নায়কের নাম জেজে। শনিবার চেন্নাইয়ান ম্যাচে। ছবি: আইএসএল
হেলডার পস্টিগাকে কি সেমিফাইনালে খেলানোর কথা ভাবতে শুরু করেছেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস?
সনি নর্ডির মুম্বইয়ের কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর সেই চিন্তা সম্ভবত ঘুরছে কলকাতার কোচের মাথায়। এত দিন অনুশীলনে উপস্থিত থাকলেও তাঁকে ম্যাচে খেলাননি হাবাস। ‘আমি খেলার জন্য পুরো তৈরি,’ গত এক মাস ধরে কোচের কাছে এক রেকর্ড বাজিয়ে চললেও তাঁকে গুরুত্ব দেননি স্প্যানিশ কোচ। পাঠিয়ে দিয়েছেন ফিজিওর কাছে। কিন্তু শনিবার বিধাননগর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে রিজার্ভ বেঞ্চ ফুটবলারদের অনুশীলন ম্যাচে পুরো খেললেন পস্টিগা। যথেষ্ট সাবলীল ভাবেই। যা দেখে টিমের প্রায় সবাই ধরে নিয়েছেন, প্রথম এগারোয় না থাকলেও আঠারো জনের দলে জায়গা হচ্ছেই মার্কি ফুটবলারের। শেষ চারের কঠিন লড়াইয়ে প্রয়োজনে গোলের জন্য ইয়ান হিউমের সঙ্গে পস্টিগাকে ব্যবহার করা হতে পারে।
গ্যালারিতে বসে বসে বিরক্ত হয়ে ওঠা পর্তুগিজ স্ট্রাইকারও বহু দিন পর ম্যাচে নামতে পেরে প্রচণ্ড খুশি। এ দিন অনুশীলনের পর সল্টলেকের সিটি সেন্টারে নাতোদের সঙ্গে স্পনসরদের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর এক সময়ের সতীর্থ। সেখানে তিনি বলে দিয়েছেন, ‘‘আমি দলের সঙ্গে আছি। চাই কলকাতা চ্যাম্পিয়ন হোক। ম্যাচ-ফিট হওয়ার চেষ্টা করছি।’’ সেমিফাইনালে খেলবেন? হেসে পস্টিগার জবাব, ‘‘কোচ সেটা ঠিক করবেন।’’
দিল্লি না চেন্নাই, না কি জিকোর গোয়া— কাদের সঙ্গে সেমিফাইনালে দেখা হবে কলকাতার, তা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল এ দিনই। অঙ্ক যা, তাতে হাবাসের টিমের সঙ্গে দেখা হতে পারে চেন্নাইয়ানের। এ দিন জেজের গোলে মাতেরাজ্জির দল হারাল পুণেকে। ফলে ইলানোরাই চলে গেলেন শেষ চারে। বিদায় নিল নর্থ-ইস্ট। ১-০ জিতলেও অন্য দিকে ধাক্কা খেল মাতেরাজ্জির টিম। ইলানো এবং মেহেরাজউদ্দিন কার্ডের জন্য সেমিফাইনালের প্রথম পর্বের ম্যাচে খেলতে পারছেন না। যা সুবিধা করে দিতে পারে কলকাতাকে।
সাধারণত ম্যাচের পরের দিন অনুশীলন করান না হাবাস। কিন্তু মুম্বই ম্যাচে হেরে অশনি সংকেত দেখেই সম্ভবত এ দিন ক্লোজ ডোর অনুশীলন করালেন। সনি-সুনীল-সুব্রতদের কাছে হারের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ‘যাকে সামনে পাব খেলতে অসুবিধা নেই’ বললেও টিম সূত্র্রের খবর, ড্রেসিংরুমে ফিরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ অবস্থায় গত বারের চ্যাম্পিয়ন কোচ ফুটবলারদের বলেছেন, ‘‘যারা একশো শতাংশ দিতে পারবে তাদেরই খেলাব। মাঠে যে নামবে তাকে পুরোটা দিতে হবে।’’
পস্টিগা-অস্ত্রে শান দেওয়ার পাশাপাশি পুরো টিমকে নিয়ে সোমবার থেকে ফের শেষ চারের যুদ্ধ শুরু করবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন হাবাস। রবিবার ছুটি দিলেও অর্ণব-বোরহা-হিউমদের গোয়া-দিল্লি ম্যাচ দেখার কথা বলে দিয়েছেন। নিজে তো দেখবেনই। শনিবারও একই ভাবে চেন্নাইয়ান-পুণে ম্যাচ দেখার কথা বলে দিয়েছিলেন ফুটবলারদের। মাতেরাজ্জিরা জিতে যাওয়ায় অবশ্য এটিকের কোচ থেকে কর্তা সবাই চিন্তায়। লিগ পর্বে মেহরাজদের দু’বার হারানো সত্ত্বেও। কারণ হাবাস-সহ কলকাতা টিমের সবাই ধরে নিয়েছেন হিউম-নাতোদের মতো ঠিক সময়ে অভিষেক বচ্চনের চেন্নাইয়ানও পিক ফর্মে উঠেছে।
পুণেতে এ দিন ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন অভিষেক। আর তাঁর টিম একটা বড় ব্যানার তুলে ধরেছিল ম্যাচের আগে। যেখানে চেন্নাইয়ের দুর্গতদের জন্য প্রার্থনা করার আবেদন লেখা ছিল। শহর স্বাভাবিক জীবনে না ফিরলে শোনা যাচ্ছে চেন্নাইয়ের সেমিফাইনালের হোম ম্যাচ পুণে বা মুম্বইয়ে সরে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে কলকাতার অ্যাওয়ে ম্যাচ হবে পুণে বা মুম্বইয়ে। সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা আজ, রবিবার।