কুলদীপ যাদব। ছবি এপি
ভারতীয় ওয়ান ডে দলের সবচেয়ে সিনিয়র ক্রিকেটার তিনি। অভিজ্ঞতার দিক থেকেও সবার ওপরে। ভারতের অন্যতম সফল ক্রিকেট অধিনায়কও তিনি। তাই ভারতের ম্যাচে বা নেটে তাঁর পরামর্শ দলের প্রায় সবাই নিয়ে থাকেন। দলে সবার বড় দাদা যে তিনি। বিরাট কোহালিই যেখানে স্বীকার করেন যে, ধোনির কাছ থেকেই নেতৃত্বের পাঠ নিয়েছেন, সেখানে তাঁর সতীর্থরা যে ধোনিকে গুরুর মতোই দেখবেন, এতে আর অবাক হওয়ার কী আছে?
ধোনিও দলের কেউ সাহায্য চাইলে ‘না’ করেন না। বরং কখনও নিজে থেকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। স্টাম্পের পিছন থেকে বোলারদের ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে পরামর্শ থেকে শুরু করে ব্যাট করার সময় সঙ্গী ব্যাটসম্যানকে সঠিক পথ দেখাতে বহুবারই দেখা গিয়েছে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে। এটা করতে গিয়ে মাঝে মাঝেই সতীর্থদের বকাঝকা করতেও ছাড়েননি। মঙ্গলবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপের ম্যাচেও ঘটল তেমনই এক ঘটনা। যে ম্যাচে রোহিত শর্মা না খেলায় ধোনিকেই নেতৃত্বের দায়িত্ব নিতে হয়। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর ২০০তম ম্যাচে হঠাৎ কুলদীপকে রীতিমতো ধমক দিয়ে ধোনি হঠাৎ বলে ওঠেন, ‘‘বল করবি? না অন্য বোলার আনব?’’
আসলে কুলদীপ ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে খুঁতখুঁত করছিলেন। ধোনির সাজানো ফিল্ডিং তাঁর পুরোপুরি পছন্দ হয়নি। আরও কিছু বদল চাইছিলেন চায়নাম্যান বোলার। ফলে অযথা সময়ও নষ্ট হচ্ছিল। ঠিক তখনই ধোনি স্টাম্পের পিছন থেকে চেঁচিয়ে উঠে এই হুঁশিয়ারি দেন কুলদীপকে। স্টাম্প মাইক্রোফোনে যা স্পষ্ট ধরা পড়ে ও টিভি দর্শকেরা তা শুনতেও পান।
মঙ্গলবার রাতের টাই ম্যাচের পরের দিনই এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ও বিতর্কও শুরু হয়ে যায়। কেউ একে জুনিয়রদের প্রতি স্নেহ বলতে চান। কারও মতে, এটা ধোনির দাদাগিরি। কেউ মন্তব্য করেন, ধোনি এখন অল্পেতেই মেজাজ হারাচ্ছেন।
আসলে এটাই এই ধরনের প্রথম ঘটনা নয়। কুলদীপের সঙ্গেই এ রকম আগেও ঘটিয়েছেন ধোনি। ইনদওরে ২০১৭-য় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে ধোনির ধমক খান কুলদীপ। ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে সে বার দ্বিমত হতেই ধোনি ধমক দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আরে, আমি পাগল নাকি? ৩০০ ওয়ান ডে খেলেছি রে।’’ পরে এক সাক্ষাৎকারে এই ঘটনার কথা জানান তরুণ ভারতীয় স্পিনার।
এ বছর ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নে ধোনির ধমক খেয়েছিলেন মণীশ পাণ্ডেও। দৌড়ে রান নিতে গিয়ে মণীশ ভুলচুক করে ফেলায় ধোনি ক্রিজের উল্টো দিক থেকে তাঁর জুনিয়র ব্যাটসম্যানের উদ্দেশে চেঁচিয়ে ওঠেন, ‘‘ও দিকে কী দেখছিস? এ দিকে দ্যাখ।’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ঘটনার স্মৃতিও অনেকে ফিরিয়ে এনে প্রশ্ন করছেন ধোনি-ধমকের ঘটনা কি ভারতীয় দলে ক্রমশ বেড়েই চলেছে?