ফাইল চিত্র।
বিজ্ঞান আর শিল্পের মধ্যে দূরত্ব কতটা? আদৌ দূরত্ব রয়েছে, না কি সহাবস্থান? জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের তোলা ছবিগুলি দেখলে মনে হবে, প্রথম প্রশ্নটিকে নস্যাৎ করে দিয়ে দ্বিতীয়টিতেই সায় দিচ্ছে ওই ছবিগুলি।
আড়াই হাজার আলোকবর্ষ দূরের একটি নক্ষত্রের ছবি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ পাঠিয়েছে। যে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ওই নক্ষত্রটি তার চার দিকে গ্যাসের ধোঁয়া ছড়াতে ছড়াতে যাচ্ছে। ছবিটি দেখে মনে হবে কোনও শিল্পী কালো ক্যানভাসের উপর জলরং আর তুলির টানে ওই শিল্পকর্মটি তৈরি করেছেন। আসলে ওই ছবি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের তৈরি। বিভিন্ন ডেটার সম্মিলনে।
তা হলে কি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ একটি ক্যামেরা? একদম না। এটি একটি টেলিস্কোপ। আর পাঁচাটা টেলিস্কোপের যা কাজ, এরও তাই। এর প্রথম এবং প্রধান কাজ হল পর্যবেক্ষণ করা। তার পর প্রাপ্ত তথ্যের প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ওই রকম সব অনবদ্য ছবি তৈরি করা। আর এই সব ছবি থেকে উন্মোচিত হয় মহাবিশ্বের নানা রহস্য।
আড়াই হাজার আলোকবর্ষ দূরে একটা নক্ষত্র, যার ছবি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ পাঠিয়েছে। ছবি সৌজন্য: নাসা।
একটি টেলিস্কোপ গবেষণা সংস্থার এক ডেটা ইমেজ ডেভেলপারের কথায়, ‘‘এই টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের যেখানে যা আছে তার ছবি তুলে পাঠায় না, এর কাজ আরও প্রসারিত। প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণ করে এটি ছবি তৈরি করে। এক কথায়, এর প্রথম কাজ হল বিজ্ঞানসম্মত তথ্য সংগ্রহ করা এবং সেই তথ্যকে ছবিতে পরিণত করা।’’
পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে বসানো জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ অনবরত বিশ্বের এমনই নানা তথ্য সংগ্রহ করে তাকে ছবিতে পরিণত করছে। তথ্য জমা হচ্ছে বাইনারি বিন্যাসে অর্থাৎ শূন্য ও একের নিরিখে। ঠিক যে ভাবে কমপিউটার চলে। সেই বিন্যাসেই নির্মাণ করছে মহাবিশ্বের রহস্যের ছবি। আর এই ছবি নির্মাণে থাকে শিল্পীর যুক্তি। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের পাঠানো পাঁচটি ছবিই স্পষ্ট করে দিচ্ছে বিজ্ঞান ও শিল্পের সহাবস্থান।