এ বার বোর্ড বনাম ধোনি

বোর্ডের ঘরের ছেলে কি এ বার বিদ্রোহী? এই প্রশ্নে তোলপাড় দেশের ক্রিকেট মহল। জাডেজা-অ্যান্ডারসন বিতর্কেও ধোনি কার্যত বোর্ডের বিরুদ্ধে গিয়েই নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। এ বার বুঝিয়ে দিলেন রবি শাস্ত্রীকে ডানকান ফ্লেচারের মাথার উপর বসানোর সিদ্ধান্ত মোটেই পছন্দ নয় তাঁর। তাই বোর্ডের একাংশ এ বার এই বিদ্রোহী অধিনায়ককে দমাতে মরিয়া হয়ে উঠল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৮
Share:

বোর্ডের ঘরের ছেলে কি এ বার বিদ্রোহী? এই প্রশ্নে তোলপাড় দেশের ক্রিকেট মহল। জাডেজা-অ্যান্ডারসন বিতর্কেও ধোনি কার্যত বোর্ডের বিরুদ্ধে গিয়েই নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। এ বার বুঝিয়ে দিলেন রবি শাস্ত্রীকে ডানকান ফ্লেচারের মাথার উপর বসানোর সিদ্ধান্ত মোটেই পছন্দ নয় তাঁর। তাই বোর্ডের একাংশ এ বার এই বিদ্রোহী অধিনায়ককে দমাতে মরিয়া হয়ে উঠল।

Advertisement

ডানকান ফ্লেচারই ভারতীয় দলের ‘বস্’ রবিবার ব্রিস্টলে সাংবাদিক বৈঠক থেকে উঠে আসা ভারত অধিনায়কের এই ভাবনার জেরে সোমবার দেশের ক্রিকেট মহলের আবহাওয়া ছিল বেশ ঝোড়ো। বোর্ড প্রশাসনের একাংশ যেখানে ধোনিকে তুলোধনা করার মেজাজে, সেখানে সচিব সঞ্জয় পটেল আবার ক্যাপ্টেনের এই মন্তব্যকে ‘একান্ত ব্যক্তিগত’ বলে বিষয়টিকে হাল্কা করার চেষ্টা শুরু করে দিলেন।

ধোনির কাছে সোমবার ব্রিস্টলে বৃষ্টিতে প্রথম ওয়ান ডে ভেস্তে যাওয়ার চেয়েও খারাপ খবর হয়ে উঠতে পারে দেশে তাঁর সঙ্গে বোর্ডের এই যুদ্ধের আবহ তৈরি হওয়া।

Advertisement

বোর্ডসচিব যেখানে রবি শাস্ত্রীকে টিম ডিরেক্টর ঘোষণা করার দিন বলেছিলেন, “ভারতীয় দল এ বার রবির সন্তান। এখন থেকে ও যা ভাল বুঝবে, করবে”, সেখানে ধোনি ফ্লেচারকেই ‘বস্’ বলছেন। এই নিয়ে সঞ্জয় পটেল এ দিন বলেন, “ধোনির সঙ্গে কথা না বলে এই ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করব না। আমার মনে হয়, এটা ওর একান্ত ব্যক্তিগত মন্তব্য।” কিন্তু বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে এ ভাবে প্রকাশ্যে ব্যক্তিগত মন্তব্য করতে পারেন ভারত অধিনায়ক? এই প্রশ্ন শুনে বোর্ডসচিব বিরক্ত হয়ে বলেন, “এটা তো আলোচনার বিষয়। ধোনির সঙ্গে আগে কথা বলি। তার পর না হয় আপনার এই প্রশ্নের জবাব দেব।”

রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে ধোনি এও বলে দেন যে, আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত ভারতের কোচ থাকবেন ফ্লেচার। সাপোর্ট স্টাফ পরিবর্তন নিয়েও যে তিনি খুশি নন, তার ইঙ্গিতও দেন। প্রথমে জাডেজা-অ্যান্ডারসন বিতর্কে ধোনির অনড় মনোভাব। তার পর তাঁর ফ্লেচার-প্রীতি নিয়ে বোর্ড প্রশাসনে ঝড় ওঠা। ‘ইয়েস ম্যান’ ইমেজ ভেঙে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করছেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক? ঘটনার গতিপ্রকৃতি দেখে এই প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের ক্রিকেট মহলে। বোর্ড ও ক্যাপ্টেনের মধ্যে সঙ্ঘাতের গন্ধ পাচ্ছেন ওয়াকিবহাল অনেকে।

সঞ্জয় পটেল যেখানে বিষয়টিকে লঘু করার চেষ্টা করছেন, সেখানে দিল্লির এক প্রভাবশালী বোর্ড কর্তা এই নিয়ে বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ঝড় তোলার ইঙ্গিত দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, বোর্ডের একাংশ এই নিয়ে একটা হেস্তনেস্ত চায়। ম্যানেজার হিসেবে ভারতীয় দলের একাধিক বিদেশ সফরে যাওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড কর্তা সংবাদসংস্থাকে বলেন, “টিমের বস্ কে, এই নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার নেই ধোনির। পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এই প্রসঙ্গটা উঠবে। ব্যাপারটা নিয়ে সোজাসুজি আলোচনা দরকার। অধিনায়কের অধিকারের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে ও। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই পারে। কিন্তু তার কী জবাব দিতে হবে, সেটা ধোনির জানা উচিত। নিজের সীমানা বোঝা উচিত। বোর্ড কর্তাদের যেমন প্রথম এগারো বাছার অধিকার নেই, তেমন ক্যাপ্টেনেরও কোচ বাছার বা তার মেয়াদ নির্ধারণ করার এক্তিয়ার নেই।” সত্যিই বোর্ডের পরবর্তী বৈঠকে ধোনির বিচারসভা বসবে কি না, তা অবশ্য বললেন না বোর্ড সচিব। তবে তা সত্যিই হলে ভারতীয় ক্রিকেট আর এক বেনজির ঘটনা ঘটতে চলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement