আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা ইস্টবেঙ্গলের

বিতর্কিত চেন্নাই সিটি এফসি বনাম মিনার্ভা ম্যাচের ভিডিয়ো ফুটেজ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য-সহ আইনজীবীদের দ্বারস্থ হল আই লিগ রানার্স ইস্টবেঙ্গল। আইনি শাখার সবুজ সঙ্কেত পেলেই এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে ক্লাব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৩:০৬
Share:

বিতর্ক: পেনাল্টি মারতে যাওয়ার আগে মানজ়ির সেই ইঙ্গিত।

বিতর্কিত চেন্নাই সিটি এফসি বনাম মিনার্ভা ম্যাচের ভিডিয়ো ফুটেজ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য-সহ আইনজীবীদের দ্বারস্থ হল আই লিগ রানার্স ইস্টবেঙ্গল। আইনি শাখার সবুজ সঙ্কেত পেলেই এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে ক্লাব।

Advertisement

ইস্টবেঙ্গল সিইও সঞ্জিত সেনের বক্তব্য, ‘‘এটা যুদ্ধ নয়। এটা একটা পদ্ধতি। আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁরা সব কিছু খতিয়ে দেখে যদি এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন, তা হলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

ক্লাবের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার আবার এর পিছনে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সংশ্লিষ্ট ম্যাচের সমস্ত সন্দেহজনক ফুটেজ, তথ্য প্রমাণ নিয়ে মঙ্গলবার দফায় দফায় ক্লাবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে আইনজীবীদের। ম্যাচের পরেই ফুটবলপ্রেমী সমর্থকরা চেন্নাই বনাম মিনার্ভা ম্যাচের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ফেডারেশনের ইন্টিগ্রিটি অফিসার তা নিয়ে তদন্ত শুরুর পরে বোঝা যাচ্ছে, ওঁরা কিছু ভুল অভিযোগ করেননি।’’

Advertisement

ক্লাব সূত্রে খবর, বিতর্কিত ওই চেন্নাই বনাম মিনার্ভা ম্যাচের চারটি বিষয় নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এ দিন। এই চারটি বিষয় হল, ১) দ্বিতীয়ার্ধে মিনার্ভার গোলদাতা রোল্যান্ডকে তুলে নেওয়ার সময় মাঠে নেমে নির্দেশ দিচ্ছিলেন মিনার্ভা মালিক রঞ্জিত বাজাজ। ২) এর ২-৩ মিনিটের মধ্যেই মিনার্ভা বক্সে তাদের এক ফুটবলার বলে হাত লাগানোয় পেনাল্টি পায় চেন্নাই। এ বার পেনাল্টি মারতে গিয়ে চেন্নাইয়ের গোলদাতা পেদ্রো মানজ়ি মিনার্ভা গোলকিপার নিধিন লালকে আঙুল দিয়ে ইশারা করেন তাঁর বাঁ দিকে মারবেন। মিনার্ভা গোলকিপার মানজ়ির ডান দিকে ঝাঁপ দেন। যে ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে সন্দেহ আরও দানা বাঁধছে। ৩) অভিযোগ, মিনার্ভা কর্ণধার রঞ্জিতের নির্দেশেই তিনটি পরিবর্তন হয় সে দিন। ফুটেজে এও দেখা গিয়েছে, হঠাৎ তাঁদের তুলে নেওয়ায় অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট ফুটবলাররাও। এমনকি ধারাভাষ্যকাররাও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। ৪) আরও অভিযোগ, চেন্নাইয়ের দ্বিতীয় গোলের পরে নাকি হাসছিলেন মিনার্ভার কয়েক জন ফুটবলার।

একই সঙ্গে এ দিন ইস্টবেঙ্গলের তরফে চেন্নাই বনাম মিনার্ভা ম্যাচের রেফারি সন্তোষ কুমারকে নিয়েও অভিযোগ জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, খেতাবের দৌড়ে থাকা চেন্নাইয়ের শেষের দিকের বেশ কয়েকটি ম্যাচ দেওয়া হয়েছিল রেফারি সন্তোষ কুমারকে। যিনি নিজেই দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চের মধ্যে শেষ তিনটি ম্যাচ খেলেছে চেন্নাই। প্রতিপক্ষ ছিল মোহনবাগান, চার্চিল ব্রাদার্স ও মিনার্ভা পঞ্জাব। সেই তিন ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সন্তোষই। ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, ‘‘একজন রেফারিকে কেন খেতাবের লড়াইয়ে থাকা দলের শেষ তিনটি ম্যাচে দায়িত্ব দেওয়া হল, তা নিয়ে তদন্ত করা হোক।’’

যে দুই দলের ম্যাচ নিয়ে এই বিতর্ক, সেই চেন্নাই সিটি এফসি-র মালিক রোহিত রমেশ এই বিতর্কে ঢুকতে নারাজ। এ দিন সন্ধেয় চেন্নাই থেকে ফোনে তিনি বললেন, ‘‘ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্ট দেখিনি। কাজেই এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমরা প্রতিটি ম্যাচই খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা নিয়ে খেলেছি। এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠতে পারে না।’’

আর যাঁর দিকে অভিযোগের তির, মিনার্ভার মালিক সেই রঞ্জিত বাজাজ এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলছেন, ‘‘এই অভিযোগের কোনও মানে হয় না। বিশ্ব ফুটবলে অনেকেই পেনাল্টি মারতে গিয়ে নানা অঙ্গভঙ্গী করে থাকেন। যাঁরা বিশ্ব ফুটবল দেখেন না, তাঁরাই মানজ়ির পেনাল্টি মারা নিয়ে অভিযোগ তুলছেন।’’ আরও বলেন, ‘‘মিনার্ভার যে দুই ফুটবলারকে সে দিন তুলে নেওয়া হয়েছিল, তাদের আগের ম্যাচেও তুলে নিয়েছিলাম। আজ এত কথা উঠছে কিন্তু আমরা চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জিতে গেলে এই সব অভিযোগ উঠত না।’’

ম্যাচ কমিশনার তাঁর রিপোর্টে চেন্নাইয়ের জয় নিয়ে কখনওই প্রশ্ন তোলেননি। আঙুল তুলেছেন মিনার্ভার হারের দিকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement