কোনও কিছুই আটকাতে পারেনি ওঁদের ভালবাসা। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে
অন্ধকার ঘরটায় নিজেকে বন্ধ করে রাখতেন ২২ বছরের মেয়েটা। নিজের মুখোমুখি হতেও ভয় করত তাঁর। প্রতিহিংসার জ্বালায় পুড়ে যাওয়া নরম কিশোরী ত্বক ততদিনে একটা নয়, দু’টো নয়, সহ্য করেছে ১৭টি অস্ত্রোপচার। তবু দগদগে চামড়া সেই স্মৃতির সাক্ষ্য বহন করে নাছোড় ভাবে।
হঠাৎই একদিন এক চিলতে আলো এসেছিল ললিতার ঘরে। ললিতা বেনবাঁশি। উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের বাসিন্দা। ২০১২-র এক ভয়ঙ্কর দিনে নিজেরই আত্মীয়ের ক্রোধের ঝাঁঝে পুড়ে দিয়েছিল যাঁর গোটা শরীর। সমাজের চোখে জুটেছিল তাঁর গাল ভরা নাম— ‘অ্যাসিড অ্যাটাক সারভাইভার’।
কিন্তু সত্যিকারের স্বপ্নটা দেখিয়েছিল একটা মিসড কল। বহু দিনের ভেজা স্যাঁতসেতে ঘরে যেন হঠাৎ এল পূর্ব দিকের মিঠে রোদ। কে ছিলেন ফোনের ও প্রান্তে?
মালাডে সিসিটিভি অপারেটরের কাজ করতেন রাহুল কুমার। একদিন ভুল করেই রাহুলের ফোন থেকে মিসড কল চলে এসেছিল ললিতার মোবাইলে। মিসড কলটি কার, তা জানতে ঘুরিয়ে ফোন করেছিলেন ললিতা। এখান থেকেই নতুন করে লেখা হল রাহুল-ললিতার গল্প। যেন সিনেমার পর্দা, যেন কোনও রূপকথার কাহিনি।
আরও পড়ুন: অ্যাসিডে পোড়া মুখেই র্যাম্পে বিপ্লব আনলেন ভারতীয় কন্যা
সম্প্রতি রাহুলকে বিয়ে করলেন ২৬ বছরের ললিতা। লাল ঘাঘড়া-চোলি, টিকলি, নথ, চন্দনে নতুন কনেকে দেখতে তখন ভিড় উপচে পড়ছে বিয়ে বাড়িতে। চারিদিকে সানাই, হৈ হুল্লোড়, অন্ধকার দিনের শেষে যারপরনায় খুশি দুই পরিবার।
এত কিছুর মাঝে কী বলছেন ললিতা?
ছাদনাতলায় কনের সাজে ললিতা। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে
একদিন সমস্ত বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলেন নিজের উপর থেকে। কিন্তু আবার ভালবাসাতেই সম্পূর্ণ হয়েছেন তিনি, জানালেন মন খোলা হাসিতে। অ্যাসিডের দগদগে ক্ষতও মুহূর্তে ম্লান ওই স্বলজ্জ হাসির কাছে।
‘‘ও আমাকে ভালবাসে, এর থেকে বড় কথা আর কী হতে পারে? জানি না কী ভাবে একটা মিসড কল আমাদের জীবন বদলে দিল,’’ রাহুলের মুখেও তৃপ্তির হাসি।
আরও পড়ুন: অ্যাসিড আক্রান্ত লক্ষ্মীই এখন ফ্যাশন আইকন
‘সাহস ফাউন্ডেশন’ ললিতার পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছিল। এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বলিঅভিনেতা বিবেক ওবেরয়ও। সম্প্রতি এই সংস্থার তরফেই রাহুলললিতার বিষয়ে জানতে পারেন বিবেক। ওঁদের গল্প শুনে বিস্মিত বিবেক বলেন ‘‘রাহুলললিতার ভালবাসা খাঁটি। যেন ফিল্মের গল্প। একটা রং নম্বর থেকে ওঁদের বন্ধুত্ব প্রেম বিয়ে।’’ এই বিয়েতে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনিও। উপহার হিসাবে নবদম্পতিকে ঠাণেতে একটি নতুন ফ্ল্যাট দিয়েছেন বিবেক। ! (_)
‘সাহস ফাউন্ডেশন’ ললিতার পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছিল। এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বলিঅভিনেতা বিবেক ওবেরয়ও। সম্প্রতি এই সংস্থার তরফেই রাহুলললিতার বিষয়ে জানতে পারেন বিবেক। ওঁদের গল্প শুনে বিস্মিত বিবেক বলেন ‘‘রাহুলললিতার ভালবাসা খাঁটি। যেন ফিল্মের গল্প। একটা রং নম্বর থেকে ওঁদের বন্ধুত্ব প্রেম বিয়ে।’’ এই বিয়েতে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনিও। উপহার হিসাবে নবদম্পতিকে ঠাণেতে একটি নতুন ফ্ল্যাট দিয়েছেন বিবেক। (_)