বাংলা সিনিয়র ক্রিকেট দলে বিট্টু, গর্বিত জেলা

এমনই অলরাউন্ডার ক্রিকেটার সুমন্ত গুপ্ত, রামপুরহাটের আদরের বিট্টু মঙ্গলবার বাংলা ক্রিকেটের সিনিয়র দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:১২
Share:

প্রতিভা: সুমন্ত গুপ্ত। নিজস্ব চিত্র

মনোজ তিওয়ারি, সুদীপ চট্টোপাধ্যায়দের মতো বাংলার সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলছেন রামপুরহাটের সুমন্ত গুপ্ত। এক প্রান্তে অশোক দিন্দা যখন ফাস্ট বোলিংয়ে ঝড় তুলছেন, সঙ্গী হিসেবে অন্য প্রান্ত থেকে সুমন্ত তখন লেগ স্পিন বলের জাদুতে একের পর এক উইকেট তুলছেন। পয়েন্ট-এ ফিল্ডিংয়ের সময়েও সুমন্ত ক়ড়া পাহারাদার। সেই এলাকা দিয়ে কম গলে বল।

Advertisement

এমনই অলরাউন্ডার ক্রিকেটার সুমন্ত গুপ্ত, রামপুরহাটের আদরের বিট্টু মঙ্গলবার বাংলা ক্রিকেটের সিনিয়র দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। সিএবি আগামী ৮–১৬ জানুয়ারি রাঁচিতে অনুষ্ঠিত সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি ক্রিকেট লিগ প্রতিযোগিতায় বাংলা দলের ক্রিকেটারদের নাম ঘোষণা করে। সেই দলের ক্যাপ্টেন হয়েছেন মনোজ তিওয়ারি। ঘোষিত ১৬ জন ক্রিকেটারদের তালিকায় রামপুরহাটের সুমন্তও আছেন।

আট বছর বয়সে বাবার হাত ধরে বিট্টু রামপুরহাট গাঁধী স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলতে যেত। খেলত ফুটবলও। কিন্তু, ক্রিকেট খেলার প্রতি ছেলের ঝোঁক দেখে বাবা অনিল গুপ্ত ছেলেকে ক্রিকেটের ব্যাট ধরা থেকে বলের গ্রিপিংয়ের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। শুরু থেকেই রামপুরহাট মহকুমার ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তা থেকে সদস্যেরা, বিট্টুর স্কুল জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের বিভাস স্যার, প্রধান শিক্ষক গৌর ঘোষেরা খেলায় উৎসাহ দিতে থাকেন। ২০০২ সালে ১১ বছর বয়সের বিট্টু অনূর্ধ্ব ১৪ বাংলা দলে লেগ স্পিন বোলার হিসেবে খেলার সুযোগ পায়। এক বছর পরে ব্যাটসম্যান, ফিল্ডার এবং লেগ স্পিন বোলার হিসেবে অনূর্ধ্ব ১৬ বাংলা দলে এবং তারও পরে অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দলে সুযোগ পায় বিট্টু।

Advertisement

বিট্টুর বাবা, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মী অনিল গুপ্ত জানান, ২০০৮ সালে কলকাতার ভিক্টোরিয়া ক্লাবে প্রথম কলকাতা ক্রিকেট লিগ খেলা শুরু করে ছেলে। অনুশীলনের জন্য রামপুরহাট থেকে নিয়ম করে সময়ে প্রতিদিন মাঠে পৌঁছনো খুব মুশকিল ছিল। এ জন্য ঠান্ডার দিনেও ভিক্টোরিয়া টেন্টে রাত কাটিয়ে অনুশীলন করতে হয়েছে ওকে। এরই মধ্যে ২০০৯–১০ সালে ওয়াইএমসিএ, ২০১১ সালে ইস্টার্ন রেল, ২০১২ সালে আবার ওয়াইএমসিএ দলের হয়ে খেলার পরে ২০১৩–১৫ টানা তিন বছর ইস্টবেঙ্গল দলের হয়ে খেলে বিট্টু। সেই সময়েই ক্রিকেটার প্রণব নন্দীর নজরে পড়ে যান বিট্টু। ২০১৬ সালে বড়িষা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলার পর ২০১৭ সালে কালিঘাট দলে খেলার সময় বর্তমান ক্রিকেট লিগে বিট্টুর খেলা আবার বাংলা ক্রিকেট দলের নির্বাচকদের নজর কাড়ে।

সম্প্রতি কলকাতা ক্রিকেট লিগে চারটি ম্যাচের মধ্যে খিদিরপুরের বিরুদ্ধে কালিঘাট দলের হয়ে ৫৫ রান এবং দুটি উইকেট নেন সুমন্ত। কাস্টমসের বিরুদ্ধে ১০৬ রান করে ম্যন অফ দি ম্যাচ হন। পরে টালিগঞ্জের বিরুদ্ধে ৬৫ রান করেন সুমন্ত। সাফল্য এসেছে আরও। সাম্প্রতিকতম সাফল্য হল বাংলা সিনিয়র দলে সুযোগ।

এই খবর জানাজানি হতেই খুশির হাওয়া বইছে রামপুরহাট শহরে। মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল। আগামী দিনে এ ভাবেই অনেকে খেলার প্রতি আগ্রহ এগিয়ে আসুক, এটাই চাইব।’’ বীরভূম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহকারী সভাপতি তথা সিএবি-র সদস্য সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সুমন্ত যথেষ্ট প্রতিভাবান এবং প্রতিশ্রুতিময়। অনেক আগেই ওর সুযোগ পাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করি।’’ সিনিয়র দলে সুযোগ পাওয়ায় খুশি সুমন্তর বন্ধু ওয়াসিম আলি ভিক্টর থেকে প্রাক্তন ক্রিকেটার দিব্যেন্দু সরকার (বিলে), এহেসান হাবিব (হাসান)-সহ সারা জেলার ক্রিকেট অনুরাগীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement