বোর্ডের উপর প্রায় দেড়শো কোটি টাকার করের বোঝা চাপবে বলে জানিয়ে দিল আইসিসি।
করছাড় না মিললে ভারতে আসন্ন দুই বিশ্বকাপের জন্য এ দেশের বোর্ডের উপর প্রায় দেড়শো কোটি টাকার করের বোঝা চাপবে বলে জানিয়ে দিল বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি। যা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন বোর্ডকর্তারা। লোকসভা নির্বাচনের পরে নতুন সরকার গঠন না হলে এই ব্যাপারে আলোচনায় বসতে পারবেন না তাঁরা। তাই এ জন্য আইসিসি-র কাছ থেকে সময় চেয়ে নিল বোর্ড।
বিশ্ব টি-টোয়েন্টি ২০২১ ও ২০২৩ বিশ্বকাপ ভারতে হওয়ার কথা। এই দুই প্রতিযোগিতার জন্য বিপুল অঙ্কের কর দিতে হবে। এই করের বোঝা আইসিসি নিজেদের কাঁধে নিতে রাজি নয়। অন্যান্য দেশের সরকার কর ছাড় দিলেও ২০১৬-য় যখন বিশ্ব টি-টোয়েন্টি হয়েছিল ভারতে, তখন এ দেশের সরকার কোনও করছাড় দেয়নি। তাই গত দু’দিনে দুবাইয়ে আইসিসি-র যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়, তাতে সংস্থার চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর ভারতীয় বোর্ড কর্তাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ দেশের সরকার যদি এ বারেও করছাড় না দেয়, তা হলে সেই অর্থ বোর্ডকেই দিতে হবে।
বোর্ডের সামনে এখন তিনটি রাস্তা খোলা। এক, সরকারের কাছে করছাড়ের আর্জি জানানো। দুই, সরকার সেই আর্জি না মানলে স্পনসরদের সেই করের অর্থ দিতে অনুরোধ করা। স্পনসরদের চুক্তিতে নাকি সেই শর্ত রয়েছে। তিন, কোনও পক্ষই রাজি না হলে বোর্ডকেই সেই কর দিতে হবে।
লোকসভা নির্বাচনের পরে নতুন সরকার গঠন হয়ে গেলে বোর্ডকর্তারা এই নিয়ে আলোচনার জন্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসতে চান। তাই এই বিষয়ে উত্তর দেওয়ার জন্য আইসিসি-র কাছে সময় চেয়েছেন তাঁরা। সময় দিতে আপত্তি নেই আইসিসি-র। আদালত নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের (সিওএ) চেয়ারম্যান বিনোদ রাই জানিয়েছেন, ‘‘কর সংক্রান্ত আইন বেশ জটিল। তাই সব না জেনে মন্তব্য করাটা ঠিক হবে না। তবে আমার মনে হয় এই সমস্যার সমাধান করা যাবে।’’
এ দিকে, পাকিস্তানের মতো সন্ত্রাসে মদতদাতা দেশকে বিশ্বকাপে খেলতে না দেওয়ার যে আর্জি ভারতীয় বোর্ড জানিয়েছিল আইসিসি-র কাছে, তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এই ব্যাপারে অবশ্য কোনও সরকারি বিবৃতি দেয়নি আইসিসি। ভারতীয় বোর্ডের এক কর্তা এই খবর দেন সংবাদ সংস্থাকে।
দুবাইয়ে আইসিসি-র সভায় ভারতীয় বোর্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সচিব অমিতাভ চৌধুরি। পাকিস্তানের নাম না করে যে চিঠিতে ‘সন্ত্রাসে মদতদাতা দেশ’-কে বিশ্বকাপে খেলতে না দেওয়ার আর্জি জানায় বোর্ড, সেই চিঠি সরকারি ভাবে এই সভায় পেশ করা হলেও তা নিয়ে সরকারি ভাবে কেন বিবৃতি দিল না আইসিসি, এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বোর্ড কর্তার বক্তব্য, এই সভায় আইসিসি চেয়ারম্যান মনোহর জানিয়ে দেন, কোনও দেশকে বিশ্বকাপে খেলতে না দেওয়ার এক্তিয়ার আইসিসি-র নেই। এই ধরনের সিদ্ধান্ত সরকারি স্তরে নেওয়া হয় এবং আইসিসি-র গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অধিকার তাদের নেই। সেই কারণেই ভারতের এই আর্জি মেনে নেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
ভারতীয় বোর্ডের কর্তা রবিবার সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘আইসিসি-র বহু সদস্য দেশের ক্রিকেটাররা পাকিস্তান সুপার লিগে খেলে। তাই সেই দেশগুলি আমাদের সমর্থন করতও না বোধহয়।’’