মৌমিতা মুণ্ডা ও অঞ্চিতা পাল (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
ছোট থেকেই তির ছোড়ার দিকে ঝুঁকেছিল একজন। আরেকজন খেলাচ্ছলে মাঠে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেছিল তিরন্দাজির। কোচবিহারের ওই দুই ছাত্রী অঞ্চিতা পাল ও মৌমিতা মুণ্ডা জাতীয় স্তরে তিরন্দাজির প্রতিযোগিতায় সুযোগ পেয়েছে। তা নিয়ে খুশির হাওয়া মাঠ থেকে স্কুলে। অঞ্চিতা একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। মৌমিতা পড়ে নবম শ্রেণিতে। তাঁরা অনূর্ধ্ব ১৬ পর্বে খেলে রাজ্য স্তরে জিতেছেন। রাজ্য থেকে পুরুলিয়ারও দু’জন ওই সুযোগ পেয়েছেন। কোচবিহার জেলা তিরন্দাজি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দত্ত বলেন, “তিরন্দাজি নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন। ওই দু’জন জাতীয় প্রতিযোগিতায় যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করায় আমরা খুশি। আমাদের আশা, জেলা, রাজ্য তো বটেই, দেশের নামও উজ্জ্বল করবে।”
মৌমিতার বাবা মন্টুবাবু ছোটবেলা থেকে তির নিয়ে খেলতেন। বেশ কয়েকবার রাজ্য প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কোচবিহারের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম খোলটায় তাঁর বাড়ি। আগে দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। এখন একটি হিমঘরে কাজ করেন। তিন মেয়ের মধ্যে ছোট মৌমিতার ছোট থেকেই তিরন্দাজির প্রতি টান ছিল। যা দেখে মন্টুবাবু তার প্রশিক্ষণের জন্য জেলা তিরন্দাজি অ্যাসোসিয়েশনে নিয়ে যান। সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভাল খেলতে শুরু করে মেয়ে। জেলাস্তরের খেলায় ভাল ফল হতে থাকে তার। নভেম্বরের মাঝামাঝি কলকাতায় রাজ্য প্রতিযোগিতায় যোগ দেয় সে। সেখান থেকে জায়গা করে নিয়েছে জাতীয় পর্যায়ে। মন্টুবাবু বলেন, “মৌমিতা আরও ভাল খেলবে বলে আমার বিশ্বাস।”
কোচবিহারের কাচারি মোড় এলাকার বাসিন্দা অঞ্চিতার বাবা আশিসবাবু জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্মী। তিরন্দাজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রতবাবু আশিসবাবুর বন্ধু। তিনিই তাঁকে বলেন, যাতে ছোট মেয়েকে মাঠে পাঠান। অঞ্চিতাও মাঠে যেতে শুরু করে। ভাল খেলতে শুরু করে। এক বছরের মধ্যেই জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ করে নেয়। আশিসবাবু বলেন, “তিরন্দাজি নিয়ে এখন খুব উত্সাহ মেয়ের। আমরাও খুশি। আগামী দিনে আরও ভাল ফল করবে ওরা।” দুই মেয়েও জানায়, আরও ভাল ফল করার আশা করছে তারা।