস নামে। পরের দিকে যাঁরা এসেছেন ক্রিজে, একমাত্র মহম্মদ নওয়াজ (২৬) বাদে কেউ দাঁড়াতে পারেননি। শ্রীলঙ্কার বোলাররা দুরন্ত বোলিং করলেন। তিন উইকেট নিয়েছেন ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গ। যে বলটিতে তিনি ইফতিকার আহমেদকে আউট করলেন, তা বহু দিন মনে থাকতে বাধ্য। দু’টি করে উইকেট নিয়েছেন মাহিশ থিকশানা এবং প্রমোদ মদুশনে।
বল করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে পাকিস্তান। দ্বিতীয় বলেই ফিরে যান মেন্ডিস। পরের ওভারেই আউট দানুষ্কা গুণতিলকা। পঞ্চম ওভারে আউট হন ধনঞ্জয় ডি’সিলভা। ২৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে শ্রীলঙ্কা। বিপর্যয় বাঁচান ওপেনার নিসঙ্ক এবং ভানুকা রাজাপক্ষ। দু’জনে মিলে চতুর্থ উইকেটে যোগ করেন ৫১ রান। ব্যক্তিগত ২৪ রানের মাথায় রাজাপক্ষ ফেরার পর শ্রীলঙ্কার ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান নিসঙ্ক এবং অধিনায়ক দাসুন শনাকা। পরে শনাকা ফিরলেও সমস্যা হয়নি। শ্রীলঙ্কাকে জিতিয়ে দেন নিসঙ্ক (অপরাজিত ৫৫) এবং হাসরঙ্গ (অপরাজিত ১০)।