মেসি প্রসঙ্গ উঠতেই খাপ্পা রোনাল্ডো। নিজেই পাল্টা প্রশ্ন করে বসলেন সাংবাদিকদের। এবং মেজাজ হারিয়ে বেরিয়ে গেলেন প্রেস রুম থেকে। রোমে মঙ্গলবার রাতে।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কী জন্য মেজাজ হারান?
উত্তরটা এত দিন সবাই অনুমান করত। মঙ্গলবার রোমে সাংবাদিক বৈঠকের পর উত্তরটা স্পষ্ট হয়ে গেল।
লিওনেল মেসির প্রসঙ্গ উঠলেই!
বুধবার গভীর রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লড়াইয়ে রোনাল্ডোর রিয়াল মুখোমুখি হচ্ছে এএস রোমার। ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে মেসি নামটা যে রোনাল্ডোর মধ্যে এতটা ক্ষোভের জন্ম দেবে, তা বোধহয় জানা ছিল না রোমের সাংবাদিকদের। জানা ছিল না ফুঁসতে ফুঁসতে সাংবাদিক বৈঠক ছেড়েই বেরিয়ে যেতে পারেন সিআর সেভেন। ঠিক যে রকম হল মঙ্গলবার।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ চারটে অ্যাওয়ে ম্যাচে মাত্র একটা জয় ছিল রিয়ালের। চারটে ম্যাচেই রোনাল্ডো জালে বল জড়াতে ব্যর্থ। পর্তুগিজ মহাতারকাকে প্রশ্ন করা হয়, রিয়ালের বিবিসি-র (বেঞ্জিমা-বেল-ক্রিশ্চিয়ানো) তুলনায় বার্সেলোনার এমএসএনের (মেসি-সুয়ারেজ-নেইমার) বোঝাপড়া কি আরও ঝলমলে? যে কারণে বার্সার ত্রিফলা তাদের তুলনায় বেশি গোল পাচ্ছে? প্রথমে প্রশ্নটা শুনে কিছুটা চটে যান সিআর সেভেন। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘ম্যান ইউতেও তো আমি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছি (২০০৮)। কিন্তু রিও ফার্দিনান্দ, রায়ান গিগস বা পল স্কোলসের সঙ্গে মাঠের বাইরে কথা বলতাম না তখন। পরস্পরকে হাই, হ্যালো বলা, ব্যাস এটুকুই চলত। কিন্তু মাঠে আমরা টিমের জন্য জান লড়িয়ে দিতাম। তাই বলছি সতীর্থদের জড়িয়ে ধরা, এক সঙ্গে ডিনার করা, একটু চুমু খাওয়ায় কিছু প্রমাণ হয় না।’’ একটু থেমে রোনাল্ডো যোগ করেন, ‘‘বেল আমার বাড়িতে ডিনারে এলো বা আমি ওর বাড়িতে গিয়ে কিছু খেলাম, তাতে কিছু হয় না। আমরা সবাই পেশাদার।’’
রোনাল্ডোকে এর পরেও খোঁচা দেওয়ার চেষ্টা চলে। এক জন প্রশ্ন করেন, মেসি কেন সে দিন ও ভাবে পেনাল্টি নিল বলতে পারেন? জবাব আসে, ‘‘জানি কেন নিয়েছে। কিন্তু আমি এর বেশি কিছু বলতে চাই না।’’
এ পর্যন্ত অবস্থা তাও নিয়ন্ত্রণে ছিল। বোমাটা ফাটল এর পরেই। হঠাৎ এক সাংবাদিক রোনাল্ডোর ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন করে বসলে। এক দিকে মেসি এবং তাঁর সতীর্থরা ঘরে-বাইরে যখন গোলের পর গোল করে চলেছেন, তখন অ্যাওয়ে ম্যাচে গোল পাচ্ছেন না কেন তিনি? তাতেই রেগে কাঁই হয়ে যান সিআর সেভেন। পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘আমি স্পেনে আসার পর থেকে এমন একজন প্লেয়ারের নাম বলতে পারবেন যে হোমের থেকে বেশি অ্যাওয়ে গোল করেছে? না পারবেন না। কারণ সে রকম কেউ নেই। বাই।’’ বলেই পাশের চেয়ারে রাখা জ্যাকেটটা তুলে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে উঠে যান রোনাল্ডো। অবস্থা সামলাতে নামতে হয় রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদানকে। জিদান তাড়াতাড়ি বলে ওঠেন, ‘‘উইংয়ে ক্রিশ্চিয়ানো খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন ফুটবলার। কারণ ও যখন একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে আক্রমণ করে, ওকে রোখা যায় না।’’
তবে রিয়াল কোচের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টাও কাজে আসেনি।
রোনাল্ডোকে যে জিজুও রুখতে পারলেন না!
রোনাল্ডোর বিস্ফোরণ ঘটানোর কিছু ঘণ্টার মধ্যেই আবার লা লিগায় জোড়া গোল করলেন মেসি। প্রথম ফুটবলার হিসাবে লা লিগায় ৩০০ গোল করার নজিরও গড়লেন এলএম টেন। স্পোর্টিং গিজনের বিরুদ্ধে যে ম্যাচে ৩-১ জিতল বার্সা।