ম্যাচের আগেই পিচ নিয়ে ক্ষুব্ধ বাংলা শিবির

ঘূর্ণি পিচে প্রস্তুত হয়ে নামার জন্য শুক্রবার প্র্যাক্টিস পিচে ক্ষত তৈরি করে অনুশীলন করেছিলেন বাংলার ব্যাটসম্যানেরা। কিন্তু ম্যাচের আগের দিন পিচ দেখে অধিনায়কের পাশাপাশি  মেন্টর অরুণ লালেরও মনে হয়েছে, এই পিচে তিন স্পিনার নিয়ে নামার যুক্তি নেই।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২৬
Share:

সৌজন্য: বাংলা বনাম দিল্লি ম্যাচের আগের দিন ইডেনে দুই অধিনায়ক মনোজ ও নীতীশ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

দু’দলেরই প্রয়োজন ছয় পয়েন্ট। না হলে কোয়ার্টার ফাইনালের রাস্তা থেকে অনেকটাই সরে যাবে বাংলা ও দিল্লি। ছয় ম্যাচ খেলে বাংলার পয়েন্ট ১৬। সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে ১৩ পয়েন্ট দিল্লির। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ইডেনে ঘূর্ণি পিচ চেয়েছিল বাংলা শিবির। যেখানে তিন স্পিনার নিয়ে নামতে পারবে দল। খেলতে পারবে প্রয়াস রায়বর্মণ। কিন্তু শনিবার ম্যাচের আগের দিন ইডেনের পিচ দেখে হতাশ বাংলা শিবির। অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি তো বলেই দিচ্ছেন, যে রকম পিচ চাওয়া হয়েছিল, সে রকম পাওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

ঘূর্ণি পিচে প্রস্তুত হয়ে নামার জন্য শুক্রবার প্র্যাক্টিস পিচে ক্ষত তৈরি করে অনুশীলন করেছিলেন বাংলার ব্যাটসম্যানেরা। কিন্তু ম্যাচের আগের দিন পিচ দেখে অধিনায়কের পাশাপাশি মেন্টর অরুণ লালেরও মনে হয়েছে, এই পিচে তিন স্পিনার নিয়ে নামার যুক্তি নেই। ফলত দুই স্পিনার নিয়েই নামার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলা শিবিরের।

অনুশীলন শেষে মনোজ বলেন, ‘‘ঘূর্ণি পিচের কথা মাথায় রেখেই দলগঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এই পিচ দেখে মনে হচ্ছে, একটা দিকে বল ঘুরলেও অন্য দিকে সাহায্য পাবে পেসারেরা। যে রকম ‘টার্নিং ট্র্যাক’ আমরা চেয়েছিলাম, দেখে মনে হয় না সে রকম পিচ পাব। কিন্তু এখন আর কিছু করার নেই। এই পিচ থেকেই আমাদের ছয় পয়েন্ট তুলতে হবে।’’

Advertisement

ইডেনের বাইশ গজ সম্ভবত মনঃপুত হয়নি দলের মেন্টরেরও। বাংলার অনুশীলন চলাকালীনই স্থানীয় পিচ প্রস্তুতকারক সুজন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন অরুণ ও কোচ সাইরাজ বাহুতুলে। পরে অরুণ বলেন, ‘‘এটা ছয় পয়েন্টের পিচ নয়। একেবারে ব্যাটিং পিচ। দুই স্পিনারের বেশি খেলানোর কোনও যুক্তিই নেই।’’

অথচ স্থানীয় পিচ প্রস্তুতকারক সুজন মুখোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, বাংলার চাহিদা মতোই পিচ একেবারে শুষ্ক তৈরি করা হয়েছে। সুজন বলেন, ‘‘প্রথমত পিচের দায়িত্ব আমার নয়। ভারতীয় বোর্ড অনুমোদিত পিচ প্রস্তুতকারক এই পিচ বানিয়েছেন। ঠিক যেমন বাংলা চেয়েছে, তেমনই পিচ বানানো হয়েছে। আসলে গত দু’বছর ধরে ইডেনের পিচে যে মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে, তা দিয়ে সম্পূর্ণ শুষ্ক পিচ বানানো সম্ভব নয়। তবুও বেশ কয়েক দিন পিচে এক ফোঁটা জল না দিয়ে সেটাকে শুষ্ক করে তোলার চেষ্টা হয়েছে। এ বার খেলা হলেই বোঝা যাবে পিচের আসল চরিত্র।’’

রবিবারই রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক হওয়ার কথা ছিল তরুণ লেগস্পিনার প্রয়াস রায়বর্মণের। কিন্তু শনিবারের পিচ দেখে তাঁকে আদৌ খেলানো হবে কি না সে বিষয়ে সন্দেহ থাকছেই। মনোজ যদিও এই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিতে চাননি। কিন্তু অরুণ নিশ্চিত, প্রয়াসকে ছাড়াই প্রথম একাদশ সাজানো হবে। ‘‘এই পিচে প্রয়াসকে খেলানোর মানে নেই,’’ সাফ বার্তা অরুণের। তবে বসানো হতে পারে তরুণ পেসার ঈশান পোড়েলকে। অশোক ডিন্ডা ও মুকেশ কুমারকে খেলানোর সম্ভাবনাই বেশি। দলে ফেরানো হতে পারে অনুষ্টুপ মজুমদারকেও। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তাঁর লেগস্পিনও এই পিচে কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে।

দিল্লি অবশ্য পিচ নিয়ে কিছু চিন্তাই করছে না। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছয় পয়েন্ট। যে কোনও মূল্যে তারা সেটা নিশ্চিত করতে চায়। দলে নীতীশ রানা, হিম্মত সিংহ, ধ্রুব শোরের মতো ব্যাটসম্যানেরা রয়েছেন। বোলিং বিভাগে রয়েছেন নবদীপ সাইনি, কুলবন্ত খেজরোলিয়া। গত বার সেমিফাইনালে এই পেস ব্যাটারির বিরুদ্ধেই আত্মসমর্পণ করেছিল বাংলা। স্পিনার হিসেবে রয়েছেন বিকাশ মিশ্র। গত ম্যাচে পেয়েছেন ১২ উইকেট। এই শক্তির উপর নির্ভর করেই ইডেন থেকে ছয় পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে চাইছেন দলের কোচ মিঠুন মানহাস। তিনি বলেন, ‘‘পিচ কী হবে, তা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। দিল্লি সব সময়ে জেতার জন্যই মাঠে নামে। বাংলার বিরুদ্ধেও তার কোনও ব্যতিক্রম হবে না।’’

আজ রঞ্জি ট্রফিতে বাংলা বনাম দিল্লি। সকাল ৮.৪৫। স্টার স্পোর্টস টু চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement