East Bengal vs Mohun Bagan

এগিয়ে নয় কেউই, স্নায়ুর নিয়ন্ত্রণই আসল, বলছেন প্রাক্তনীরা

মর্যাদার লড়াইয়ে দুই দলের সমর্থকরা যখন প্রিয় দলের জয়ের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছেন, তখন দেখে নেওয়া যাক বিশেষজ্ঞদের বিচারে কোথায় দাঁড়িয়ে দুই দল।

Advertisement

কৌশিক চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৬:১৬
Share:

ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের চিরন্তন লড়াইকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ফুটতে শুরু করছে শিলিগুড়ি। শুধু শিলিগুড়িই নয়, ঘটি-বাঙালের এই দ্বৈরথকে ঘিরে ফুটবল পাগল বাঙালির আজ আড়াআড়ি ভাগ হওয়ার দিন।

Advertisement

মর্যাদার লড়াইয়ে দুই দলের সমর্থকরা যখন প্রিয় দলের জয়ের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছেন, তখন দেখে নেওয়া যাক বিশেষজ্ঞদের বিচারে কোথায় দাঁড়িয়ে দুই দল।

কলকাতা লিগ আটে আট করার লক্ষ্যে এ দিন ড্র করলেই চলবে লাল-হলুদের। অন্য দিকে ঘরোয়া লিগের খরা কাটাতে আজ মাস্ট উইন ম্যাচ সবুজ মেরুনের জন্য।

Advertisement

রবিবারের ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল সুবিধাজনক জায়গায় থাকলেও লাল-হলুদকে এগিয়ে রাখতে নারাজ সুব্রত ভট্টাচার্য। এ দিন সুব্রত বলেন, "এগিয়ে থাকার অ্যাডভান্টেজকে মাথায় রেখে ইস্টবেঙ্গল যদি আজ মাঠে নামে, তা হলে মোহনবাগানের সম্ভাবনাই বেশি থাকবে। দুই দলের কেউই সুভাষ ভৌমিক, চিমা বা মজিদ বাসকার নয়। তবে, যে দল বেশি মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলতে পারবে সেই এই ম্যাচে এগিয়ে যাবে।"

আরেক প্রাক্তনী সুরজিত্ সেনগুপ্তের গলায় শোনা গেল বড় ম্যাচে স্নায়ুর চাপের কথা। একার হাতে বিভিন্ন ডার্বিতে রং বদলে দেওয়া সুরজিত্ বলেন, "বাকি ম্যাচগুলির থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ডার্বি। যে দল স্নায়ুর চাপকে যত তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে, সেই জিতবে আজকের ম্যাচ।" তবে, স্নায়ুর চাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মাঝমাঠের জারিজুরিও যে ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করবে তাও এ দিন মনে করিয়ে দেন ময়দান কাঁপানো এই ফুটবলার। তিনি বলেন, "মাঝমাঠই কিন্তু বদলে দেবে ম্যাচের ভাগ্য। সেই দিক থেকে কিছুটা অ্যাডভান্টেজ লাল-হলুদ। রফিক-আমনার বোঝাপড়া ভাল মত কাজ করলে ম্যাচটা অনেকটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেবে খালিদের ছেলেরা, অন্য দিকে দেখা গেছে, বারবার পরিবর্ত হিসেবে নেমে ম্যাচের রং বদলে দিয়েছেন আজহারউদ্দিন মল্লিক। এই ম্যাচেও সেই চমক দেখলে অবাক হব না।"

আরও পড়ুন: ডার্বির আগে দুই শিবিরে হুঙ্কার নেই, শুধু সতর্কতা

আরও পড়ুন: প্লাজার চাই ইলিশ, নাচবেন ক্রোমা

তবে, এই পরিস্থিতিতে লাল-হলুদকে যে আরও সচেতন হয়ে মাঠে নামতে হবে তা এ দিন মনে করিয়ে দিলেন লাল-হলুদের ঘরের ছেলে গৌতম সরকার। ভারতীয় ফুটবলের বেকেনবাওয়ার বলেন, “গোল পার্থক্যের বিচারে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে থাকলেও স্নায়ুর চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে আমনাদের। শিলিগুড়ির ডার্বি জিততে হলে দুই দলকেই নিজের সর্বস্ব দিয়ে মাঠে নামতে হবে। শুধু ভাল খেললেই এই ম্যাচ জেতা যায় এমনটা নয়, এই ম্যাচ জিততে হলে প্রতিটি খেলোয়াড়কে নিজেদের ছাপিয়ে যেতে হবে। কোচের স্ট্রাটেজিও ম্যাচে ফারাক গড়ে দিতে পারে।" সুবিধা জনক জায়গা থেকে এর আগেও যে ইস্টবেঙ্গলের পা হড়কেছে তাও এ দিন মনে করিয়ে দেন গৌতম। তিনি বলেন, "১৯৭৬ এ এই একই রকম পরিস্থিতি থেকে হারতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। উলগানাথনের সেন্টার থেকে আহমেদের ১৭ সেকেন্ডের গোল হারিয়ে দিয়েছিল লাল-হলুদকে।"

তবে, যাই হোক এই দিনের ম্যাচ যে বেশ হাড্ডাহাড্ডি হবে সে বিষয় নিশ্চিত গৌতম।

রবিবাসরীয় ডার্বিতে সমানে সমানে লড়াই হওয়ার কথা বললেও মোহনবাগানকেই এগিয়ে রাখলেন বিদেশ বসু। তিনি বলেন, "ইস্টবেঙ্গলের বিদেশিদের থেকে কিছুটা এগিয়ে মোহনবাগানের কামো-ক্রোমা জুটি। ডিফেন্সে কিংসলের সঙ্গে কিংশুক দেবনাথের জুটি ঠিক মতো জমে গেলে সমস্যায় পরবে ইস্টবেঙ্গল। তবে, মোহনবাগানকে জিততে গেলে আটকাতে হবে আল আমনাকে। স্টাইল অব প্লে-এখানে এনেকটাই ফারাক গড়ে দেবে।"

অন্য দিকে, ব়ৃষ্টি হলে তুলনামূলক ভাবে মোহনবাগান এগিয়ে শুরু করবে বলে মনে করছেন বাংলার সন্তোষ জয়ী কোচ মৃদুল বন্ধ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "কামো এবং ক্রোমা ভেজামাঠে খেলার বিষয় অনেক বেশি সাবলীল। বর্ষণ সিক্ত মাঠে খেলার অ্যাডভান্টেজ পাবে ওরা। অন্য দিকে ইস্টবেঙ্গলের আল আমনা স্বছন্দে খেলতে পারলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় লাল-হলুদেরও।"

এখন দেখার, সব পরিসংখ্যানকে ছাপিয়ে ঐতিহ্যের লড়াইয় জিতে লাল-হলুদ আটে আট করতে পারে, না লিগ খরা কাটিয়ে ফের একবার স্বমেজাজে ফেরে সবুজ মেরুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement