অ্যারো ফার্মসের সব্জি
আগামী ২০ বছর পর হয়তো এমন সময় আসবে, যখন চাষ করতে মাটির প্রয়োজন হবে না। সূর্যের আলো দরকার হবে না। নাম মাত্র জল হলেই চলবে। ভাবছেন এ সব অলীক স্বপ্ন! কিন্তু, বাস্তবে এই রকম কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করেছে অ্যারো ফার্মস নামে এক মার্কিন কোম্পানি। আর সেই কৃষি কারখানায় সব্জির চাষ হচ্ছে। যা আর পাঁচটা সব্জির মতোই উপকারী, সুস্বাদু। অ্যারো ফার্মস দাবি করেছে, মাটি, সূর্যের আলো এমনকী জল ছাড়াই ৬৯ হাজার স্কোয়্যার ফুট জায়গা জুড়ে চাষ হচ্ছে সেখানে। এই ধরনের চাষ করার পদ্ধতিকে বলা হয় অ্যারোপনিক্স। যেখানে ঘরের বাতাসকে কাজে লাগিয়েই জলের অভাব মেটানো হয়। তবে এই মার্কিন কোম্পানির হাত ধরে অ্যারোপনিক্স পদ্ধতিতে প্রথম চাষের ঘটনা ঘটল, তেমনটা নয়। ১৯৪২ সালে ডব্লিউ কার্টার নামে এক বিজ্ঞানী প্রথম জানিয়েছিলেন, জলীয় বাষ্পের সাহায্যে গাছ তার জলের প্রয়োজন মেটাতে পারে। ১৯৫২ সালে অ্যারোপনিক্স পদ্ধতিতে সফল ভাবে একটি আপেল গাছে ফল ফলিয়ে দেখিয়েছেন বিজ্ঞানী জি এফ ট্রওয়েল। তবে এই পদ্ধতিকে আরও বৃহত্তর ভাবে ভাবা হয় ১৯৮৩ সালে। তৈরি হয় জেনেসিস মেশিন (জিটিআই)। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে অ্যারোপনিক্সূ পদ্ধিতকে বাণিজ্যেক ভাবে তুলে ধরা হয়। এমনকী, স্পেস স্টেশনেও একই পদ্ধতিতে লেটুস শাক ফলিয়েছিল নাসার বিজ্ঞানীরা। কিন্তু নিউ জার্সির এই কোম্পানি দেখিয়ে দিল চাষের বিকল্প উপায়। ৬৯ হাজার স্কোয়্যার ফুট জুড়ে সফল ভাবে চাষ হচ্ছে সেখানে। এই মুহূর্তে এটিই হল অ্যারোপনিক্স পদ্ধতিতে বিশ্বের বৃহত্তম কৃষি কারখানা। সেখানে প্রতি বছর ২০ লক্ষ পাউন্ড সব্জি উত্পন্ন করবে তাঁরা। কিন্তু কী ভাবে চাষ হচ্ছে সেখানে? রাত হোক বা দিন, ঘরের ভিতর আলো, জলীয় বাষ্প ও তাপমাত্রার উপর নজর রাখা হয় নিখুঁত ভাবে। সূর্যের আলোর বদলে এলইডি টিউব রাখা হয়েছে প্রত্যেকটি ট্রেতে। আর মাটির বদলে ব্যবহার করা হয়েছে এক ধরনের বায়ো কাপড়, নিউট্রেন্টস সলিউশন।
অ্যারোফার্মসের প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড রোসেনবার্গ জানিয়েছেন, “রাষ্ট্রপুঞ্জের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০৩০ সালে গোটা বিশ্বের জনসংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৮৫০ কোটি। শহুরে জীবনযাত্রায় চাষের জমি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের ৫৪ শতাংশ মানুষ শহরে বাস করেন। ভবিষ্যতে এই পদ্ধতি চাষ বিকল্প উপায় হয়ে দাঁড়াবে।” তিনি আরও জানান, “আমাদের এই কোম্পানি শুধু চাষের জন্য তৈরি হয়নি, বিশ্বকে নতুন দিশাও দেখাবে।” এক নজরে দেখে নেওয়া যাক অ্যারো ফার্মস কী ভাবে প্রকৃতির সাহায্য ছাড়াই তৈরি করে চলেছে বিঘা বিঘা ফসল—
আরও খবর- অধিকার রক্ষা করতে এই উপজাতি মেয়েরা বিয়ে করছেন মেয়েদেরই