‘ক্রিকেট আর দেশ চালানো কিন্তু এক নয়’, ইমরানকে বার্তা আজহারউদ্দিনের

ইমরান নিজে ক্রিকেট জীবনে খুব ভাল ক্যাপ্টেন তো ছিলেনই। দারুণ বোলারও ছিলেন। বিশেষ করে ওঁর ইনডিপারগুলো খেলতে ব্যাটসম্যানেরা সব চেয়ে সমস্যায় পড়ত। পায়ের দিকে যে বলগুলো গোত্তা খেয়ে এসে ঢুকত। প্রধানমন্ত্রী ইমরানের দিকে কিন্তু এ রকম অনেক মারণ ডেলিভারি ধেয়ে আসবে। সেগুলোকে কী ভাবে উনি সামলান, সেটাই ঠিক করে দেবে ওঁর ভাগ্য।

Advertisement

মহম্মদ আজহারউদ্দিন

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০৩:০৭
Share:

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।ইনসেটে মহম্মদ আজহারউদ্দিন।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শুরুতেই একটা কথা বলতে পারি। ক্রিকেট মাঠ আর রাজনীতির ময়দান— দু’টো কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা মঞ্চ।

Advertisement

ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন দেখে ক্রিকেট মহলে হয়তো অনেকে খুশি। আমিও অভিনন্দন জানাচ্ছি ওঁকে। পাশাপাশি, অনুজ ক্রিকেটার এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে একটা কথা মাথায় রাখার পরামর্শ দেব। একটা ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন্সি করা আর দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া কিন্তু এক নয়।

ইমরান নিজে ক্রিকেট জীবনে খুব ভাল ক্যাপ্টেন তো ছিলেনই। দারুণ বোলারও ছিলেন। বিশেষ করে ওঁর ইনডিপারগুলো খেলতে ব্যাটসম্যানেরা সব চেয়ে সমস্যায় পড়ত। পায়ের দিকে যে বলগুলো গোত্তা খেয়ে এসে ঢুকত। প্রধানমন্ত্রী ইমরানের দিকে কিন্তু এ রকম অনেক মারণ ডেলিভারি ধেয়ে আসবে। সেগুলোকে কী ভাবে উনি সামলান, সেটাই ঠিক করে দেবে ওঁর ভাগ্য।

Advertisement

আমি রাজনীতির মাঠের নেতা ইমরানের কথা বলতে পারব না। কারণ, ওই দিকটা আমি দেখিনি। মাঠে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষ ক্যাপ্টেন হিসেবে ওঁকে দেখেছি। খুবই স্পোর্টিং ছিলেন। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে এত ধুন্ধুমার ব্যাপার থাকে। দু’দেশের মানুষ সব কিছু ছেড়ে এই একটা ম্যাচে জিততে চায়। বিশ্বকাপের মতো আসরে গিয়ে দেখেছি, মানুষ চাইছে, কাপ না জিতলেও চলবে। পাকিস্তানকে হারাও। ব্যাটসম্যান এবং অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে বেশির ভাগ ম্যাচে আমার সময়ে পাকিস্তানকে হারিয়েছি। নানা প্রতিক্রিয়া দেখেছি ম্যাচের পরে।

কিন্তু ইমরান আপসহীন প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও কখনও সৌজন্য হারাননি। ভাল ইনিংস খেললে আমাকে অনেক বারই মাঠের মধ্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন। শুধু আমাকে নয়, অনেক বারই দেখেছি ভারতের ক্রিকেটার সেঞ্চুরি করলে বা মাইলস্টোন পৌঁছলে ইমরান হাততালি দিয়েছেন বা এসে হাত মিলিয়ে গিয়েছেন।

আমাদের সময়কার খুব জনপ্রিয় তারকা ছিলেন ইমরান। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটে স্মরণীয় এক চরিত্র। বিশ্ব ক্রিকেটে ওঁর কথার ওজনও ছিল অনেক। তাই ওঁর প্রশংসা পেলে তরুণ ক্রিকেটারদের কেরিয়ারে নতুন দিগন্ত খুলে যেত। প্রতিপক্ষ দলের হলেও তরুণদের প্রশংসা করা থেকে কখনও পিছিয়ে থাকেননি। ১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমি ইমরানকে পিটিয়ে রান করেছিলাম। তার পরে কিন্তু কটাক্ষ বা স্লেজিং করতে দেখিনি ওঁকে। বরং প্রশংসাই করেছিলেন।

পাক সেনাই ইমরানকে পরিচালনা করবে কি না, সেই সব তর্কে এত দূরে বসে মন্তব্য করা কঠিন। তবে একটা কথা বলব, ক্রিকেট মাঠে দাঁড়িয়ে ইমরান তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত নিতেন। কারও সাহস হত না মাঝখানে আসার। প্রধানমন্ত্রী ইমরান নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কি না, তা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। যদি পারেন, ক্রিকেটের মতোই পাকিস্তান পাবে ভাল এক ‘ক্যাপ্টেন’!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement