সাপের ছোবলে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে মাসখানেকের ব্যবধানে। এরপর থেকেই নদিয়ার চাকদহ থানার শিমূরালির নবকৌতুক পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের দিন কাটছে সাপের আতঙ্কে। বাসিন্দাদের সচেতন করতে রবিবার সন্ধ্যায় চাকদহ বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থার পক্ষ থেকে সাপ নিয়ে প্রদর্শনী, সচেতনতা শিবির ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হল।
শিমূরালি রেল স্টেশন থেকে মদনপুরের দিকে যেতে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মদনপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নবকৌতুকপুর গ্রাম। এখানে পঞ্চাশটির মতো পরিবারের বসবাস। যাদের মধ্যে দিনমজুরের সংখ্যাই বেশি। এই গ্রামে মাত্র এক মাস দশ দিনের ব্যবধানে সাপের কামড়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে সম্প্রতি। প্রথমে মারা যায় ছোট ভাই এগারো বছরের সুব্রত সরকার। ঘটনার সময় তার সেজো দাদা বছর পনেরোর সঞ্জিত সরকার ছত্তীসগঢ়ে ছিল। সেখানে সে প্রতিমা তৈরির কাজ করে।
ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সে বাড়ি আসে। কথা ছিল, ভাইয়ের শ্রাদ্ধের কাজ সেরে সে আবার কর্মস্থলে ফিরে যাবে। কিন্তু, যাওয়ার আগের রাতে ভাইয়ের মতো তাকেও ঘরের মধ্যে সাপে কামড় দেয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে তাকে কল্যাণী জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর থেকে সাপের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা শুক্লা বাগ বলেন, “আগে এলাকা দিয়ে কত হেলে, মেটে ও জলঢোরা সাপ যেতে দেখেছি। ভয় লাগেনি। ওই ঘটনার পর ওই সব সাপ দেখলেও ভয় লাগছে। রাতে ঘুম হচ্ছে না।”
বাসিন্দাদের ভয় কাটাতেই মূলত রবিবার আলোচনাসভার আয়োজন করেন বিজ্ঞানমঞ্চের কর্মীরা। প্রোজেক্টার মেশিনের সাহায্যে বিভিন্ন সাপের ছবি দেখিয়ে কার নাম কী, কে-কতটা ভয়ঙ্কর বোঝানো হয়। জোর দেওয়া হয় এলাকা সাফাই, ব্লিচিং পাওডার ছড়ানোর মতো প্রতিরোধমূলক বিষয়গুলিতেও। সংগঠনের সম্পাদক বিবর্তন ভট্টাচার্য বলেন, “এলাকার মানুষের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা ওই গ্রামে তিন দিন গিয়েছিলাম। এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে বুঝতে পেরেছি সাপ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন ওঁরা। তাই এই পদক্ষেপ। জোর দিয়েছি দ্রুত চিকিত্সার উপরেও।”
আর প্রশাসন কী করছে?
চাকদহের ভারপ্রাপ্ত বিডিও তপনজ্যোতি বিশ্বাস বলেন, “এই ধরনের খবর আমার জানা নেই। কেউ, বিষয়টি আমকে জানায়নি। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।”