চন্দ্রযান ৩-এর পাঠানো চাঁদের নতুন ছবি প্রকাশ করল ইসরো। ছবি: পিটিআই।
এখনও চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি স্পর্শ করেনি। তার আগেই চন্দ্রযান প্রকল্পের যাবতীয় কৃতিত্ব নরেন্দ্র মোদীর দাবি করে সরব হলেন বিজেপি নেতৃত্ব। আজ কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর কারণেই মহাকাশ গবেষণায় এই সাফল্যে এসেছে।
বুধবার সন্ধ্যায় চন্দ্রযান-৩ এর সৌরচালিত ল্যান্ডারটি পাখির পালকের মতো ভাসতে ভাসতে চাঁদের মাটি ছোঁয়ার কথা। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় সফ্ট ল্যান্ডিং। গোটা দেশ এখন সেই অবতরণের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। কিন্তু আজ ল্যান্ডারের চাঁদের মাটি ছোঁয়ার দু’দিন আগেই বিজেপি সদর দফতরে বসে ওই অভিযানের যাবতীয় কৃতিত্ব নরেন্দ্র মোদীকে দিলেন মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের কারণে দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের মহাকাশ গবেষণাকে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি অতীতের কংগ্রেস সরকারের দিকে আঙুল তুলে জিতেন্দ্রের অভিযোগ, কংগ্রেস সরকার মহাকাশ গবেষণায় সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবেনি।
সোমবার চাঁদের মাটি থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার উপরে রয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র ল্যান্ডার বিক্রম। ইসরো সূত্রের খবর, সোমবার রাত পর্যন্ত বিক্রমের গতিবিধি স্বাভাবিক রয়েছে। রবিবার দ্বিতীয় দফার গতিহ্রাসের ফলে নিয়ন্ত্রণও তুলনায় সহজ হয়েছে। পূর্ব পরিকল্পনামাফিক, বুধবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে নামবে বিক্রম। তার পরে তার পেটে থাকা রোবট গাড়ি, ‘প্রজ্ঞান’ বেরিয়ে আসবে। অবতরণ সফল হলে ভারতই প্রথম দেশ হিসাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছবে।
দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছনোর ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে টক্করে ছিল রাশিয়া। সোমবারই রুশ চন্দ্রযানের (লুনা-২৫) চাঁদের মাটি ছোঁয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মুখ থুবড়ে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়েছে রাশিয়ার দূত। ঠিক যেমন হয়েছিল, চার বছর আগে ইসরোর দ্বিতীয় চন্দ্রযানের। মহাকাশবিজ্ঞানীদের মতে, পাখির পালকের মতো অবতরণ (সফট ল্যান্ডিং) খুবই জটিল প্রক্রিয়া। সামান্য হিসাবের ভুলচুকে অভিযান ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। তাই আগের অভিযান থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার ল্যান্ডারের গঠন বদলেছে ইসরো। নিরাপদে অবতরণের উপযোগী প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হয়েছে। তাই এ বার অভিযান সফল হওয়ার ব্যাপারে অনেকেই আশাবাদী।
বিক্রম অবতরণের প্রস্তুতি নিলেও ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে তৃতীয় চন্দ্রযানের অরবাইটার (চাঁদের কক্ষপথে পাক খাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহ)। এ দিনও তার পাঠানো কিছু ছবি প্রকাশ করেছে ইসরো।
চন্দ্রযান-৩-এ সাফল্য এলে অন্তরীক্ষে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্যেও কাজ শুরু হয়ে যাবে। মানুষ পাঠানোর আগে অবশ্য দু’টি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসরো। যার মধ্যে প্রথমটিতে মহাকাশযান মহাকাশে পাঠিয়ে তা সফল ভাবে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে। সেই পর্বটি সফল ভাবে হলে, দ্বিতীয় পাইলট প্রকল্পে মানুষের পরিবর্তে মহাকাশে রোবট পাঠানো হবে। দু’টি পাইলট প্রকল্প সফল হলে আগামী বছরের মাঝামাঝি বা শেষ পর্বে মহাকাশে কোনও ভারতীয় নভোচরকে পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।