প্রতীকী চিত্র।
বাইশ গজে অসম্ভব বলে কোনও শব্দ নেই। যে কোনও মুহূর্তে বোলারের একটা ভয়ঙ্কর স্পেল অথবা ব্যাটসম্যানের মারকাটারি ইনিংস স্কোরবোর্ড ওলটপালট করে দিতে পারে। এই উদাহরণ ভুরি ভুরি রয়েছে ক্রিকেট ইতিহাসে। তা বলে, মাত্র ৪ বলে ৯২ রান! হয়ত বলবেন, গরু গাছে ওঠারও একটা লিমিট থাকে, তাই না!
মঙ্গলবার বাংলাদেশের একটি ঘরোয়া ক্রিকেট ম্যাচে ঠিক তেমনটাই ঘটেছে। হয়ত ভাবছেন, এ কোন ব্যাটসম্যান, যে মাত্র ৪ বলে ৯২ রান করলেন! ক্রিস গেইল, এবি ডি’ভিলিয়ার্স এমন কী বিরাট কোহালিকে এক সঙ্গে করলেও যে এই রানটা তোলা অসম্ভব, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একদম ঠিকই। ৪ বলে ৯২ রান করার মধ্যে ব্যাটসম্যানের প্রায় কোনও কৃতিত্বই ছিল না। এক জন বোলারই পুরো রানটা দিয়ে বিপক্ষকে ম্যাচ জিতিয়েছে। কিন্তু, এত রান দিয়ে সেই বোলারের কোনও আক্ষেপ ছিল না। বরং গোটা টিম উচ্ছ্বসিত তাঁকে নিয়ে। কেন?
আসলে এটা ছিল এক অভিনব প্রতিবাদ। কী এমন ঘটেছিল যে, নিজেদের টিমকেই হারিয়ে দিলেন বোলার?
অদ্ভুত সেই স্কোরবোর্ড।
ঘটনার সূত্রপাত টস থেকে। ঢাকার দ্বিতীয় শ্রেণির ক্রিকেট লিগে লালমাটিয়া ক্লাবের সঙ্গে অ্যাজিওম ক্রিকেটার্সের ম্যাচ ছিল। টসের পর কয়েনটাও না দেখানোর অভিযোগ ওঠে আম্পায়ারের বিরুদ্ধে। তাই অনিচ্ছা সত্বেও লালমাটিয়ার অধিনায়ককে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তাঁরা ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৮৮ রানে শেষ হয়ে যায়। গোটা ইনিংসে আম্পায়ারের একাধিক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি লালমাটিয়া। ফিল্ডিং করতে নেমে আম্পায়ারের এই সব সিদ্ধান্তর বিরুদ্ধেই প্রতিবাদে নামে লালমাটিয়া। কী ছিল সেই প্রতিবাদ? লালমাটিয়ার বোলার সুজন মাহমুদ একের পর এক ওয়াইড এবং নো বল করতে থাকেন। এবং সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত ভাবে। তিনি মোট ১৫টি নো বল এবং ১৩ টি ওয়াইড করেছিলেন। বেশ কিছু নো বলে ব্যাটসম্যান চার-ছক্কা মেরেছেন। সুজন মাত্র ৪টি বৈধ ডেলিভারি করেছিলেন, যেখান থেকে ১২ রান এসেছিল। সব মিলিয়ে ৪ বলে ৯২ রান দেন তিনি। ততক্ষণে ম্যাচ জিতে গিয়েছিল অ্যাজিওম ক্রিকেটার্স।
আরও পড়ুন: ক্রিকেট ইতিহাসের অদ্ভুত সব স্কোরবোর্ড
ক্রিকেট ইতিহাসে এক ওভারে সর্বোচ্চ রান উঠেছিল ৭৭। ১৯৯০ সালে ক্যান্টারবেরির বিরুদ্ধে এই ৭৭ রান দিয়েছিলেন ওয়েলিংটনের রবার্ট ভ্যানস।
তবে, আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লালমাটিয়ার এমন ইচ্ছাকৃত ভাবে রান দেওয়াতে কোনও শাস্তি দেওয়া হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।