রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের জেরে দিনদিন বাড়ছে ময়দানের দূষণ— পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের এই আবেদনের জেরে বুধবার আদালত-নির্ধারিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৩ জুলাইয়ের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
তৃণমূল, বামফ্রন্ট ও বিজেপি— তিন পক্ষই চলতি বছরে ব্রিগেডে সভা করেছে। তার পরেই গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সভার জেরে ময়দানের দূষণ বৃদ্ধি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা করেছিলেন সুভাষবাবু। তাতে সভার পরে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবিও তিনি পেশ করেন আদালতে। শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে এই ধরনের সভাস্থল মূল শহরের বাইরে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। যত দিন না বিকল্প সভাস্থল তৈরি হচ্ছে, তত দিন কী ভাবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, সে নিয়েও একটি প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়।
ময়দান ও সংলগ্ন এলাকার দূষণ রোধ নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি রয়েছে। রাজ্যের পরিবেশসচিব, পরিবহণসচিব, কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ পুরসভা, সেনাবাহিনী, বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরাও ওই কমিটিতে রয়েছেন। কমিটির রিপোর্ট চাওয়ার পাশাপাশি সুভাষবাবুর প্রস্তাব নিয়ে সেনা, পুলিশ, কলকাতা পুরসভা-সহ ময়দানের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষের হলফনামাও চেয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৩ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
সুভাষবাবু জানান, রিপোর্ট পেশের পাশাপাশি ব্রিগেডে পরবর্তী রাজনৈতিক সভার পরে ওই কমিটির সদস্যদের সভাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করে পৃথক একটি রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ দিন ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডের দূষণ নিয়েও সংবাদপত্রের প্রকাশিত কিছু ছবি ও খবরের কাটিং জমা দিয়েছেন সুভাষবাবু। আদালতের বাইরে তিনি বলেন, ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড উন্মুক্ত শৌচাগারে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে বাসস্ট্যান্ড সরানোর জন্য সময় চেয়েছে সরকার। কিন্তু এ ধরনের দূষণ কমানো সম্ভব। তাই হাইকোর্টের কাছে ছবি ও কাটিং জমা দিয়েছি। এ ব্যাপারেও ‘হাই-পাওয়ার’ কমিটির কাছে রিপোর্ট চেয়েছে আদালত। ৩ জুলাইয়ের মধ্যে সেই রিপোর্টও জমা দিতে হবে। বস্তুত ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড নিয়ে প্রতি তিন মাস অন্তর কমিটিকে রিপোর্ট দিতে হয়। কিন্তু গত জানুয়ারির পরে তিন মাস কেটে গেলেও এখনও সেই ত্রিমাসিক রিপোর্ট জমা পড়েনি বলে জানান সুভাষবাবু।