US Open 2024

সিনারের কাঁটা চোট, স্বপ্নপূরণে মরিয়া ফ্রিৎজ়, মুখোমুখি দুই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনালিস্ট

ফাইনালের আগে আবার সিনারের কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে কব্জির চোট। দ্বিতীয় সেটের মাঝামাঝি ড্রেপারের একটা শট তাড়া করতে গিয়ে বেসলাইনের কাছে পড়ে যান সিনার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:০১
Share:

দুই-মেরু: সেমিফাইনাল চলার মধ্যেই যন্ত্রণায় কাতর সিনারের শুশ্রুষা চলছে। (ডান দিকে) জয়ের পথে হুঙ্কার ফিৎজ়-এর। শুক্রবার নিউ ইয়র্কে। ছবি: রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে উঠলেন ইয়ানিক সিনার। বিশ্বের এক নম্বর ইটালির তারকা এই প্রথম নিউ ইয়র্কে চূড়ান্ত পর্বে উঠলেন। জিতলেন ৭-৫, ৭-৫, ৬-২ ফলে। টানা ১৫টি ম্যাচ জিতে শেষ চারে উঠেছিলেন ব্রিটিশ তারকা জ্যাক ড্রেপার। কিন্তু কোর্টে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বমিও করেন। তার পরেও লড়াই চালিয়ে যান। কিন্তু শেষমেশ হার মানেন ব্রিটিশ তারকা।

Advertisement

অসুস্থ হলেও সিনারকে সহজে ম্যাচ ছেড়ে দেননি ড্রেপার। প্রথম দু’টি সেটে লড়াই চালিয়ে যান তিনি। দ্বিতীয় সেটে টাইব্রেকারে গিয়ে হারেন। অসুস্থ ড্রেপারকে হারাতেও সিনারের লাগে তিন ঘণ্টা তিন মিনিট। তবে তৃতীয় সেটে ড্রেপারকে দাঁড়াতে দেননি সিনার। ম্যাচ শেষে তিনি ড্রেপারের প্রশংসাও করেন। সিনার বলেন, “আমরা দু’জনে একে অপরের বিরুদ্ধে নিজেদের সেরাটা দিচ্ছিলাম। আমরা ভাল বন্ধু। মানসিক ভাবে আমি নিজেকে স্থির রাখার চেষ্টা করছিলাম। ওকে হারানো সত্যি কঠিন। আমাদের দু’জনকেই সমান ভাবে সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ। ফাইনালে উঠে ভাল লাগছে।” ইটালির প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে উঠলেন সিনার।

অন্য সেমিফাইনালে জিতলেন টেলর ফ্রিৎজ়। তিনি হারিয়ে দিলেন ফ্রান্সেস টাইফোকে। পাঁচ সেটের লড়াই শেষে ফ্রিৎজ় জিতলেন ৪-৬, ৭-৫, ৪-৬, ৬-৪, ৬-১ ফলে। অ্যান্ডি রডিকের পরে প্রথম আমেরিকান হিসেবে গ্র্যান্ড স্ল্যামে পুরুষদের সিঙ্গলসে ফাইনালে উঠলেন তিনি। ২০০৯ সালে রডিক উইম্বলডনের ফাইনালে খেলেছিলেন। আমেরিকার পুরুষদের মধ্যে তিনিই শেষ টেনিস খেলোয়াড়, যিনি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন ২০০৩ সালে। ফ্রিৎজ় এই মুহূর্তে বিশ্বের ১২ নম্বর। তাঁর সামনে আমেরিকার ২১ বছরের গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফির অপেক্ষা মেটানোর পরীক্ষা। ফাইনালে উঠে তিনি বলেছেন, “নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলাম। জিততে না পারলে সারা জীবন আফসোস করতাম। ফাইনালেও আমি এই ভাবেই খেলতে চাই।”

Advertisement

ফাইনালের আগে আবার সিনারের কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে কব্জির চোট। দ্বিতীয় সেটের মাঝামাঝি ড্রেপারের একটা শট তাড়া করতে গিয়ে বেসলাইনের কাছে পড়ে যান সিনার। দুরন্ত ভাবে সেই পয়েন্ট দখল করলেও বাঁ-হাতের কব্জি ধরে কিছুক্ষণ যন্ত্রণা সামলানোর চেষ্টা করেন তিনি। মেডিক্যাল টাইম আউটও নিতে হয়। যদিও তিনি চোট নিয়ে খুব একটা ভাবতে রাজি নন। ম্যাচের পরে সাং‌বাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘‘দেখা যাক চোটের অবস্থা কী দাঁড়ায়। আশা করি এটা নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ থাকবে না ফাইনালে। যদি বড় কিছু হত, তা হলে বুঝতে পারতাম।’’

সিনারের ফাইনালের প্রতিপক্ষ ফ্রিৎজ় এর আগে চার বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। মুখোমুখি লড়াইয়ে দু’জনই একটি করে জয় পেয়েছেন। তবে ফ্রিৎজ়ের সুবিধে হল ২৩ হাজার আসনসংখ্যার আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামের দর্শকদের বেশির ভাগেরই সমর্থন নিশ্চিত ভাবে তাঁর দিকে থাকবে। গ্র্যান্ড স্ল্যামে আমেরিকানদের ট্রফি জয়ের আশা নিয়ে ফ্রিৎজ় বলেছেন, ‘‘এই প্রজন্মের খেলোয়াড়দের মধ্যে আমরা চার-পাঁচ জন সর্বোচ্চ পর্যায়ে লড়াই করে যাচ্ছি। আমার মনে হয় এতে স্পষ্ট আমরা ফের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের দরজায় কড়া নাড়ছি।’’ ফ্রিৎজ় ছাড়াও বিশ্বের প্রথম ২০ জনের তালিকায় এই মুহূর্তে আছেন আমেরিকার টাইফো, টমি পল, সেবাস্তিয়ান কোর্দা ও বেন শেল্টন। সঙ্গে ফ্রিৎজ় আরও বলেন, ‘‘আমরা যে ঠিক পথেই এগোচ্ছি তা বোঝা যাচ্ছে। যেই প্রথম সাফল্য পাক না কেন বাকিরা সেই পথ অনুসরণ করবে। সেই সাফল্য অন্যদের বিশ্বাস যোগাবে।’’ গোটা আমেরিকার চোখ থাকবে রবিবার আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ফ্রিৎজ় এর উপরে। যাঁকে সিনারের মতো প্রতিপক্ষকে হারাতে হলে সার্ভ আর বেসলাইন থেকে শক্তিশালী শটের দিকে নির্ভর করতে হবে।

সিনার অবশ্য জানেন রবিবার লড়াইটা কতটা কঠিন। তাই বলেছেন, ‘‘ফাইনালে খুব স্বাভাবিক ভাবেই ওর দিকে সমর্থন বেশি থাকবে। ইটালিতে ম্যাচটা হলে উল্টোটা হত। তাই এটা মেনে নিতেই হবে। তবে আমার টিম থাকবে। আমাকে সমর্থন করার জন্য কিছু মানুষ থাকবেন। যাঁরা আমার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি। মনে মনে জানব ইটালি থেকে অনেকেই ম্যাচটা দেখবেন আর আময় সমর্থন করবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement