যাঁরা ইডেনে আইপিএল প্লে-অফ ম্যাচের টানটান উত্তেজনা উপভোগ করতে যাবেন বলে ভেবে রেখেছিলেন, সেই ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য দুঃসংবাদ। ইডেন থেকে সরে গেল ২৫ ও ২৭ মে-র দু’টি প্লে-অফ ম্যাচই। দু’টোই হবে দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায়।
শুক্রবার রাজধানীতেই আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হল। দেশের বিভিন্ন শহর আইপিএল ম্যাচ করতে তৈরি থাকলেও চার দিকে এত আইনি বাধা আসছে, এত আপত্তি আসছে অন্যান্য মহল থেকে যে, বোর্ড আর সেই সব ‘অনিশ্চিত’ ভেনুতে ম্যাচ রাখার ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
কিন্তু ইডেনে এসেও কেন সরে গেল আইপিএল প্লে-অফ ম্যাচ?
যার ব্যাখ্যায় এ দিন আইপিএল বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান রাজীব শুক্ল জানান, ইডেনে কেকেআরের শেষ হোম ম্যাচ ২২ মে। আর ২৫ ও ২৭ মে দু’টি প্লে-অফ ম্যাচ হওয়ার কথা। নিয়ম অনুয়ায়ী, আইপিএলের প্লে-অফ ম্যাচ সেই ভেনুর হোম ফ্র্যাঞ্চাইজির ব্র্যান্ডিংয়ে হয় না। ব্র্যান্ডিং বলতে মূলত গোটা স্টেডিয়াম জুড়ে ছড়িয়ে থাকা যাবতীয় বিজ্ঞাপনী ডিসপ্লে।
প্লে-অফ ম্যাচে আইপিএলের ব্র্যান্ডিং থাকে। আর ফ্র্যাঞ্চাইজির ব্র্যান্ডিং সরিয়ে তা করতে অন্তত চার থেকে পাঁচ দিন লাগে। যে সময়টা ইডেনে পাওয়া যাবে না। বরং কোটলায় তা করা যাবে। কারণ, কোটলায় লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ ৫ মে। এর পর দিল্লি ডেয়ারডেভিলস তাদের সব ম্যাচ বাইরে খেলবে। তাই ব্র্যান্ডিং বদলানোর জন্য কোটলায় বাড়তি অনেক দিন সময় পাওয়া যাচ্ছে। সে জন্যই ইডেন থেকে জোড়া প্লে-অফ ম্যাচ সরিয়ে কোটলায় পাঠানো হল।
আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন দিল্লির বৈঠক সশরীরে থাকতে না পারলেও টেলিকনফারেন্সে বৈঠকের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সন্ধ্যেয় সিএবি প্রেসিডেন্ট বললেন, ‘‘ওই দু’টো ম্যাচ ইডেনে করার একটা প্রস্তাব ছিল এত দিন। সিদ্ধান্ত তো কিছু হয়নি। আর যে কারণে ইডেনে ম্যাচগুলো করা যাচ্ছে না, সেটা খুব যুক্তিসঙ্গত। আইপিএলে ব্র্যান্ডিং ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। ম্যাচগুলো সরে যাওয়ার পিছনে তো সিএবির কোনও ভুল নেই।’’
এ ছাড়াও এ দিন দিল্লিতে বৈঠকে ঠিক হয়, ১ মে-র পর মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টসের সব হোম ম্যাচ হবে বিশাখাপত্তনমে। আইপিএলের ভেনু সংক্রান্ত শর্ত অনুযায়ী একই ভেনু একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজির ভেনু হতে পারে না। কারণ, দুই দলের ব্র্যান্ডিং একসঙ্গে করা যায় না। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে বিসিসিআই মুম্বই ও পুণেকে বিশাখাপত্তনম ছাড়া কোনও ভেনু দিতে পারছে না। এই ব্যাপারে এ দিন রাজীব শুক্ল বলেন, ‘‘বিশাখাপত্তনমে তাই পুণে আর মুম্বই দলের হোম ম্যাচে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের নিজস্ব ব্র্যান্ডিং থাকবে না। আইপিএলের ব্র্যান্ডিং থাকবে।’’
মুম্বইয়ের ম্যাচ জয়পুরেও হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শেষমেশ হচ্ছে না। এই নিয়ে শুক্লর মন্তব্য, ‘‘জয়পুরে যে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে, তার শুনানি ৩ মে। মুম্বইয়ের ম্যাচ আছে ৮ মে। আদালতের রায় বিপক্ষে গেলে পাঁচ দিনের মধ্যে নতুন কোথাও ম্যাচ সরানো সম্ভব হবে না। সেই জন্যই আর সেই ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না।’’