আত্মবিশ্বাসী: ডিভিলিয়ার্সদের জন্য তৈরি হচ্ছেন ভুবি। —ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ আফ্রিকার শক্ত, বাউন্সি পিচ পেসারদের হয়তো সাহায্য করবে। কিন্তু পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজে বল করার সময় একটা চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে পেসারদের। সেটা হল, লাল কুকাবুরা বলে বল করা। এমনটাই মনে করছেন ভারতের অন্যতম পেস অস্ত্র ভুবনেশ্বর কুমার।
রবিবার, ২০১৭ সালের শেষ দিনে কেপ টাউনে বৃষ্টির জন্য মাঠে প্র্যাক্টিস করা হল না ভারতীয় দলের। তার বদলে ইন্ডোরে নেট করতে নেমে পড়লেন রোহিত শর্মা, চেতেশ্বর পূজারা, ঋদ্ধিমান সাহা-রা। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভুবনেশ্বর বলেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলতে এলেই সবার আগে যা নিয়ে আলোচনা করা হয়, সেটা হল, বাউন্সি উইকেট। কিন্তু সব ম্যাচে আমরা যে সে রকম পিচ পাব, তার
নিশ্চয়তা কী?’’
যে সব পিচে বাউন্স থাকবে, সেটা সামলানো ব্যাটসম্যানদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে, মানছেন ভুবনেশ্বর। কিন্তু পাশাপাশি এটাও বুঝিয়ে দিচ্ছেন, প্রতিটা টেস্টে বোলারদের কিন্তু একটা চ্যালেঞ্জ সামলাতেই হবে— লাল কুকাবুরা বল। ‘‘ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে বাউন্সটা একটা পরীক্ষা মানছি। কিন্তু সেটা সব পিচে নাও থাকতে পারে। কিন্তু সবাই মনে রাখে না যে বোলারদের জন্যও একটা চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করে থাকে।’’ সেটা কী, তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন ভুবি, ‘‘কুকাবুরা বলে বল করাটা সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার। ২৫-৩০ ওভার পরে বল খুব একটা মুভ করে না। এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য আমরা এখন তৈরি হচ্ছি। আশা করছি সামলে নিতে পারব।’’
ভুবনেশ্বর জানাচ্ছেন, এখনও তাঁরা নির্দিষ্ট স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ভাবতে বসেননি। তবে নজর দিচ্ছেন লম্বা স্পেলে বল করার ওপর। ‘‘এখনও আলাদা স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে বসিনি। আমাদের ফোকাস এখন ক্রিকেটের মূল ব্যাপারগুলো ঠিক ঠিক করতে পারার ওপর। টেস্ট ম্যাচের দিন দু’য়েক আগে আমরা প্রত্যেক ব্যাটসম্যানকে নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে বসব। তখন দেখা যাবে কী হয়,’’ বলেছেন ভারতীয় দলের এই পেসার।
দক্ষিণ আফ্রিকায় পা দেওয়ার পরে নিউল্যান্ডসে রবিবার ভারতের দ্বিতীয় দিনের প্র্যাক্টিস ছিল। যা হল ইন্ডোরে। ভুবনেশ্বর বলছেন, ‘‘গত কাল আমরা দু’টো সেশনে প্র্যাক্টিস করেছি টেস্টে ফোকাস ফিরিয়ে আনার জন্য। টেস্টে দিনে ছ’ঘণ্টা খেলতে হবে আপনাকে। সে ব্যাপারটা মাথায় রেখে আমরা লম্বা লম্বা স্পেলে বল করছি। আমরা চেয়েছিলাম যত বেশি সম্ভব নেটে বল করতে।’’
এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরতে পারেনি ভারত। এ বার কী হতে পারে? ভুবনেশ্বর মনে করেন, যে ফর্মে খেলছে দল, তাতে অবশ্যই টেস্ট সিরিজ জেতা সম্ভব। ‘‘আমরা সবাই আত্মবিশ্বাসী। আমরা জানি এ বার টেস্ট সিরিজ জিতে ফেরার একটা ভাল সম্ভাবনা আছে। কিন্তু পাশাপাশি এটাও জানি, সেটা করতে গেলে আমাদের সেরাটা দিতে হবে। আমরা গত দু’বার এখানে ভালই করেছি। এ বারও আশা করছি, ভাল করতে পারব।’’
ভুবনেশ্বর আরও মনে করেন, তাঁদের বোলিং আক্রমণে যে বৈচিত্র আছে তা অনেক ভাবেই দলকে সাহায্য করে। যেমন বোলাররা একে অন্যের থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন। ভুবনেশ্বরের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলের বোলারদের মধ্যে অনেক বৈচিত্র আছে। তাই আমরা একে অন্যের থেকে শিখতে পারি। যেমন উমেশ, শামি বা ইশান্তের কাছে আমি রিভার্স সুইং নিয়ে প্রশ্ন করতে পারি। আবার আমার থেকে ওরা সুইংয়ের ব্যাপারে পরামর্শ নিতে পারে।’’
দক্ষিণ আফ্রিকার পিচে বল করা প্রসঙ্গে ভুবনেশ্বর বলেছেন, ‘‘এখানে এসে সবচেয়ে যে বড় পরিবর্তনটা দেখব, সেটা হল বাউন্স। খুব যে সুইং হবে, এমনটা বলব না। কিন্তু বাউন্সটা পাওয়া যাবে বলে মনে হয়। আর প্রত্যেক ফাস্ট বোলারই পিচে বাউন্সটা খুব উপভোগ করে।’’
ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা দলে ফিরিয়ে এনেছে এ বি ডিভিলিয়ার্সকে। বিপক্ষের ব্যাটিং শক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভুবনেশ্বর বলছেন, ‘‘আমরা কোনও বিশেষ এক জন ব্যাটসম্যানের ওপর জোর দিচ্ছি না। যে কেউ ভাল খেলে দিতে পারে। ওদের সবাই ভাল ফর্মে আছে। ব্যাপারটা নির্ভর করবে, আমাদের বোলাররা কেমন বল করতে পারে ওদের ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে।’’