ছবি: সংগৃহীত।
দিনক্ষণ স্থির হয়নি। তবে মহাকাশ দফতরের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ গত রবিবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ২০২১-এর গোড়ায় পাড়ি দেবে ভারতের তৃতীয় চন্দ্রযান। আগের দু’টিতে থাকলেও চন্দ্রযান-৩-এ কোনও অরবিটার থাকবে না।
চন্দ্রযান-২ এর ক্ষেত্রে অন্যান্য দিকে সাফল্য মিললেও সফ্ট ল্যান্ডিং তথা আলতো ভাবে ল্যান্ডার নামানোর পরীক্ষায় সফল হয়নি ভারত। এ বারে ইসরো তাই চাঁদে আলতো ভাবে ল্যান্ডার নামানোর পরীক্ষায় পাশ করতে বিশেষ সতর্ক ভাবে এগোচ্ছে।
আশা করা হচ্ছিল চলতি বছরের শেষ ভাগেই পাঠানো হবে চন্দ্রযান-৩। কিন্তু ইসরো সূত্রে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, অতিমারির কারণে অনেক কাজে বিলম্ব হয়েছে। তা ছাড়া উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট দিন ও সময় থাকে, যাকে বলা হয় লঞ্চ উইন্ডো। এখনও তার নির্দিষ্ট দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি।
আরও পড়ুন: মরচে পড়ছে চাঁদে, এই প্রথম জানাল চন্দ্রযান-১
ইসরো সূত্রে জানানো হয়েছে, তৃতীয় চন্দ্র অভিযানে ল্যান্ডার যাবে। তার ভিতরে থাকবে রোভার। গত ২২ জুলাই রওনা দেওয়া চন্দ্রযান-২-এর অরবিটারটি এখনও চাঁদকে পরিক্রমা করে চলেছে। এবং সেটি কাজও করছে। ছবি ও তথ্য পাঠিয়ে চলেছে। দ্বিতীয় অভিযানে ব্যর্থ হয়েছিল অবতরণ। তাই ল্যান্ডার পাঠিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণই এ বারের মূল লক্ষ্য। দ্বিতীয় অভিযানে ল্যান্ডার ও রোভারের নাম রাখা হয়েছিল বিক্রম ও প্রজ্ঞান। এ বারে ল্যান্ডার ও রোভারের নাম কী হবে, এখনও তা প্রকাশ করা হয়নি। সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই ঘোষণা করবেন।
অন্য একটি সূত্রের দাবি, আগামী মার্চে উৎক্ষেপণের ভাবনা থাকলেও তা আরও কিছুটা পিছোতে পারে। চন্দ্রযান-২ এর সময় ব্যর্থতার পিছনে তাড়াহুড়োর অভিযোগ উঠেছিল। অনেকেই বলেছিলেন, অবতরণের মহড়ায় ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও ‘বিশেষ চাপের মুখে’ তড়িঘড়ি অভিযান করা হয়েছিল। এ বার অতিমারির কারণে প্রস্তুতি ধাক্কা খেয়েছে। তা সত্ত্বেও তড়িঘড়ি করে অভিযান করা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, মঙ্গলের মতো চাঁদের লঞ্চ উইন্ডো খুব বড় সময়ের ব্যবধানে আসে না। ফলে চাইলে কিছু দিন পরেই অভিযানের দিন স্থির করা যেতে পারে। তা ছাড়া চাঁদে সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের চেষ্টা প্রথম বার ব্যর্থ হওয়ার পরে একটু বেশি সাবধানী হতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা।
ভারতীয় যানে প্রথম বার মহাকাশে মানুষ পাঠানোর কাজও এগিয়ে চলেছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে চার জনের। যাঁদের নামধাম পরিচয় এখনও পর্যন্ত গোপন রাখা হয়েছে। তবে রুশ সংবাদমাধ্যমের খবর, ভারতের গগনযানের যাত্রীদের জন্য পোশাক তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে সে দেশে। জেজদা নামে একটি সংস্থা কাজটি করছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণরত ভারতের সম্ভাব্য মহাকাশচারীরা জেজদার দফতরে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁদের শরীরের মাপজোক নেওয়া হয়। শুধু স্পেস স্যুটই নয়, ওই মাপজোক অনুযায়ী তৈরি হচ্ছে তাঁদের বসার আসন ও বিছানাও। ২০২২-এ গগনযান পাঠানোর লক্ষ্য রয়েছে ভারতের।