সুনীতা উইলিয়ামস। —ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি নাসার পক্ষে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসের কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়। সেই ছবিতে সুনীতার চেহারার অবস্থা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন বিশ্ববাসী। সুনীতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে কি না তা নিয়েও সকলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন সমাজমাধ্যমে। অবশেষে সকলের দুশ্চিন্তা কাটিয়ে নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে মুখ খুললেন সুনীতা।
এক সাক্ষাৎকারে সুনীতা জানান, মহাকাশে প্রায় ১৫০ দিন পার করে ফেলেছেন। দীর্ঘ দিন মহাকাশে থাকার ফলে শরীরে বেশ কিছু তরল পদার্থ সংক্রান্ত পরিবর্তন হয়েছে। যে কারণে চেহারার এমন বদল ঘটেছে। সুনীতা আরও জানান, তিনি একদম সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছেন। চিন্তার কোনও কারণ নেই। তিনি ছবির বিষয় বলেন, “মহাকাশে শরীরের তুলনায় আমাদের মাথা অনেক বড় দেখতে লাগে। তার কারণ আমাদের শরীরের মধ্যে যে সব তরল পদার্থ আছে তা সমান ভাবে বইতে পারে না। মস্তিস্কে জমা হয়। তরল সংক্রান্ত কিছু পরিবর্তনের কারণেই ছবিতে অন্য রকম দেখতে লাগছিল আমায়।”
গবেষণা বলছে, মহাকাশে থাককালীন শারীরিক অনেক পরিবর্তন হয়। ওজন কমতে থাকে। শরীরে স্বাভাবিক পদ্ধিতে তরল বয়ে যেতে পারে না। তরলের গতিবিধি বদলায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তরল মস্তিস্কে জমতে থাকে। এর ফলে শরীরে অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হয়। এর ফলে দৃষ্টিক্ষীণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
গত ৫ জুন ফ্লরিডা থেকে সুনীতাদের নিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল বোয়িং স্টারলাইনার। গন্তব্য ছিল মহাকাশে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন। সেই সময় সুনীতার ওজন ছিল ৬৩ কেজি। দিন যতই গড়িয়েছে ওজন ক্রমেই কমেছে সুনীতার। মহাকাশে ওজন স্থিতিশীল রাখতে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে হয় মহাকাশচারীদের। শুধুমাত্র ওজন বজায় রাখার জন্য মহাকাশ সফরের সময় প্রতি দিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার ক্যালোরির খাবার খেতে হয় নভোচরদের। সেই পরিমাণ খাবার শরীরকে না দিলে শরীর ভাঙতে শুরু করে ও দ্রুত ওজন কমতে থাকে। অতিরিক্ত ক্যালোরি খরচ করে পেশি এবং হাড় শক্তিশালী রাখতে মহাকাশচারীদের প্রতি দিন দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কাজ করতে হয়। সুনীতার সাম্প্রতিক ছবিগুলি প্রকাশ্যে আসার এক মাস আগেই নাসার চিকিৎসকেরা তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলিতে বলা হয়েছিল। তাঁরা সুনীতার ওজন কমে যাওয়া নিয়ে বিশেষ ভাবে চিন্তিত ছিলেন।