মহাকাশ স্টেশনের এই অংশে (লাল তির) ঘটেছে দুর্ঘটনা। ছবি- রসকসমস-এর সৌজন্যে।
‘রাহুর দশা’ চলছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের!
ফের দুর্ঘটনা ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৭০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করা মহাকাশ স্টেশনে। তার একাংশ থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে দেখা গেল। প্লাস্টিক পুড়ে যাওয়ারও গন্ধ পেলেন মহাকাশচারীরা। ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে। ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে। রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘রসকসমস’ এই খবর দিয়েছে।
পরে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সূত্রে জানা যায়, প্রথমে কাজ করেনি মহাকাশ স্টেশনের ওই অংশে থাকা ‘ফায়ার অ্যালার্ম’টিও। ফলে, ধোঁয়া বেরোনোর কথা প্রথমে জানতেও পারেননি মহাকাশ স্টেশনে থাকা ৭ জন মহাকাশচারী। পরে তাঁরা প্লাস্টিক পোড়ার গন্ধ পান। তার পরেই দেখতে পান ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে মহাকাশ স্টেশনের একটি অংশ থেকে। মহাকাশচারীরা তখন সেখানে পৌঁছে ফায়ার অ্যালার্মটি চালু করেন।
মহাকাশ স্টেশনের যে অংশটি থেকে বৃহস্পতিবার ধোঁয়া বেরতে দেখা গিয়েছে ও প্লাস্টিক পোড়ার গন্ধ নাকে এসেছে মহাকাশচারীদের, সেই অংশটি ‘রসকসমস’-এরই বানানো। অংশটির নাম- ‘জ্ভেজদা সার্ভিস মডিউল’। এই অংশটিতে মহাকাশচারীদের জন্য ঘুমানোর ব্যবস্থা রয়েছে।
রুশ সংবাদ সংস্থা ‘তাস’ শুক্রবার জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলা হয়েছে খুব দ্রুত। নিরাপদেই আছেন মহাকাশচারীরা। তাঁরা দিনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন যথারীতি।
‘জ্ভেজদা সার্ভিস মডিউল’। এখানেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। -ফাইল ছবি।
অন্য একটি রুশ সংবাদসংস্থা ‘রিয়া নোভস্তি’ জানিয়েছে, জ্ভেজদা সার্ভিস মডিউলে দুর্ঘটনার কথা প্রথম মস্কোয় মিশন কন্ট্রোল-কে জানান মহাকাশ স্টেশনে থাকা রুশ মহাকাশচারী ওলেগ নোভিতস্কি। তিনিই জানান, প্লাস্টিক পুড়ে যাওয়ার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে ওই অংশটি থেকে। ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে।
পরে রসকসমস-এর তরফে জানানো হয়, ওই সময় ব্যাটারি রিচার্জ করা হচ্ছিল জ্ভেজদা সার্ভিস মডিউলে। এয়ার পিউরিফায়িং সিস্টেম চালু করার পর ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে আসে।
দুর্ঘটনা এর আগেও ঘটেছে মহাকাশ স্টেশনের জ্ভেজদা সার্ভিস মডিউলে। ২০১৪ সালে প্রথম এই অংশটি থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখা গিয়েছিল। গত বছর ওই অংশে ‘এয়ার লিক’ করায় মহাকাশচারীদের জন্য মজুত করা চায়ের পাতা ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা মহাকাশ স্টেশনে। গত সপ্তাহে মহাকাশ স্টেশনের আরও একটি অংশ জারিয়া-তেও কয়েকটি বড় ফাটল ধরা পড়ে। এই অংশটিও বানিয়েছে রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।