তানিয়া জ়েং। ছবি: এক্স (টুইটার)।
বয়স ৫৮। খেলোয়াড়েরা অনেক আগেই অবসর নিয়ে নেন। সাধারণ মানুষও এই বয়সে চলে আসেন অবসর জীবনের দোরগোড়ায়। অথচ চিলির টেবল টেনিস খেলোয়াড় তানিয়া জ়েংয়ের অলিম্পিক্স অভিষেক হল ৫৮ বছর বয়সে। প্যারিসে নিজের প্রথম অলিম্পিক্স খেলছেন তিনি। গেমস ভিলেজে তাঁকে নিয়ে চলছে আলোচনা।
তানিয়া আদতে চিনের খেলোয়াড়। ১৯৮৯ সালে তিনি দেশ ছাড়েন। তখন বয়স ছিল ২৩। চলে যান দক্ষিণ আমেরিকার চিলিতে। সেখানে টেবল টেনিস কোচের চাকরি নিয়ে যান। পাশাপাশি নিজের খেলাও চালিয়ে গিয়েছেন। পরে অবসর নেন খেলা থেকে। চিলিতে বিয়ের পর শুরু করেন ব্যবসা। বিবাহ সূত্রে নাম পরিবর্তন হয়ে তানিয়া হয়। তবে টেবল টেনিস থেকে দূরে থাকেননি কখনও। পরিবার, ব্যবসা সামলানোর পাশাপাশি কোচিংও করাতেন। সেই সূত্রে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল প্রিয় খেলার সঙ্গে।
কোভিডের সময় তানিয়ার আবার ইচ্ছা হয় খেলা শুরু করার। যেমন ভাবা তেমন কাজ। অবসর ভেঙে কোর্টে ফেরেন। পেশাদার খেলোয়াড় হিসাবে নতুন করে শুরু করেন। চেষ্টার ফল পেয়েছেন গত বছর। স্যান্টিয়াগোতে আয়োজিত প্যান আমেরিকান গেমসে ব্রোঞ্জ জেতেন মহিলাদের সিঙ্গলসে। আত্মবিশ্বাস ফিরে পান ৫৭ বছরের তানিয়া। বুঝতে পারেন, চাইলে এখনও কয়েক বছর আন্তর্জাতিক পর্যায় খেলতে পারেন।
আর পিছনে তাকাননি। তানিয়া বলেছেন, ‘‘কখনও ভাবিনি অলিম্পিক্স খেলব। ভাবার মতো বয়সও ছিল না। নিজের আনন্দের জন্য আবার খেলতে শুরু করেছিলাম। জিততে শুরু করার পর উৎসাহ বেড়ে যায়। আরও ম্যাচ জেতার নেশা পেয়ে বসে আমাকে। তার পরও ভাবিনি অলিম্পিক্স খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারব। এই বয়সে স্বপ্নপূরণ হওয়ার আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না। নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না।’’
অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটিয়েছেন তানিয়া। ৫৮ বছর বয়সে কেউ প্রথম অলিম্পিক্স খেলছেন, অবিশ্বাস্যই বটে। তানিয়া বলেছেন, ‘‘আমি এখন মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ চিলির। চিলিতে সকলে আমাকে চেনেন। সবাই আমায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব।’’
অলিম্পিক্সে পদক জেতার আশা করছেন না তানিয়া। তাঁর লক্ষ্য চোট বাঁচিয়ে খেলা এবং যত দূর সম্ভব যাওয়া। কারণ চোটের জন্য ছিটকে যেতে হলে তা হবে অত্যন্ত হতাশার।