শ্যুটিংয়ে সাফল্য, স্বপ্নে ভাসছেন হুগলির তিন যুবা 

ক্লাবের ফল ততটা ভাল হয়নি। তবে রাজ্য রাইফেল শ্যুটিং প্রতিযোগিতায় পদক-প্রাপকদের তালিকায় যুগ্ম ভাবে পয়ল‌া নম্বরে রয়েছেন সৌম্যদীপ দাস। তাই তাঁকে নিয়েই স্বপ্ন দেখছে শ্রীরামপুর রাইফেল ক্লাব।

Advertisement

প্রকাশ পাল ও তাপস ঘোষ

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০০:০০
Share:

সৌম্যদীপ দাস, অর্জুন দাস, অর্ণব দেবনাথ

ক্লাবের ফল ততটা ভাল হয়নি। তবে রাজ্য রাইফেল শ্যুটিং প্রতিযোগিতায় পদক-প্রাপকদের তালিকায় যুগ্ম ভাবে পয়ল‌া নম্বরে রয়েছেন সৌম্যদীপ দাস। তাই তাঁকে নিয়েই স্বপ্ন দেখছে শ্রীরামপুর রাইফেল ক্লাব।

Advertisement

সম্প্রতি কলকাতায় হয়ে গেল ওই প্রতিযোগিতা। দলগত ভাবে ১০৮ পয়েন্ট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন উত্তর কলকাতা রাইফেল ক্লাব। প্রথম রানার্স আপ (৮৭ পয়েন্ট) জয়দীপ কর্মকার শ্যুটিং অ্যাকাডেমি। দ্বিতীয় শ্রীরামপুরের ক্লাবটি। তাদের ঝুলিতে ৬৪ পয়েন্ট। ব্যক্তিগত ইভেন্টে সর্বাধিক তিনটি করে সোনা জেতেন সৌম্যদীপ, চুঁচুড়ার অর্জুন দাস এবং সল্টলেকের অর্নিশা চৌধুরী। গত বছর রাজ্য শ্যুটিংয়ে শ্রীরামপুর রাইফেল ক্লাব প্রথম স্থান অর্জন করেছিল।

সৌম্যদীপের বাড়ি শ্রীরামপুরের বটতলায়। আগে ফুটবল খেলতেন। বছর চারেক আগে শ্যুটিংয়ে আসেন। শ্রীরামপুরের পাশাপাশি হাওড়া রাইফেল ক্লাবে দিব্যেন্দু রায়ের কাছেও অনুশীলন করেন তিনি। জাতীয় শিবিরে জুনিয়র ৫০ মিটার ‘থ্রি পজিশন ইভেন্ট’-এ তাঁর স্থান ষষ্ঠ। এ বার রাজ্য প্রতিযোগিতায় একটি রেকর্ডও করেছেন। শ্রীরামপুর কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের পড়ুয়া সৌম্যদীপ জানান, একটা সময় বাড়ি বন্ধক রেখে বাবা রাইফেল কিনে দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘অলিম্পিকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। কঠিন পরিশ্রম করব।’’

Advertisement

শ্যামনগরের সূর্য বিশ্বাস এবং চন্দননগরের অর্ণব দেবনাথ শ্রীরামপুর রাইফেল ক্লাবের হয়ে জুনিয়র বিভাগে দলগত সোনা জিতেছেন। অর্ণবেরও শ্যুটিং জগতে প্রবেশ চার বছর আগে। চন্দননগরের কানাইলাল কলোনির বাসিন্দা অর্ণব জানান, ছোটবেলায় দাদুর মুখে সেনাবাহিনীর যুদ্ধের কাহিনি শুনে বন্দুক চালানোর ইচ্ছে জাগে। ছেলেবেলায় আর নকল বন্দুক হাতে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতেন। বাবা অজিত দেবনাথ চাল বিক্রেতা। তিনি জানান, ছেলের আগ্রহ দেখে কষ্টেসৃষ্টে দু’টি রাইফেল কিনে দিয়েছেন। একটি ১০ মিটার রেঞ্জের এয়ার রাইফেল, যার দাম প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। অপরটি ৫০ মিটার রেঞ্জের অ্যামুনেশন রাইফেল, দাম প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। প্রশিক্ষণের জন্য মাসে ১৪ থেকে ৩০ টাকা দামের ৭০০-৮০০ গুলি কিনে দিতে হয়।

চন্দননগরের বাসিন্দা ঈশান পোড়েল কয়েক মাস আগেই যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন‌। অর্ণবও তাই চান। চন্দননগরের অরবিন্দ বিদ্যামন্দির থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ভদ্রেশ্বরের কবি সুকান্ত কলেজে বিকম পড়ছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরকারি সাহায্য পেলে আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়েরা আরও সফল হবে।’’ শ্রীরামপুর রাইফেল ক্লাবের সহ-সচিব শিশির সান্যাল বলেন, ‘‘ওঁরা যথেষ্ট প্রতিশ্রুতিমান। বড় আসরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

চুঁচুড়ার ধরমপুরের বাসিন্দা অর্জুন শ্রীরামপুর রাইফেল ক্লাবের প্রাক্তন সদস্য। তাঁর বাবা শ্যামলবাবু প্রাক্তন শ্যুটার। তিনিই ছেলের দ্রোণাচার্য। বছর দেড়েক ধরে শ্যামলবাবু ধরমপুরে ক্লাব খুলেছেন। এখানে অনুশীলনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণও দেন অর্জুন। ২০১৫ সালে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে দু’টি ইভেন্টে চতুর্থ হয়েছিলেন অর্জুন। এ বারের রাজ্য প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত ইভেন্টে তিনটি এবং দলগত ভাবে দু’টি সোনা জিতেছেন। হুগলি মহসিন কলেজ থেকে ইংরেজি অনার্স নিয়ে স্নাতক হয়েছেন। দূরশিক্ষায় এমএ করছেন। রেলে চাকরি পেয়েছেন। লক্ষ্য

অবশ্য অলিম্পিক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement