দু’বছর আগের সেই দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করে কি বুধবার কার্ডিফে ব্যাট করতে নেমেছিলেন জো রুট? হয়তো তাই। না হলে ইংল্যান্ড ৪৩-৩ হয়ে যাওয়ার পরও দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি করে অ্যাসেজের প্রথম টেস্টে দলকে বিপদসীমার বাইরে নিয়ে যাওয়ার রসদ পেলেন কোথায় ইয়র্কশায়ারের এই ২৪ বছর বয়সি ব্যাটসম্যান?
দু’বছর আগে এজবাস্টনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের জয়ের পর বার্মিংহামের পানশালায় রুটের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। রুটের মুখে তাঁর সজোরে ঘুসি মারা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। ওয়ার্নার দুই টেস্টের জন্য সাসপেন্ডও হয়ে যান। চলতি অ্যাসেজ সিরিজ শুরুর ঠিক আগে এক অজি সংবাদপত্রে সেই বিতর্ক ফের উস্কে দিয়ে যে ভুলই করলেন ওয়ার্নার, সেটাই বোধহয় বুধবার বোঝাতে চাইলেন রুট। জবাব দিলেন মাঠেই। ১৩৪ রানের এক জীবনদায়ী ইনিংস খেলে। আর তাতে ইংল্যান্ড ৩৪৩-৭।
সোফিয়া গার্ডেনে পড়ন্ত বিকেলে মিচেল স্টার্কের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল কাট করতে গিয়ে যখন স্লিপে শেন ওয়াটসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান রুট, তখন ইংল্যান্ড ২৮০-৫। কে বলবে এই দলটাই সকালে বৃষ্টির জন্য একটু দেরিতে শুরু হওয়ার পর ১৫ ওভার শেষ হওয়ার আগেই ৪৩-৩-এ ধুঁকছিল? গ্যারি ব্যলান্সের সঙ্গে রুটের ১৫৩-র পার্টনারশিপ যখন অজি পেসারদের হাত থেকে ইংল্যান্ডকে বাঁচিয়ে নিয়ে এল, তখন টিভির পর্দায় ভেসে ওঠা রুটের মুখে যে স্বস্তি ধরা পড়ল, তাতেই পরিষ্কার যে এই দিনটার অপেক্ষায় বহু দিন ছিলেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে শেষ অ্যাসেজে খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য সিডনি টেস্টে বাদ পড়ার পর থেকে অ্যাসেজই তাঁর কাছে অগ্নিপরীক্ষা। অন্যান্য সব সিরিজে নিজের ব্যাটকে কথা বলালেও এই একটা জায়গায় এসেই যাতে না আটকে যান তিনি, এত দিন চলছিল তারই প্রস্তুতি। বুধবারের সেঞ্চুরি তাঁর সেই পরিশ্রমের ফল। তাও আবার ১৬৬ বলে ১৩৪-এর ইনিংসটা এমন একটা সময়ে, যখন তাঁর দলই প্রায় কোনাঠাসা হয়ে গিয়েছিল। সেঞ্চুরিটা তাই শুধু যে রুটের কাছেই স্বস্তিদায়ক, তা নয়, ইংল্যান্ডকেও লড়াইয়ের জায়গায় এনে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। রুট ফিরে যাওয়ার পর অবশ্য স্টোকসও (৫২) আউট হয়ে গেলেন স্টার্কের বলে বোল্ড হয়ে। তার আগে নড়বড়ে ব্যালান্স ৬১ করে ফিরে গিয়েছেন। বাটলার (২৭), মইন আলিরা তিনশো পার করিয়ে দেন ইংল্যান্ডকে।
এ সবই রুটের সেঞ্চুরির ভিতে দাঁড়িয়ে।