ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি চলতি বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতে কোথাও ভারতের সামনে পড়তে পছন্দ করত তা হলে সেটা ওয়াংখেড়ে। আর সেটাই হচ্ছে সেমিফাইনালে। এখনও অবধি টিপিক্যাল ব্যাটিং স্ট্রিপ দেখা গিয়েছে ওখানে। ছোট বাউন্ডারি। ক্রিস গেইল-সহ ক্যারিবিয়ান দলে এত বিগ হিটার যে দু’-তিন জন ক্রিজে জমে গেলেই দু’শো প্লাস ইনিংস প্রায় নিশ্চিত। তবে আসল লোক নিঃসন্দেহে গেইল। তো এই দানবীয় বিগ হিটার ওপেনারের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারের ম্যাচে ভারতীয় বোলারদের স্ট্র্যাটেজি কী হতে পারে। লাইন অব অ্যাটাক কী হওয়া উচিত। খোঁজার চেষ্টা করা যাক...।
গেইল বনাম নেহরা
নতুন বলে প্রথম এক-দু’ওভার নেহরা ভাল সুইং করায়। তাই একটু ঝুঁকি নিয়েও ওর উচিত গেইলকে প্রথম দিকে উপরে-উপরে বল করা। সাধারণত পেসাররা গেইলকে ফুল লেংথে বল করতে চায় না। কারণ গেইলের সোজা লফ্টে়ড শট মারার ক্ষমতা দুর্দান্ত। মিড অফ-মিড অন দিয়ে উড়িয়ে দেয়। কিন্তু সেই ঝুঁকিটা নেহরাকে নিতে হবে যেহেতু ও ভাল সুইংও করায় আর গেইল যা মারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মারে। আর কে না জানে আপনি বিশ্বের যত বড় ব্যাটই হোন, ক্রিজে শুরুর দিকে সামান্য নড়বড়ে থাকবেন। তাই ওই সময়টায় গেইলকে ওর পছন্দের লাইনে, অফ-অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে বল করে ওকে প্রলুব্ধ করা উচিত। যাতে ও ড্রাইভটা করে। তাতে একটু ঝুঁকি থাকলেও ক্ষতি কী! বরং গেইলের উইকেটটা পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। আর সেটা না হলে? তখন নেহরা ওর বাকি দু’ওভার ব্যাক অব দ্য লেংথ করুক। গেইলকে যতটা সম্ভব ক্রিজে থামিয়ে রাখতে।
গেইল বনাম বুমরাহ
গেইলের বিরুদ্ধে গ্রুপ ম্যাচে ইংল্যান্ড বোলাররা যে ভুলটা করেছিল সেটা ভারতীয় বোলিং লাইন আপ যেন না করে। মানে, গেইলকে ক্রিজে বেঁধে রাখার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে যেন মাঠে না নামে ধোনির দল। বরং স্ট্র্যাটেজি হোক, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ক্রিজ থেকে গেইল হটাও। আর তার জন্য ওকে গোড়া থেকে অ্যাটাক করা দরকার। গেইল, যে কি না পা না নড়িয়ে, স্রেফ ক্রিজে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলে-বলে চার-ছক্কা মেরে যেতে পারে, তাকে ক্রিজে আটকে রাখব ভাবলে সেটা বোলারের বড় ভুল হবে। তাই নেহরার মতো হাতে সুইং না থাকায় বুমরাহের উচিত হবে, ওর ডেলিভারি যে স্বাভাবিক কোণ তৈরি করে সেটা করে চলা। যে বলগুলো বাঁ-হাতি গেইলের শরীরের আরও আড়াআড়ি ঢুকবে। তাতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলতে অভ্যস্ত গেইল হিট নিতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ তুলতে পারে। আর বুমরাহর চমকপ্রদ ইয়র্কার তো আছেই। যা ইনিংসের গোড়ার দিকে নড়বড়ে থাকা গেইলের পা উইকেটের সামনে যেমন পেয়ে যেতে পারে, তেমনই ব্যাটসম্যানের স্টাম্পও ছিটকে দিতে পারে।
গেইল বনাম অশ্বিন
গেইলকে ওয়াংখেড়েতে ইনিংসের শুরুতে স্ট্রাইকিং এন্ডে দেখলে আইপিএলের মতোই প্রথম ওভারটা অশ্বিনকে দিতে পারে ধোনি। নইলে মনে হয়, সেমিফাইনালে চার থেকে ছয় ওভারের মধ্যে অশ্বিনকে আক্রমণে দেখব। অশ্বিনের অফ স্পিনে অনেক বৈচিত্র। তবে ওর যে স্লাই়ড ডেলিভারিটা আছে, যেটা বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের ভেতরের দিকে আসে, সেটা প্রথম দিকের ওভারে করা উচিত। গেইল কিন্তু ভিতরে আসা বলও তুলে মারার চেষ্টা করে। তাতে ক্যাচ আউট হওয়ার পাশাপাশি গেইলকে বোল্ড করারও একটা সুযোগ থাকে।