Women News

ম্যারাথনে দৌড়নোর ফাঁকেই মেয়ের জন্য বুকের দুধ পাম্প করে রাখলেন মা!

তাই, এক দিকে তিনি ম্যারাথনে দৌড়ন। অন্য দিকে, সেই অ্যানা ইয়ং দৌড়তেই দৌড়তেই ছোট্ট মেয়ের জন্য যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাম্প করে রাখেন বুকের দুধ। আট মাইলের ম্যারাথন শেষ হতেই সেই দুধই পরম তৃপ্তিতে খেয়ে নেয় মেয়ে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:৩৫
Share:

যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন।

Advertisement

তাই, এক দিকে তিনি ম্যারাথনে দৌড়ন। অন্য দিকে, সেই অ্যানা ইয়ং দৌড়তেই দৌড়তেই ছোট্ট মেয়ের জন্য যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাম্প করে রাখেন বুকের দুধ। আট মাইলের ম্যারাথন শেষ হতেই সেই দুধই পরম তৃপ্তিতে খেয়ে নেয় মেয়ে।

স্কুল-কলেজে পড়ার সময় থেকেই নিয়মিত দৌড় সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন অ্যানা। তবে গত পাঁচ বছর কোনও বড় প্রতিযোগিতায় তিনি নামেননি। ভেবেছিলেন গত বছর হ্যাফ ম্যারাথনে অংশ নেবেন। কিন্তু, হঠাত্ই পায়ে চোট লাগে। কাজেই সেই ইচ্ছে ভেস্তে যায়। তার পরেই তিনি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়েন। স্বপ্নগুলো তখন কেমন যেন ঝাপসা হতে শুরু করে। এর পরেই গত এপ্রিলেই মা হয়েছেন অ্যানা। তার পর থেকেই ম্যারাথনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছেটা যেন আরও অদম্য হতে শুরু করে। কিন্তু, পাঁচ বছরের মেয়েকে রেখে কী ভাবে সেটা সম্ভব? সাতসকালের ঘণ্টাখানেক সময় কী ভাবে অ্যানাকে ছাড়া থাকবে সে? তার উপর ওই সময়টায় তো সে অ্যানার বুকের দুধও খায়!

Advertisement

শেষে উপায় বের করেন অ্যানাই। মেয়েকে রেখেই দৌড়বেন। শুরুর আগে খাইয়ে নেবেন মেয়েকে। এবং মাঝপথে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে দুধ পাম্প করে রাখেবেন। শেষে সেই দুধই খাইয়ে দেবেন তাকে। করলেনও তাই। প্রথম আট মাইল দৌড়নোর পর পথেই পাম্প করে রাখলেন দুধ। দৌড় শেষে সেই দুধই খাইয়ে দিলেন মেয়েকে। অ্যানা এখন হয়ে উঠেছেন নার্সিং মাদারদের অনুপ্রেরণা। তিনিও উচ্ছ্বসিত। জানিয়েছেন, প্রথম দিকে তাঁর থামতেই ইচ্ছা করছিল না। কিন্তু, মেয়ের মুখটা ভেসে ওঠে চোখের সামনে। আর তখনই সময় নষ্ট না করে দৌড়ের গতি কমিয়ে দেন তিনি। প্রায় হাঁটতে হাঁটতেই পাম্প করে বের করেন স্তনদুগ্ধ। অয়ানা যখন মেয়ের খাদ্যরসদ নিয়ে ব্যস্ত, কেউ এক জন তুলে রাখেন সেই ছবি। দৌ়ড় শেষে সেই ছবি দেখে দারুণ খুশি অ্যানা। ফোটোগ্রাফারকে ধন্যবাদ দিয়ে ফেসবুকে ছবিটা পোস্ট করে দেন তিনি। সেই ছবিই এখন ভাইরাল। ফেসবুকে অ্যানা লিখেছেন, ‘মা হওয়ার পাঁচ মাস পর কাল আমি হ্যাফ ম্যারাথনে অংশ নিলাম। ভোর সাড়ে চারটের সময় বাড়ি থেকে বেরতে হয়েছে। রেস শুরু হয়েছে পৌনে সাতটা নাগাদ। বাড়ি থেকে বেরনোর আগে মেয়েকে দুধ খাইয়েছিলাম। প্রথম আট মাইল দৌড়নোর পর দুধ পাম্প করে বের করে রাখি। দৌড় শেষ হওয়ার পর আবার মেয়েকে খাওয়াই।’

এই অভিজ্ঞতার পর ফের নিয়মিত ভাবে দৌড়ে ফিরবেন বলে আশাবাদী তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম আবার এক্সারসাইজে ফেরার এটা একটা ভাল উপায়। এক মিনিট হাঁটতে হবে, তার পরে এক মিনিট দৌড়তে হবে, আবার এক মিনিট হাঁটা, এক মিনিট দৌ়ড়। পদ্ধতিটা বেশ কষ্টকর। প্রতিযোগিতার আগের সপ্তাহে ছয় মাইলের বেশি দৌড়তে পারিনি। তাই বুঝতে পারছিলাম না কত ক্ষণ সময় লাগবে। ভেবেছিলাম কয়েক বার ব্রেক নেব। কিন্তু, এত ভাল লাগছিল দৌড়তে যে আরও ইচ্ছে করছিল।’’

এক ঘণ্টা ৪৪ মিনিটে দৌড় শেষ করেছেন অ্যানা। গড়ে ৭.৫৮ মিনিটে এক মাইল দৌড়েছেন। ফিনিশ লাইনে মায়ের অপেক্ষায় ছিল তাঁর পুঁচকি মেয়ে। মেয়েকে দুধ খাওয়ানোর সময় সমস্যা হওয়ায় লা লিচ লিগ ও অকুপাই ব্রেস্টফিডিং কমিউনিটির সাহায্য পেয়েছেন বলে জানান অ্যানা। তাঁর পোস্ট করা ছবি ১০,০০০ লাইক পেয়েছে ফেসবুকে। বহু মহিলা তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য। আর অ্যানা কী বলছেন? তাঁর কথায়, ‘‘এটা আমার একটা ব্যক্তিগত ছবি। ব্রেস্ট ফিডিং আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এটা মেয়ে ও আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটা পোস্ট করেছিলাম ঠিকই। কিন্তু ভাবতে পারিনি এত মানুষ সেটা দেখবে।’’

ছবি: অ্যানা ইয়ংয়ের ফেসবুক সৌজন্যে।

আরও পড়ুন: ট্রান্সজেন্ডার বলে জুটত মার, মনিপুরের সেই ‘মেয়ে’ চলল বিশ্বসুন্দরী হতে

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement