চেলসিকে থামানোর মতো টিম দেখছি না

চেলসিকে নিয়ে বরাবর একটা কথা আমি শুনে এসেছি। বিশ্বের বাকি বড় বড় ক্লাবের মতো চেলসির খেলার নির্দিষ্ট একটা স্টাইল আছে। খারাপ ট্যাকল করে। বলের পজেশন বেশি রাখতে পারে না। যে স্টাইলকে সবাই বলে থাকে ‘ডার্টি ফুটবল।’

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩০
Share:

গোল করে আপ্লুত হ্যাজার্ড (বাঁ দিকে) মোজেসকে নিয়ে। -রয়টার্স

চেলসি ৩ (আলোন্সো, হ্যাজার্ড, ফাব্রেগাস) : আর্সেনাল ১ (জিরুঁ)

Advertisement

চেলসিকে নিয়ে বরাবর একটা কথা আমি শুনে এসেছি। বিশ্বের বাকি বড় বড় ক্লাবের মতো চেলসির খেলার নির্দিষ্ট একটা স্টাইল আছে।

খারাপ ট্যাকল করে। বলের পজেশন বেশি রাখতে পারে না। যে স্টাইলকে সবাই বলে থাকে ‘ডার্টি ফুটবল।’

Advertisement

এক দিক থেকে ঠিক। চেলসির খেলার স্টাইলে সেই ব্রিটিশ ফুটবলের ছাপ। ফিজিক্যাল বেশি। সৌন্দর্য কম। কিন্তু দিনের শেষে ওরা ঠিক রেজাল্ট করে বেরিয়ে যায়।

শনিবারের ম্যাচটাও তাই ছিল। আর্সেনালকে শারীরিক ফুটবলে টেক্কা দিয়ে গেল চেলসি। বল কম ধরে। কড়া ট্যাকল করে। এক প্রকার ‘বুলি’ করে তিন পয়েন্ট পেল। তবে এটাকে আমি ডার্টি ফুটবল বলব না। আসলে ডার্টি ফুটবল বলে কিছু হয় না। বিশ্বের কোনও কোচ বলে না, যাও তোমরা লাথি, ঘুষি মেরে খেলো। বিপক্ষ বল পেলেই লাথি চালাও।

চেলসির এই স্টাইলটা বরং প্ল্যানিংয়ের বাইরে খেলা।

মোরিনহো, কন্তের মতো কোচেরা সব সময় পরীক্ষানিরীক্ষা করতে ভালবাসেন। প্ল্যানিং অনুযায়ী আজ চেলসি নেমেছিল ৩-৪-৩ ফর্মেশনে। অর্থাৎ দুটো উইংব্যাক ধার দিয়ে সাপোর্ট দেবে। উপরে একজন লোন স্ট্রাইকার থাকবে। পাশে দুটো উইঙ্গার। মাঝমাঠে সব সময় একস্ট্রা একটা সাপোর্ট। কিন্তু এটা তো গেল স্বাভাবিক ছক।

চেলসি তো এ রকম ফ্লুই়ড ফর্মেশনেও বল বেশি ধরছিল না। আর্সেনালকে সুযোগ দিচ্ছিল খেলার। উইং ব্যাকরা বারবার মাঝমাঠে এসে লোক বাড়াচ্ছিল। দিয়েগো কোস্তা উপরে না বসে থেকে নীচে নেমে আর্সেনাল মুভ শেষ করছিল। এটাই তো প্ল্যানিংয়ের বাইরে খেলা। কিক অ্যান্ড রান যাকে বলে। ৩-৪-৩ নিয়ে নেমেও তার বাইরে গিয়ে ভাবনাচিন্তা করা। এটা তো এখনকার কোচেদের ট্রেডমার্ক। বিভিন্ন ফর্মেশনের মধ্যেও আলাদা প্ল্যানিং করা।

শনিবার চেলসির সেই প্ল্যানিংটা পুরোপুরি কার্যকর হল। আজপিলিকুয়েটা, কাঁতেরা কড়া ট্যাকল করছিল। প্রেসিং ফুটবল খেলছিল। দু’তিনটে টাচে একটা মুভ শেষ করার চেষ্টায় ছিল। কাউন্টার নির্ভর খেলছিল। বল কম ধরেও ফরোয়ার্ডদের ট্র্যাক ব্যাক করা। তা বলে সেটা তো আর ‘ডার্টি ফুটবল’ না।

চেলসির এই জয়ের পিছনে অন্যতম কারণ ছিল আর্সেনাল ডিফেন্স। আমি অবাক হয়ে যাই যে ক্লাব ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের জন্য লড়াই করে তারা কী করে কসিয়েলনি-মুস্তাফির মতো সাধারণ ব্যাকলাইনের উপর ভরসা রাখে। চেলসির তিনটে গোলই তো বিপক্ষ ডিফেন্সের দেওয়া উপহার। মার্কোস আলোন্সো যেমন অনায়াসে হেডে গোল করে চলে গেল। হ্যাজার্ডের সোলো রানে প্রতিটা আর্সেনাল প্লেয়ার জায়গা করে দিল। আবার তৃতীয়টা পের চেকের ক্লিয়ারেন্সে। তা ছাড়াও কোনও সময় মনে হয়নি আর্সেনালের ম্যাচের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল।

চেলসি জিতেছে ঠিকই। কিন্তু এখনই আমি বলতে পারছি না চেলসি চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে। কারণ এই লিগের নাম প্রিমিয়ার লিগ। তবে এটা বলা যায় নিজেদের ভুলে না হারলে অন্তত চেলসিকে থামানোর মতো টিম দেখছি না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement