ICC Champions Trophy 2025

১২ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির লক্ষ্যে ভারত, দলের শক্তি-দুর্বলতা বিচার করল আনন্দবাজার অনলাইন

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তিন দিন পর প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ভারত। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে ট্রফি জিতলেও ২০১৭ সালে ফাইনালে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানের কাছে। ভারতের শক্তি-দুর্বলতা বিশ্লেষণ করল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৫৩
Share:
cricket

(বাঁ দিকে) ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ছবি: পিটিআই।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আর তিন দিন পর প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ভারত। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে ট্রফি জিতলেও ২০১৭ সালে ফাইনালে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানের কাছে। রোহিত শর্মার হাতে আবার ট্রফি দেখতে চাইছেন সমর্থকেরা। তবে ভারতের কাজ মোটেই সহজ হবে না। প্রতিযোগিতায় নামার আগে ভারতের বেশ কিছু শক্তি যেমন রয়েছে, তেমনই দুর্বলতাও রয়েছে। তা বিশ্লেষণ করল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

ভারতের শক্তি

রোহিত-কোহলির অভিজ্ঞতা: এটাই সম্ভবত শেষ আইসিসি ইভেন্ট রোহিত এবং কোহলির। যদি তা-ই হয়, নিজেদের সেরাটা দিতে মুখিয়ে থাকবেন দুই ক্রিকেটার। রোহিত এবং কোহলি থাকায় ভারতের টপ অর্ডারের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা থাকছে। এঁরা দু’জন খেলতে পারলে বাকিদের উপরে চাপ অনেকটাই কমে যাবে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাইবে ভারত।

Advertisement

দলে চার অলরাউন্ডার: হার্দিক পাণ্ড্য, অক্ষর পটেল, ওয়াশিংটন সুন্দর এবং রবীন্দ্র জাডেজা— এই চার জন হলেন ভারতের অলরাউন্ডার। বাকি দলগুলির থেকে এ ব্যাপারে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে ভারত। কারণ তাদের হাতে বিকল্প বেশি। প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে এগিয়ে থাকবেন হার্দিক, অক্ষর এবং জাডেজা। এত অলরাউন্ডার থাকার সুবাদে কোনও দিন ব্যাটিং বা বোলিং বিভাগ খারাপ খেললে তা সামাল দিতে পারবেন তাঁরা।

ভাল মানের স্পিনার: দুবাইয়ে পিচে স্পিনারদের ফর্ম কাজে লাগতে পারে। ভারতের হাতে রয়েছে বরুণ চক্রবর্তীর মতো স্পিনার, যিনি সাম্প্রতিক কালে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। এ ছাড়া অভিজ্ঞ জাডেজা বা অক্ষর যে কোনও সময় ম্যাচের মোড় বদলে দিতে পারেন। তাঁরা না থাকলে কুলদীপ যাদবও কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারেন। ফলে স্পিন বিভাগে বাকিদের থেকে এগিয়ে থাকবে ভারত।

শামির উপস্থিতি: গত এক দিনের বিশ্বকাপে প্রথম চারটি ম্যাচে খেলেননি। তাতেই প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বেশি উইকেট ছিল মহম্মদ শামির দখলে। বড় প্রতিযোগিতায় সব সময় নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান শামি। চোট সারিয়ে ফেরার পর ভাল ফর্মেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বলকে কথা বলাতে পারেন শামি।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আগ্রাসী ক্রিকেট: ইদানীং আগ্রাসী ক্রিকেট খেলা ভারতের মন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় এক দিনের ম্যাচে তা আবার দেখা গিয়েছে। শুরুটা আগ্রাসী হলে গোটা ম্যাচেও তা বজায় রাখছে তারা। ফলে স্কোরবোর্ডে বড় রান উঠছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও রোহিতেরা সেই ছন্দেই খেলতে চাইবেন।

ভারতের দুর্বলতা

বুমরাহের না থাকা: জসপ্রীত বুমরাহের অনুপস্থিতি নিঃসন্দেহে ভারতের কাছে বড় ধাক্কা। শুরুতে, মাঝে, শেষে— ম্যাচের যে কোনও সময়ে উইকেট নিতে বুমরাহের অবদান অনস্বীকার্য। ক্রিজ়‌ে জমে যাওয়া জুটি ভাঙতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা নেন। বুমরাহের অভাব প্রতিযোগিতায় ভুগতে হবে ভারতকে।

অনভিজ্ঞ পেস বোলিং: মহম্মদ শামি ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে আর কোনও অভিজ্ঞ পেসার নেই। হর্ষিত রানা সবে দলে এসেছেন। আরশদীপ সিংহ এক দিনের ক্রিকেটে খুব বেশি ম্যাচ খেলেননি। মাঝের দিকে কী ভাবে উইকেট নিতে হয় তা এখনও তাঁর অজানা। তাই ভারতকে একা শামির উপরেই নির্ভর করতে হবে। হার্দিক পেস বোলিং করলেও কখনওই প্রধান বোলার নন।

প্রয়োজনের তুলনায় বেশি স্পিনার: ভারত দুবাইয়ে গিয়েছে পাঁচ স্পিনার নিয়ে। সাম্প্রতিক ফলাফল বিশ্লেষণ করলে বোঝা যাবে, দুবাইয়ের মাঠে স্পিনারদের ভূমিকা ক্রমশ কমছে। পাটা উইকেটে বল ঘোরাতে গেলে যে দক্ষতা দরকার, তা এই স্পিনারদের কতটা রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। স্পিনারেরা যদি সাহায্যই না পান, তা হলে এত জনকে নিয়ে যাওয়ার কী অর্থ?

কেএল রাহুলের ফর্ম: কোচ গৌতম গম্ভীর আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, রাহুলই প্রথম পছন্দের উইকেটকিপার হবেন। অর্থাৎ, প্রথম একাদশে জায়গা হবে না ঋষভ পন্থের। তাই ব্যাটার রাহুলের ফর্ম নিয়ে ভারতের চিন্তা থাকছে। আগের ম্যাচে করা ৪০ রান সাম্প্রতিক কালে সর্বোচ্চ। তিনি ধারাবাহিক ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। কোনও দিন টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে রাহুলকে ভূমিকা নিতে হবে। সেই দায়িত্ব নিতে তিনি সক্ষম কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।

মিডল অর্ডারের রান নেই: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি এক দিনের ম্যাচে ভারতের টপ অর্ডারই বেশি রান করেছেন। মিডল অর্ডারে থাকা রাহুল, হার্দিক এবং জাডেজা রান পাননি। অবস্থা এমন যে অক্ষরকে তুলে আনতে হয়েছে উপরের দিকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কাজ সহজ হবে না। কোনও দিন টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে রাহুল, হার্দিককে ভাল খেলতে হবে। তবে সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে এই বিভাগটি নিয়ে চিন্তা থাকছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement