Ajinkya Rahane on KKR Loss

কলকাতাকে ডোবাচ্ছেন সেই রাহানেই, আরও একটি ম্যাচে হার অধিনায়কের বোকামিতে

আরও একটি জেতা ম্যাচ হারল কলকাতা নাইট রাইডার্স। আরও একটি ম্যাচ হারতে হল অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানের বোকামির জন্য। কলকাতাকে ডোবাচ্ছেন সেই রাহানেই।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:১৩
Share:
cricket

অজিঙ্ক রাহানে। —ফাইল চিত্র।

এক জন অধিনায়ক জানেন না, ব্যাটিং অর্ডারে কাকে কত নম্বরে নামাতে হবে? এক জন অধিনায়ক জানেন না তাঁর অফ স্টাম্প কোথায়? এক জন অধিনায়ক জানেন না, ম্যাচের কোন পরিস্থিতিতে কী সিদ্ধান্ত নিতে হয়? এক জন অধিনায়ক নেট রানরেটের কথা ভাবেন না। তার ফল ভোগ করতে হয় দলকে। আরও একটি জেতা ম্যাচ হারল কলকাতা নাইট রাইডার্স। আরও একটি ম্যাচ হারতে হল অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানের বোকামির জন্য। কলকাতাকে একের পর এক ম্যাচে ডোবাচ্ছেন সেই রাহানেই।

Advertisement

পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ১১২ রান তাড়া করতে নেমেছিল কেকেআর। শুরুতে জোড়া ধাক্কা খেলেও রাহানে ও অঙ্গকৃশ রঘুবংশী যখন খেলছিলেন, তখন দেখে মনে হচ্ছিল, হাসতে হাসতে জিতবে কলকাতা। এমনকি, পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে ওঠার সুযোগ ছিল তাদের। কিন্তু ৭.৪ ওভারের মাথায় যুজবেন্দ্র চহলের বল রাহানের প্যাডে লাগে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেন। তার পরেই নাটক রাহানের।

আম্পায়ার আউট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাজঘরের দিকে ফিরছিলেন রাহানে। তিনি ভেবেছিলেন আউট হয়ে গিয়েছেন। পরে রঘুবংশী তাঁকে ডাকেন। সতীর্থের সঙ্গে কথা বলেন রাহানে। তার পরেও রিভিউ নেননি। সোজা হাঁটা দেন ডাগআউটের দিকে। যেখানে খালি চোখে দেখে মনে হচ্ছিল বল অফস্টাম্পের বাইরে লেগেছে সেখানে রাহানে রিভিউ নিলেন না। সেই একটা সিদ্ধান্তই কেকেআরকে হারিয়ে দিল।

Advertisement

পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, বল অফস্টাম্পের বাইরে প্যাডে লেগেছে। অর্থাৎ, রিভিউ নিলে রাহানে নটআউট থাকতেন। যখন রিপ্লে দেখানো হচ্ছে, তখন ডাগআউটে থমথমে মুখে বসে কলকাতার অধিনায়ক। ৬২ রানে ৩ উইকেট থেকে ৭৯ রানে ৮ উইকেট পড়তে দেখলেন রাহানে। কী ভাবে একটা জেতা ম্যাচ হারতে হয় সেটা দেখলেন রাহানে। শেষ পর্যন্ত হারের দায় নিজের কাঁধে নিলেন অধিনায়ক।

ম্যাচ শেষে রাহানে বলেন, “কিচ্ছু ব্যাখ্যা করার নেই। কী হয়েছে তা সকলেই দেখেছে। দলের খেলায় আমরা হতাশ। ভুল শট খেলে আউট হলাম। এই হারের দায় আমার।” কিন্তু তিনি তো আউট ছিলেন না। একবারও কি তা মনে হয়নি? সতীর্থ রঘুবংশী কী বলেছিলেন তাঁকে? রাহানে বলেন, “অঙ্গকৃশ নিশ্চিত ছিল না। ওর মনে হচ্ছিল আম্পায়ার্স কল হতে পারে। আমিও নিশ্চিত ছিলাম না। ওই সময় রিভিউ নষ্ট করতে চাইনি।” রাহানের এই কথা থেকে স্পষ্ট, তিনি বুঝতেই পারেননি যে বল অফস্টাম্পের বাইরে লেগেছিল। এক জন ব্যাটারের কাছে সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাহানে তো টেকনিক্যাল ব্যাটার। তাঁর কাছে এই ভুল আশা করা যায় না। যেখানে তিনি ভাল খেলছেন, যেখানে তাঁর মনে কিছুটা হলেও সন্দেহ রয়েছে সেখানে তো তাঁর রিভিউ নিতেই হত। এই সহজ বিষয়টি মাথায় ঢুকল না তাঁর।

শুধু তাই নয়, রান তাড়া করার সময় এক বারও নেট রানরেটের কথা মাথায় আসেনি রাহানেদের। তিনি নিজেই সেটা জানিয়েছেন। রাহানে বলেন, “নেট রানরেট আমাদের মাথায় ছিল না। অন্তত যত ক্ষণ আমি ব্যাট করছিলাম, তত ক্ষণ তো ছিলই না। আমরা খুব খারাপ ব্যাট করেছি। এই হারের পুরো দায় আমার।” যেখানে আইপিএলের প্রতিটি ম্যাচের পর পয়েন্ট তালিকায় বদল হচ্ছে, সেখানে এ রকম একটি ম্যাচে রানরেট বাড়ানোর কথা একজন অধিনায়ক ভাববেন না। তা হলে আর কবে ভাববেন তিনি?

হারের ধাক্কায় কিছুটা বিধ্বস্ত রাহানে। সাধারণত তাঁর মাথা ঠান্ডা থাকে। কিন্তু এই মুহূর্তে তিনি নিজেই বুঝতে পারছেন না বাকিদের কী বলবেন? কেকেআর অধিনায়ক বলেন, “আমার মাথায় এখন অনেক কিছু চলছে। সাজঘরে গিয়ে নিজেকে শান্ত করতে হবে। মাথা ঠান্ডা করতে হবে। ভাবতে হবে বাকিদের কী বলব।” রাহানের এই কথা থেকেই স্পষ্ট এ বাবে জেতা ম্যাচ হেরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। বুঝতে পারছেন না কী ভাবে প্রতিযোগিতায় এগোবেন। তিনি আউট হওয়ার পরে যে ভাবে পুরো দল তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে সেটাও হয়তো তাঁর মাথায় ঘুরছে। ভাবছেন, এই ব্যাটিং আক্রমণ নিয়ে কী করবেন তিনি?

কয়েক দিন আগে ইডেন গার্ডেন্সে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ২৩৮ রান তাড়া করতে নেমে চার রানে হেরেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। সেই ম্যাচেও রান তাড়া করতে নেমে একটা সময় ভাল জায়গায় ছিল কলকাতা। রাহানে দায়িত্ব নিয়ে খেলছিলেন। কিন্তু সেই ম্যাচেও রাহানে ফেরার পর ভেঙে পড়ল কেকেআরের ব্যাটিং আক্রমণ। যে পরিস্থিতিতে দলের ফিনিশার রিঙ্কু সিংহকে নামাতে হত সেখানে রাহানে পর পর রমনদীপ সিংহ, আন্দ্রে রাসেলদের নামান। একের পর এক উইকেট পড়ে। শেষ দিকে নেমে অনেক চেষ্টা করেও জেতাতে পারেননি রিঙ্কু। এ বার আরও একটি ম্যাচ অধিনায়কের জন্যই হারতে হল।

যে ভাবে রাহানে একের পর এক ম্যাচে ভুল করছেন, তাতে দলের দুর্বলতম জায়গা হয়ে উঠেছেন তিনি। যেখানে অধিনায়কের সিদ্ধান্ত হারার পরিস্থিতি থেকে দলকে জেতায়, সেখানে রাহানের সিদ্ধান্ত জয়ের পরিস্থিতি থেকে দলকে হারাচ্ছে। যে ভাবে কেকেআর এগোচ্ছে তাতে আইপিএলের মাঝে চেন্নাই সুপার কিংসের মতো কেকেআরকেও না অধিনায়ক বদলাতে হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement