ভোটের কাজে ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে দূষণ সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে দেরি করা বরদাস্ত করল না জাতীয় পরিবেশ আদালত। বিচারপতি স্বতন্ত্র কুমারের বেঞ্চ নির্দেশ দিল, ওই রিপোর্ট জমা দিতে হবে নির্ধারিত দিন মঙ্গলবারেই। যার জেরে এ দিন বিকেলে রিপোর্ট জমা দেন ওড়িশা সরকারের কর্তারা।
নির্মাণকাজে উপকূল আইন মানা হচ্ছে না, স্বর্গদ্বার শ্মশান থেকে বায়ুদূষণ ছড়াচ্ছে এমন নানা অভিযোগ নিয়ে পরিবেশ আদালতে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই মামলায় ইতিমধ্যেই হলফনামা দাখিল করেছিল ওড়িশা। স্বর্গদ্বার শ্মশানের আধুনিকীকরণের খসড়াও জমা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু আদালত সেই হলফনামায় সন্তুষ্ট হয়নি। তার পরেই সরকারি কর্তাদের হাজির হতে বলা হয় আদালতে।
আদালত গত ১৪ মার্চ নির্দেশ দেয়, ওড়িশা সরকারের পরিবেশ সচিব, নগরোন্নয়ন সচিব-সহ প্রশাসনিক কর্তাদের হাজির হতে হবে। সেই নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার দুই সচিব ছাড়াও জল পর্ষদ (ওয়াটার বোর্ড)-এর চিফ ইঞ্জিনিয়ার, পুরী কোনারক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সিইও এবং পুরী পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার হাজির হয়েছিলেন। সুভাষবাবু জানান, পুরীর দূষণ এবং তার প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে এ দিন আদালত তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি।
এর পরেই আদালত সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চায়। ওড়িশা সরকার জানায়, ভোটের কাজে সব আধিকারিক ব্যস্ত। তাঁরা মঙ্গলবারই দিল্লি থেকে ওড়িশা ফিরছেন। আগামী দিনে এই রিপোর্ট দেওয়া হবে। কিন্তু বিচারপতি স্বতন্ত্র কুমারের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ওই রিপোর্ট এ দিনই জমা দিতে হবে। আদালত জানায়, যে হেতু এই বিষয়ে একাধিক দফতর জড়িয়ে রয়েছে, তাই অফিসাররা একসঙ্গে বসে আলোচনা করুন। তার পর সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দিন।
আদালতের এই নির্দেশকে পরিবেশের প্রতি সদর্থক মনোভাব বলেই মনে করছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, ভোটের সময়ে বহু প্রশাসনিক কাজই বন্ধ হয়ে যায়। সেই পরিস্থিতিতে এমন নির্দেশ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। সুভাষবাবু বলেন, “হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে দীর্ঘদিন মামলা করছি। এমন নির্দেশ আগে দেখেছি বলে মনে পড়ছে না।” ৯ মে পরবর্তী শুনানি।