প্রশ্ন: টিভিতে আজ আপনার হাফ সেঞ্চুরি দেখে বাঙালি দারুণ খুশি। বেঙ্গালুরুর খেলাটা না হওয়ায় আরও বেশি করে লোকে স্টার স্পোর্টস ৪ দেখছিল। এমনকী চিন্নাস্বামীতেও।
সৌরভ: তাই! আরে আমার তো খেলে দারুণ লাগল। এখানে আসার আগে ভাবতেই পারিনি ব্যবস্থাপনা এত ভাল হতে পারে। একেবারে নিখুঁত ছিল সব কিছু। মনে হচ্ছিল যেন ইন্ডিয়ার হয়ে ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ খেলতে এসেছি।
প্র: কিন্তু যে মাঠটায় আজ আপনাদের খেলা ছিল সেটা তো বেসবল গ্রাউন্ড। এক দিকটা বড়, এক দিকের সাইড বাউন্ডারিটা স্কুল মাঠের মতো ছোট।
সৌরভ: হতে পারে কিন্তু পিচটা খুব ভাল। নিউজিল্যান্ড থেকে উইকেট তৈরির লোক এসে ড্রপ ইন পিচ বানিয়েছিল। নিউজিল্যান্ড সেই কোথায়! সেখান থেকে দূর আমেরিকায় এসে পিচ তৈরি। ভাবাই যায় না। দেখেটেখে আমি তাজ্জব বনে গিয়েছি।
প্র: খেলাগুলো কি সিরিয়াস হল নাকি প্রদর্শনী ম্যাচের মেজাজে? অনেকের মনে হচ্ছিল আজ সচিনের টিমকে নির্ঘাৎ জিতিয়ে দেওয়া হবে।
সৌরভ: প্রশ্নই নেই। প্রত্যেকে আদ্যন্ত সিরিয়াস। রেপুটেশনের একটা ব্যাপার আছে না? কেউ লাইটলি খেলতেই চায় না। দারুণ কম্পিটিশন হচ্ছিল।
প্র: আপনি তো সেই অর্থে প্র্যাকটিসই করেননি। বাংলার অনূর্ধ্ব তেইশ বোলিং দু’দিন খেলে এসে ভেত্তোরি-ওয়ার্ন-কালিস ভাবাই যায় না।
সৌরভ: দিন পাঁচেক করেছি কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়। পরের বার ম্যাচ খেলে আরও রেডি হয়ে আসতে হবে।
প্র: পরের বার কি অল স্টারস হচ্ছেই?
সৌরভ: হ্যাঁ, হ্যাঁ। টুর্নামেন্ট এ বার এমন সাকসেসফুল হয়েছে যে পরের বার সব কিছু এখন থেকেই ঠিক হয়ে গিয়েছে। পরের বার খেলা সেপ্টেম্বরে। আমেরিকার তিন শহরের সঙ্গে ইংল্যান্ডের তিনটে জায়গায়। ছয় ম্যাচ টানা দু’টো দেশে আমরা খেলব। সাত দিন করে করে।
প্র: কোথায় কোথায়?
সৌরভ: নিউ ইয়র্ক, এলএ আর শিকাগো।
প্র: হিউস্টন আর নয়?
সৌরভ: না ভারতীয় জনসংখ্যা যেখানে বেশি সেই শহরগুলোয় আগে টার্গেট করা হচ্ছে।
প্র: ইংল্যান্ডে অল স্টারস কোথায় খেলবে?
সৌরভ: ওভাল, ম্যাঞ্চেস্টার আর বার্মিংহ্যাম।
প্র: এলএ-তে নেমে কেমন লাগল? আপনি তো প্লেনে সহবাগের সঙ্গে একটা সেলফিও টুইটারে পোস্ট করেছেন।
সৌরভ: হ্যাঁ এত ভাল লাগল না। এত দিন সিএবির সব অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ করে যাচ্ছিলাম। অনেক দিন পর পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়ে, মাঠে ফিরতে পেরে দারুণ লাগল! এলএ-তে অবশ্য আমি একবার এসেছি। ১৯৯৯-এ।
প্র: তা-ও তো ষোলো বছর পর আমেরিকায়!
সৌরভ: হ্যাঁ। নিউ ইয়র্কটায় শুধু যাওয়া হল না। ওই ম্যাচটা মিস করলাম। আজ পর্যন্ত আমার নিউ ইয়র্ক যাওয়া হয়নি। আশা করছি পরের বার ওখানে খেলব।
প্র: সচিন কী বলছেন?
সৌরভ: সচিন দারুণ খুশি। ও এ রকম একটা কঠিন উদ্যোগ নিয়েছিল যেটা এত বড় সাকসেস হয়েছে। খুশি হওয়ারই কথা।
প্র: সচিনকে তিনটে ম্যাচেই দেখে বোঝা যায়নি দু’বছর যে খেলা ছেড়েছেন।
সৌরভ: ও তো শুনলাম মুম্বইয়ে প্রচুর প্র্যাকটিস করেছে। এই লেভেলে কেউ আসলে ইজি নিতে চায় না। সবারই মান-ইজ্জত জড়িত।
প্র: আক্রম আজ খেললেন না কেন?
সৌরভ: ওয়াসিমের জ্বর হয়েছে আর শন পোলক ইনজিওর্ড ছিল।
প্র: প্যারিস আতঙ্কের পর আপনাদের আজকের ম্যাচে কি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল?
সৌরভ: না সে সিকিউরিটি তো সব ম্যাচেই যথেষ্ট ছিল। আজ বাড়তি কিছু ছিল বলে মনে হয় না।
প্র: কিন্তু তা হলে এই যে টিভিতে দেখাচ্ছে মার্কিনি ফ্যানরা এসে অটোগ্রাফ নিচ্ছেন। ক্রিকেটারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছেন।
সৌরভ: হ্যাঁ তাতে কোনও বাধা নেই। লবি-টবিতে কত লোক এসে কথা বলে যাচ্ছে।
প্র: আমেরিকাপ্রবাসী বাঙালিরা বহু বছর ধরে আপনাকে মিট করার জন্য অধীর অপেক্ষায়। তাঁদের সঙ্গে কি দেখা-সাক্ষাৎ হল?
সৌরভ: হ্যাঁ একটা বড় ঝাঁক এসেছিল। এলএ-তে তো দেখলাম প্রচুর বাঙালি।
প্র: আসছে বছর আবার হবে?
সৌরভ: নিশ্চয়ই। বললাম তো আউটস্ট্যান্ডিং অর্গ্যানাইজেশন। আসার আগে ভাবতেই পারিনি।