—ফাইল চিত্র।
ইডেনে দিনরাতের টেস্টে বিরাট কোহালির প্রতিপক্ষ অধিনায়ক ছিলেন তিনি। নৈশালোকে কী ভাবে ইনিংস গড়েছিলেন বিরাট, তার বেশির ভাগ অংশ দেখেছেন স্লিপে দাঁড়িয়ে। মহম্মদ শামি, উমেশ যাদবদের সুইং ও গতি সামলাতে না পেরে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মোমিনুল হক। ভারত-অস্ট্রেলিয়া দিনরাতের টেস্ট ম্যাচের আগের দিন মোমিনুল জানিয়ে দিলেন, ভারতের বোলিং আক্রমণকে টেক্কা দেওয়া কঠিন হবে স্টিভ স্মিথদের।
বুধবার সন্ধ্যায় আনন্দবাজারকে ফোনে মোমিনুল বলেন, ‘‘গোলাপি বলে নৈশালোকে ব্যাট করা প্রচণ্ড কঠিন। বিপক্ষে যদি উমেশ, শামির মতো বোলার থাকে তা হলে অস্বাভাবিক হয়ে যায়। ইডেনে আমি বেশিক্ষণ টিকতে পারিনি। সুইং ও গতিতে খেই হারিয়ে ফেলি। তবে মুশফিক ভাই (মুশফিকুর রহিম) রান পেয়েছিল। ওর অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়ায় সে বলেছিল, শুরুর দিকে বল সুইং করে ঠিকই। ৩৫ ওভারের পর থেকে সাদা বলের মতোই আচরণ করে। সেই সময়টা প্রচুর রান ওঠে। তবে রাতের দিকে উমেশ, শামিরা যে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল, তা স্বীকার করেছিল।” মোমিনুল যোগ করেন, ‘‘নৈশালোকে যদি কোনও দল ব্যাট করে, তাদের সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা বেশি। গোধূলি হওয়ার সময় বল ঠিক মতো দেখা যায় না। স্লিপে ফিল্ডিং করাও কঠিন হয়ে যায়।”
প্রথাগত টেস্ট ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার চেয়ে এই ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা কি আলাদা? মোমিনুলের উত্তর, ‘‘মনে রাখতে হবে টেস্ট ম্যাচের সকালের সঙ্গে দিনরাতের টেস্টের সন্ধ্যার অনেক মিল। সেই সময় থেকেই সাহায্য পেতে শুরু করে পেসাররা। সেই ভাবে একজন অধিনায়ককে বোলারদের ব্যবহার করাতে হবে। স্পিনারদের দিয়ে অতিরিক্ত বল করানো যায় না। কারণ গোলাপি বল দ্রুত পুরনোও হয়ে যায়। যে কোনও বোলারের জন্য স্লিপে একজন ফিল্ডার রাখতেই হয়। গোলাপি বল পিছলে যায় পিচে। যা ব্যাটসম্যানের ব্যাট ছুঁয়ে চলে যেতে পারে স্লিপে।”
আরও পড়ুন: পন্থ নয়, প্রথম এগারোয় ঋদ্ধি, আছেন পৃথ্বী, উমেশও, দল জানিয়ে দিল ভারত
বাংলাদেশের তরুণ পেসার আবু জায়েদ রাহি জানিয়েছেন, পেসাররাই সব চেয়ে বেশি সাহায্য পান গোলাপি বলে। ইনদওরে লাল বলের টেস্টে বিরাটের উইকেট পাওয়ার পরে, ভেবেছিলেন ইডেনেও ভারত অধিনায়কের বিরুদ্ধে সফল হতে পারবেন। সব অঙ্ক পাল্টে দিয়ে ১৩৬ রান করে যান বিরাট। যা নিয়ে আবু জায়েদের বক্তব্য, ‘‘গোলাপি বলে আউটসুইংয়ের বিরুদ্ধে আমাকে স্ট্রেট ড্রাইভ মেরেছিল বিরাট। নৈশালোকে কী ভাবে এত সাবলীল ব্যাট করল ও, আমার জানা নেই। আমাদের পরিকল্পনা ছিল আউটসুইংয়ের সাহায্যে বিরাটকে আউট করার। অথচ সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেয় ও।”
আরও পড়ুন: মায়ের সঙ্গে লিয়েন্ডার, ছবি পোস্ট করলেন জেনিফার
ইডেনে দুই উইকেট নেওয়া আবু জায়েদ আরও বলেন, “রাতে শিশির পড়ার আগে পর্যন্ত পেসারদের আদর্শ গোলাপি বল। কিন্তু বল ভিজে গেলে হাত থেকে পিছলে যায়। কারণ, বলে অতিরিক্ত রংয়ের স্তর থাকে। জল পড়লে সাবানের মতো পিচ্ছিল হয়ে যায়।”
ঘরোয়া ক্রিকেটে দলীপ ট্রফির ফাইনালও হয়েছিল গোলাপি বলে। সে ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন লেগস্পিনার কর্ণ শর্মা। স্পিনার হিসেবে গোলাপি বল ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা কী রকম? কর্ণের উত্তর, ‘‘স্পিনারদের হাত থেকে বল পিছলে যেতে পারে। শিশির পড়লে তো সমস্যা হবেই। তবে বাতাসে আর্দ্রতা না থাকলে স্পিনাররা সফল হতে পারে। কারণ, রাতে বলের সিম পড়া কঠিন। কোন দিকে বল ঘুরবে, তা সহজে পড়া যায় না।”