সতর্ক: বাড়িতে থাকতে সকলকে অনুরোধ করছেন চানু। টুইটার
করোনাভাইরাসের জেরে অলিম্পিক্সের জন্য জাতীয় শিবিরে থেকেও অনুশীলন করার সুযোগ পাচ্ছেন না। ঘরের মধ্যেই কোচের দেওয়া সূচি মেনে শারীরিকভাবে সক্ষম থাকার নানা ট্রেনিং করছেন।
সংক্রমণের ভয়ে খাদ্যতালিকায় নেই মাংস, বিশেষ ভাবে বিদেশ থেকে আনা মাছ। ডিম আর শাকসবজি খেয়েই দিন কাটছে।
এক বছর পিছিয়ে গিয়েছে টোকিয়ো অলিম্পিক্স। ফলে যে লক্ষ্যে তৈরি হচ্ছিলেন, তাতে ভাটা পড়ছে।
এত ঝামেলার মধ্যে পড়েও সোনার মেয়ে ভারোত্তোলক মীরাবাই চানুর খেদ নেই। পাটিয়ালায় ফোনে ধরা হলে অলিম্পিক্সে যোগ্যতামান পেয়ে যাওয়া মেয়ে বলে দিলেন, ‘‘সবার আগে স্বাস্থ্য। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে হবে। সে জন্য কোনও সমস্যাই সমস্যা নয়। প্রধানমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। করোনা এবং লকডাউন নিয়ে মতামত জানতে চেয়েছিলেন। একই কথা বলেছি তাঁকে।’’
মেয়েদের ৪৯ কেজি বিভাগে টোকিয়োতে নামার কথা ছিল তাঁর। অনুশীলনে যা স্কোর করছিলেন তাতে পদক পাওয়া নিশ্চিত ছিল না। দীর্ঘদিন রয়েছেন শিবিরে। ধাপে ধাপে প্রস্তুতির শেষ পর্বে পৌছে গিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ-ই অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাওয়ায় সব ওলট-পালট। প্রায় দু’ঘণ্টা অনুশীলনের পরে চানু বলছিলেন, ‘‘প্রথমে মনটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এপ্রিলে কাজ়াখস্তানে এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ছিল। সেখানে অন্য প্রতিযোগীদের দেখে নিতে পারতাম। কিন্তু করোনার জন্যে সব বন্ধ হয়ে গেল। জীবনে এরকম অবস্থায় পড়িনি।’’ অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাওয়ায় আপনিও কি পিছিয়ে গেলেন। ইম্ফলের প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়ের গলায় ফের জেদ ফেরে। বললেন, ‘‘এখন মনে হচ্ছে ভালই হয়েছে। আরও বেশি করে তৈরি হয়ে নামব। সোনা নিশ্চিত করা দরকার। তবে জানি না, কবে অনুশীলনে নামতে পারব।’’ কয়েক মাস আগেই কলকাতায় এসে রেকর্ড গড়ে সোনা জিতেছিলেন। চানু দাবি করলেন, আরও উন্নতি করেছেন। স্ন্যাচ এবং ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলিয়ে ২১০ কেজি তুলছেন। ‘‘কোচ স্যর বলেছেন যে করেই হোক নিজের ওজন এবং শারীরিক সক্ষমতা ঠিক রাখতে। সেটাই করছি।’’ কিন্তু ভারোত্তোলকদের ওজন ঠিক রাখতে গেলে তো প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়াটা জরুরি। সেটা তো পাচ্ছেন না? ‘‘কিছু করার নেই। করোনা মোকাবিলায় এটা মেনে নিতেই হবে।’’ বলার পাশাপাশি মন্তব্য, ‘‘বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। গ্রামের মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে ভাল হত। সবাই খুব দরিদ্র। তবে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি বাড়ির সঙ্গে।’’
সাইয়ের নির্দেশে ঘরবন্দি চানু-সহ শিবিরে থাকা সব অ্যাথলিটই। দু’বেলা খাওয়ার জন্য ডাইনিং হলে যাওয়া ছাড়া ঘরেই থাকছেন। সেখানে দু’বেলা অনুশীলন চলছে। বাকি সময় টিভি দেখা আর গান শোনা। জিমে না যেতে পেরে হাঁফিয়ে উঠছেন। বলেও ফেললেন, ‘‘কবে লকডাউন উঠবে কে জানে!’’