প্রতীকী ছবি।
এই ব্রহ্মাণ্ডে যে আমরা আর আর একা নই, তা আরও এক বার প্রমাণ করল নাসার ‘কেপলার মিশন’। এই সৌরমণ্ডলের বাইরে প্রাণ খুঁজতে গিয়ে কয়েকটি নতুন ‘জায়গা’ পেয়ে গেলেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা। আর তা একটা-দু’টো নয়। ২০টি। যারা সবাই ভিন গ্রহ।
এই ব্রহ্মাণ্ডে সম্ভাব্য কোন কোন জায়গায় প্রাণ আছে, তা খুঁজতে মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছিল ‘কেপলার’ মহাকাশযান। তাতেই ধরা দিয়েছে এই ২০টি নতুন গ্রহ। পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতির মতো আমাদের সৌরমণ্ডলের গ্রহগুলি ছাড়াও আরও অনেক অনেক গ্রহ রয়েছে অন্যান্য সৌরমণ্ডলে। অন্য সৌরমণ্ডলের এই গ্রহগুলিকেই আমরা বলি ‘ভিন গ্রহ’ (এক্সো-প্ল্যানেট্স)।
আরও পড়ুন:
চাঁদে ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গের হদিশ, হতে পারে ভবিষ্যত্ বসতি
যুগান্তকারী আবিষ্কার, নিউট্রন তারার ধাক্কার ঢেউ দেখা গেল প্রথম
নাসা জানিয়েছে, এই ভিন গ্রহগুলি পৃথিবীর মতোই পাথুরে গ্রহ বা ‘রকি প্ল্যানেট’। আবহাওয়াতেও কিছু সাদৃশ্য রয়েছে। এরা সবাই নিজেদের মতো পাক মারছে কোনও না কোনও নক্ষত্রের চার পাশে। নাসার বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি মিল রয়েছে যে ভিন গ্রহটির তার নাম ‘কেওআই-৭৯২৩.০১’। এই গ্রহ পৃথিবীর ব্যাসের চেয়ে ৯৭ শতাংশ বেশি। এখানে বছর হয় ৩৯৫ দিনে। আমাদের নীলাভ গ্রহের চেয়ে অনেক বেশি ঠান্ডা এই গ্রহ। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, এই গ্রহ যে নক্ষত্রের চারপাশে চক্কর কাটছে তার তাপমাত্রা আমাদের সূর্যের চেয়ে কিছুটা কম। তাই এই গ্রহের তাপমাত্রাও পৃথিবীর চেয়ে কম। তবে, এখানে তরল জলস্তর রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্রাণের উপযোগী পরিবেশও রয়েছে।
মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, সম্প্রতি কেপলার মিশনে সন্ধান মিলেছে ২১৯টি ভিন গ্রহের। আর সেই ২১৯টি ভিন গ্রহের মধ্যে অন্তত ২০টি একেবারেই আমাদের পৃথিবীর মতো পাথুরে। আর সেগুলি রয়েছে গোল্ডিলক্স জোনে। কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের প্রধান কাজ ছিল মহাকাশে এমন গ্রহের খোঁজ চালানো, যেগুলি ‘গোল্ডিলক জোন’-এ অবস্থিত। এটি নক্ষত্রের চারপাশে এমন একটি অঞ্চল যেখানে তাপমাত্রা খুব বেশিও নয়, আবার খুব কমও নয়। কোনও গ্রহ যদি ‘গোল্ডিলক জোন’-এ অবস্থিত হয় তাহলে সেথানে জল তরল অবস্থায় থাকে। প্রাণের উদ্ভব ঘটা সম্ভব। এই নিয়ে বিগত কয়েক বছরে মোট ৪ হাজার ৩৪টি ভিন্ গ্রহের হদিশ পেল কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ (কেএসটি)। যাদের মধ্যে ২ হাজার ৩৩৫টি গ্রহ সম্বন্ধে জানা সম্ভব হয়েছে।
কেপলার মিশনের অন্যতম প্রধান গবেষক জেফ কাফলিন কৌতুক করে বলেছেন, ‘‘চাইলে মহাকাশযানে চড়ে পাড়ি জমাতে পারেন এই গ্রহগুলিতে।’’