স্টিয়ারিং হাতে স্বপ্নের যাত্রা

মা উড়ালপুল ধরে ছুটছে গাড়ি। বছর পনেরোর মেয়ের চোখ চকচক করে ওঠে! লাফিয়ে উঠে চালকের আসনে বসা মাকে বলে, ‘‘আমিও তোমার মতোই গাড়ি চালাব!’’ পরে চোখ রাখে বিকেলের আকাশে। স্বপ্নের জন্ম হয়!

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০১:২৩
Share:

মিঠু দে

মা উড়ালপুল ধরে ছুটছে গাড়ি। বছর পনেরোর মেয়ের চোখ চকচক করে ওঠে! লাফিয়ে উঠে চালকের আসনে বসা মাকে বলে, ‘‘আমিও তোমার মতোই গাড়ি চালাব!’’ পরে চোখ রাখে বিকেলের আকাশে। স্বপ্নের জন্ম হয়!

Advertisement

একই ভাবে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পথে শহরের ১০ জন মহিলার। সব ঠিক থাকলে দু’-এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁদের গোলাপি ট্যাক্সি নামতে পারে পথে। শুক্রবার, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানাচ্ছে, গাড়ি পেয়ে গিয়েছেন ওই মেয়েরা। রুট পারমিট-ও চলে আসবে। স্টিয়ারিং হাতে স্বপ্নের যাত্রা শুধু সময়ের অপেক্ষা!

ওই মেয়েদেরই এক জন, বছর পঁয়ত্রিশের মিঠু দে। স্বামী অজয়, দুই মেয়ে পায়েল ও দোয়েলকে নিয়ে রাজারহাটে থাকেন। ২০১৭-র জানুয়ারি থেকে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে গাড়ি চালানো শিখতে শুরু করেন। সঙ্গে ওই সংস্থা ইংরেজিতে কথা বলা ও আত্মরক্ষার নানা কসরতও শেখায়। বললেন, ‘‘প্রথমে মনে হত, লোকে কী বলবে, পারব তো? সে দিন মেয়েকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে মা উড়ালপুল দিয়ে যাচ্ছিলাম। ওর চোখে যে আনন্দ দেখেছি, তাতে সাহস বেড়ে গিয়েছে।’’ সাহস বেড়েছে সুপর্ণা চট্টোপাধ্যায়েরও। তিনিও গোলাপি ট্যাক্সি চালাবেন।

Advertisement

ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে গাড়ি চালানো শিখেছেন বছর ছাব্বিশের বন্দনা নস্কর। এখন প্রাইভেট গাড়ি চালান। জানালেন, সাঁতারের প্রশিক্ষক ছিলেন। সাঁতার-পোশাকে মায়ের প্রবল আপত্তি। তাই গাড়ি চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। তবে খুশি হননি মা। এখন অন্যত্র ঘর ভাড়া করে থাকেন বন্দনা। বলছেন, ‘‘গোলাপি ট্যাক্সি নিয়ে দাপিয়ে বেড়াবে মিঠুরা। মিঠুকে দেখে উৎসাহী হোক অনেকে।’’ আর মিঠু, সুপর্ণা, বন্দনাদের দিদিমণি, সমাজকর্মী দোলন গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘কাজের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের ফারাক হয় না। এই মেয়েরা বারবার সেটাই প্রমাণ করছেন। ওঁদের জন্য গর্বিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement